ফেরা

বেনজেমার প্রত্যাবর্তনটালে প্রথাগত অর্থে ‘হিরো’স রিটার্ন’ বলা যায় না। অন্তত তিনি নিজে ওমনটা ভাবেন না। ছয় বছর পর মাঠে নেমেছেন, গোল করেছেন, রেকর্ড ভেঙেছেন। দুই ম্যাচ জয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়েও ফেরত এসেছেন। ইতিহাসে পরাজিত সৈনিকের কোনো কদর নেই। বেনজেমা এ যুদ্ধে পরাজিত এক সৈনিক। কিন্তু দিনশেষে প্রত্যাবর্তন শেষে নিজের সন্তানের চোখে নিজেকে নায়ক হওয়ার যুদ্ধে যিনি জয়ী। সে জয় অন্য যেকোনো জয়ের চেয়ে বড়।

মৌসুম শেষে মনে মনে ছুটির পরিকল্পনা করছেন। এমনিতেই কোভিড-১৯ এর জ্বালায় কোথাও যাওয়া দায়, কিন্তু ছোট ছোট দুই সন্তানকে বসিয়ে রাখলেও তো চলে না। কোভিড আক্রান্ত এক মৌসুমে কাছে পাওয়া হয়নি তাদের সেভাবে। ছুটিটা তাদের সঙ্গ না দিতে পারলে বাবা হতে পারলেন কোথায়?

করিমের চিন্তায় ছেদ ফেলল পুরোনো এক নাম্বার। ফোনটা উঠিয়েই বুঝলেন, এই কণ্ঠ বড্ড চেনা এক কণ্ঠ। সে নম্বর থেকে ফোন আসেনি অনেকদিন। নম্বরটা খুব একটা পরিচিত-পরিচিত লাগছিল, একসময় এই নম্বরের সাথেই কত যোগাযোগ ছিল, পরিচয় ছিল। একটা ঘটনা বহু ক্রোশ দূরে সরিয়ে দিয়েছে তাদের দুজনকেই।

পরিচয়ের খাতিরে কথাটা শুরু হলো নিয়ম মেনেই। কেমন আছো, কোথায় আছো, বউ-বাচ্চা-সংসার; কেমন চলছে দিনকাল? শেষ প্রশ্নটা, দেখা করা যাবে কী? এখানেই আছি, চলে আসো না একদিন। পুরোনো দিনের স্মৃতি আরেকবার রোমন্থন করা যাক!

নস্টালজিয়া বড্ড নিষ্ঠুর, তাকে ছেড়ে কথা বলা যায় না। তার ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকা যায় না। নষ্টালজিয়ায় মাতা যায়, তাকে পুনরায় উপভোগ করা যায় না। যদি না অপর মানুষটা চায়। অপর মানুষটা চাইলেন, পুরোনো সে স্মৃতি ফেরত চেয়ে বসলেন মুখের উপর। আরেকবার ভাসতে চাই আনন্দে, তোমায় নিয়ে। লিখবে কী আরেকটি প্রত্যাবর্তনের গল্প? একত্রে?

প্রত্যাবর্তন মানেই শুধু ফিরে আসা নয়, ফিরে এসে রাঙিয়ে দেওয়া। করিম জানতেন, ৬ বসন্ত পেরিয়ে গিয়েছে, বদলে গিয়েছে সময়। ফিরে এসে রাঙিয়ে দিতে না পারলে, ফিরে আসার মর্ম থাকে না। ফিরে আসার গল্প বড় বড় করে লেখা থাকে ব্যর্থতায়।

‘সময় নাও, ভেবে বলো,’ অপর পাশ থেকে নি:শব্দতা ভাঙ্গা বাক্যে সায় দিলেন। সময় নিয়ে ভেবে বুঝলেন, এই সময়টা প্রাক্তনের ডেরায় কাটানোর মতন আনন্দ আর কোনো কিছুতেই নেই। সেটা তার কিংবা তার সন্তান, দুজনের জন্যই প্রযোজ্য!

দিদিয়ের দেশম স্কোয়াড ঘোষণা করবেন আর দুই দিন পরেই। এ মধ্যেই উড়ো খবর এলো মিডিয়ায়, করিম ফিরছেন। বীর বিক্রমে করিম ফিরছেন ফ্রান্সের ডেরায়। তিনদিন আগেও যে গল্পকে অসম্ভব মনে হচ্ছিল সেটাই সত্যি হয়েছে, ৬ বছর নির্বাসনে থাকার পর করিম বেনজেমাকে ডাকতে বাধ্য হয়েছেন দিদিয়ের দেশম, নিজের ইগো ভেঙে দলের কথা ভেবেই তাকে শরণাপন্ন হতে হয়েছে বেনজেমার।

বেনজেমাও না করেননি। তবে সব ছেড়ে সেদিন সকলেই মন ছুঁয়ে গিয়েছিল একটি ছোট্ট ক্লিপ, টিভিতে ঘোষণা হচ্ছে বেনজেমার নাম আর টিভিতে বাবার নাম দেখে আনন্দে ফেটে পরেছেন তার দুই সন্তান মেলিয়া আর ইব্রাহিম!

জন্মের পর থেকে বাবাকে কখনও দেশের জার্সিতে দেখেননি দুজনে। শেষ যেবার মেলিয়া বাবার ফ্রান্সের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১। এরপর থেকে বাবাকে শুধু ফ্রেঞ্চ গল্পের ভিলেন হিসেবেই দেখেছে তারা। বাবা গল্প শুনিয়েছে, ইউটিউবে দেখেছে ফ্রেঞ্চ দলের হিরো হিসেবে, কিন্তু সরাসরি দেখার সৌভাগ্য তাদের হয়নি, সে গল্প উপভোগ করা সম্ভব হয়নি তাদের।

একজন পিতার কাছে নিজের সন্তানের সামনে হিরো হওয়ার মতন আনন্দের কোনো কিছুই হতে পারে না। করিম বেনজেমা জানেন, তার প্রত্যাবর্তন ততক্ষণ সম্পন্ন হতে পারবে না যতক্ষণ না ফ্রেঞ্চ হিরো হতে পারছেন।

রিয়ালের চোখের মনি হয়েছেন গত তিন মৌসুমে, রোনালদো চলে যাওয়ার পর রিয়ালের বাডন তুলে নিয়েছেন হাতে, ফ্রান্স দলে সে চিন্তা নেই। এখানে আপাদমস্তক ট্যালেন্ট দিয়ে ভর্তি, বেনজেমার আগমন শুধু লিডার হয়ে। কিন্তু বেনজেমা শুধু নেতা হতে আসেননি, এসেছিলেন নায়ক হতে। দেশমও ঘোষণা দিয়েই বেনজেমাকে দলে নিয়েছেন, সে আসছে বেঞ্চে বসে থাকতে না, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে।

এমন কেউ নেই যার কাছ থেকে শুভেচ্ছা পাওয়া বাকি ছিল বেনজেমার। এমবাপ্পে, লরিস, পগবা; এমনকি অলিভিয়ে জিরুও। যাকে বছরখানেক আগে গো-কার্টের সাথে তুলনা করেছিলেন তিনি। মজার ছলেই লিখেছেন, তোমার সাথে গো-কার্ট খেলতে যাবো ট্রফি জিতে। বেনজেমাও জানতেন এই সকল প্রশংসা উড়ে যাবে যদি না পারেন মাঠে খেলতে। ফ্রেঞ্চদের কাছে সর্বদাই তিনি চোখের বালি। ৬ বছর পর ফেরত এসে চোখের মনি হওয়া কি সহজ কাজ নাকি?

৬ বছর পর ফেরত এসে গোল করতে পারেননি, এমনকি ইউরোর আগে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে হালকা চোট পেয়ে উঠে যাওয়ার পর নেমেই খেল দেখিয়েছিলেন জিরু। ২ গোল করে বেনজেমার জায়গা কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। ছিল পেনাল্টি মিসও। দুই ম্যাচ দেখেই বেনজেমাকে এক হাত দেখিয়ে দিতে ছাড়েনি ফ্রেঞ্চরা। বেনজেমা অপেক্ষায় ছিলেন শুধু নিজেকে খুঁজে পাওয়ার।

পরেছিলেন গ্রুপ অফ ডেথে, সামান্য ভুল হওয়া মানেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেওয়ার শঙ্কা। জার্মানির বিপক্ষে ম্যাচ শেষ হয়েছে হামেলসের আত্মঘাতী গোলে। দ্বিতীয় ম্যাচটাও মনমতো হয়নি, হাঙ্গেরির সাথে ১-১ গোলের ড্র ফ্রান্সকে পৌছে দিয়েছিলে পরবর্তী পর্বে। কিন্তু সন্তুষ্ট করতে পারেনি বেনজেমাকে। খেল দেখানোর জন্য বেছে নিলেন শেষ ম্যাচটাই!

তাও সে যেনতেন কারো বিপক্ষে নয়, কোনায় আটকে পরা পর্তুগালের বিপক্ষে। হারলে চলবে না এমন মনোভাব নিয়ে নামা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিপক্ষে। অথচ এই রোনালদোর সাথে কত স্মৃতি, কত আবেগ, কত শিরোপা একত্রে উঁচিয়ে ধরেছেন একত্রে। হ্যাটট্রিকের সামনে থাকা রোনালদো পেনাল্টিটা পেয়েও বল এগিয়ে দিয়েছেন তার দিকে। মাঠে দুয়ো শুনলে চিৎকার করে বলেছেন থামতে।

স্মৃতির পাতা থেকে ইতিহাসের খাতায় তাদের বন্ধুত্বটা লেখা থাকবে অন্য হিসেবেই। সেটা দুজনেই জানেন। কিক-অফের সময় যখন দুজনের চোখাচোখি হলো, তখন না চাইতেও স্মিত হাসি বেরিয়ে এল দুজনের মুখ থেকে। দুজনই জানেন, এ বন্ধুত্বের মায়া কাটানো এত সহজও নয়।

বন্ধুর সামনেই নিজের নতুন শুরু করলেন বেনজেমা। ৪৬ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড, ৬ বছর পর যে লক্ষ্যে আগমন সেটাই পূরণ করলেন বেনজেমা। ১২ গজ দূর থেকে নেওয়া শট লক্ষ্যভেদ করলো সহজেই। নিজের প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলেন স্পটকিক থেকেই। এক সময়ের সতীর্থ প্রতিপক্ষ হয়েও শুভেচ্ছা না জানিয়ে পারলেন না।

প্রথমার্ধের বাঁশি বাজতেই জড়িয়ে ধরলেন, পুরোনো দিনের গল্পে মেতে উঠলেন দুজনে। আর কেউ জানুক বা না জানুক, রোনালদো জানেন, কতটা কষ্ট করতে হয়েছে এই জায়গাতে আসতে। শেষ যখন বেনজেমা ফ্রান্সে ছিলেন, ছিলেন রিয়ালের লিথ্যাল স্ট্রাইকার। রোনালদো চোটে পরেছেন, কার্লো আনচেলত্তি নতুন করে পরিকল্পনা সাজিয়েছেন।

মৌসুমের পর মৌসুম কেটে গিয়েছে, বেনজেমার রোল পাল্টেছে, গোল কমেছে, এসিস্ট বেড়েছে। সেই সাথে শুনতে হয়েছে মাঠের বাইরে কথা। পালিয়ে এসে যে দেশটাকে আপন ভেবেছেন, সেই দেশের মানুষই পর করে দিয়েছে তাকে। যে ক্লাবটা ভালোবেসে জীবনের অংশ করেছেন, সেই ক্লাবের সমর্থকেরাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বেনজেমা তবু হাল ছাড়েননি। তার লড়াই সফল হবে সেটা জানতেন।  আর সেটা নিজের প্রিয় বন্ধুর সামনে করতে পারার থেকে আনন্দ আর কীসে?

৪৬ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড থেকেই ফ্রান্সের ইউরো ক্যাম্পেইনটা নিজের করে নিলেন তিনি। আগেও যে ছিল না তা নয়, কিন্তু আড়াল থেকে লাইমলাইটে আসার এর থেকে ভালো সুযোগ আর কিছুতেই ছিল না। প্রথমে পিছিয়ে থাকা ফ্রান্সকে সমতা থেকে আবারও লিডে নিয়ে গেলেন। আবারও ঘুরে ঘড়ির কাঁটায় সময় ৪৬ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড। আগেরটা ছিল প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়, আর দ্বিতীয়টা দ্বিতীয়ার্ধে।

করিম বেনজেমা জাত চেনালেন আরেকবার, এবারে লিথ্যাল ফিনিশিং দিয়ে। রুই প্যাট্রিশিও এগিয়ে এসেও থামাতে পারলেন না, গোলরক্ষককে বোকা বানাতে এতটাই ওস্তাদ তিনি। সেদিন ফ্রান্সের ২-২ গোলের ড্র পুরোটাই বেনজেমার অবদানে।

ফ্রেঞ্চবাসী যখন সুইজারল্যান্ডকে পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত, তখনই প্রথমার্ধে বাজে ফুটবল তাদের যেন মনে করিয়ে দিল, ফেবারিট মানেই সব দল জিতে নিবে এমনটা নয়। পিছিয়ে থাকা ফ্রান্সের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে যখন কেউ পারছেন না, সেই বাডনটা তুলে নিলেন বেনজেমা নিজের কাঁধে।

ম্যাচের ৫৬ মিনিট, পিছিয়ে যাওয়া ফ্রান্সের সামনে আরেক বিপদ। সুইজারল্যান্ডের পেনাল্টি, রিকার্ডো রদ্রিগেজ এগিয়ে আসছে গুটি গুটি পায়ে। লরিসের কানের কাছে গিয়ে বললেন, ডান দিকে। দূর্দান্ত শট আর সেই সাথে দূর্দান্ত এক সেভ! মিনিটও পার হতে পারেনি, বল এই গোলপোস্ট থেকে ঐ গোলপোস্টে।

ততক্ষণে বেনজেমা পৌছে গিয়েছেন নিজের জায়গা ডি-বক্সে। এমবাপ্পের দূর্বল পাসটাকে যেভাবে গোলে পরিণত করলেন, প্যাট্রিক শিকের ৫০ মিটার দূর থেকে নেওয়া শট না হলে এবারের ইউরোর সেরা গোল হিসেবেই চালিয়ে দেওয়া যেত তাকে।

ডান পা দিয়ে বলের কন্ট্রোল নিতে চেয়েছিলেন, সেটা ঠিক পারফেক্ট হয়নি। কিন্তু সেই পাসটাকেও কীভাবে নিখুঁত বানাতে হয় সেটা জানেন বেনজেমা। বলটা যখন সোমারের উপর দিয়ে গিয়ে জালে পৌঁছালো, ততক্ষণে সকলেই বুঝে গিয়েছেন গোলরক্ষকদের বোকা বানানোয় তার মতন অভিজ্ঞ বর্তমানে আর কেউ নেই। ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ যখন গর্ব করে বলেছিলেন, তিনি রোনালদো লিমা আর জিদানের পারফেক্ট মিশ্রণ; তখন বিন্দুমাত্র ভুল বলেননি।

মিনিটের কাঁটা ঘুরতে পারেনি, আবারও বেনজেমা। কিন্ত সেই বেনজেমার সাথে আগের বেনজেমার যোজন যোজন পার্থক্য। এই বেনজেমা আর ইম্প্রোভাইজড মডার্ন স্ট্রাইকার নন, বরং একজন লিথ্যাল পোচার। যার কাজ ফিনিশ করা।

গ্রিজম্যানের লবকে সামান্য হেডে পৌঁছে দেওয়া বেনজেমা মিনিটেই ভোল পালটে এনে দিলেন লিড। ৩ মিনিট আগেও দ্বিতীয় গোল হজম করতে যাওয়া ফ্রান্স ২-১ গোলে এগিয়ে। নায়ক হওয়ার সূচনা সেখান থেকেই। ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়া বেনজেমা জানেন, শেষটা সুন্দর না হলে সবটাই মলিন। পগবার তৃতীয় গোলেও প্রত্যক্ষ অবদান রাখলেন। কিন্তু শেষটা করতে পারলেন না।

কথায় আছে শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। বেনজেমার ক্ষেত্রেও কথাটা অনেক বেশি প্রযোজ্য। পুরো ম্যাচটায় ফ্রান্সকে টেনে এনেও হিরো হওয়া হলো না তার। তার থেকে আলোটা কেড়ে নিলেন তার সতীর্থরাই। ডিফেন্সের ভুলে ম্যাচ চলে গেল এক্সট্রা টাইমে।

আর সেখানেই চোট পেলেন বেনজেমা। ম্যাচ শেষ করে আসার শক্তিটা ছিল না তার। সতীর্থদের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ম্যাচটা শেষ করতে পারেনি তারা। ম্যাচের নায়ক হলেন ইয়ান সোমার, মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়লেন বেনজেমা।

বেনজেমার প্রত্যাবর্তন ঠিক ‘হিরো’স রিটার্ন’ বলা যায় না। অন্তত নিজের কাছে তো ভাবেনই না। ছয় বছর পর মাঠে নেমেছেন, গোল করেছেন, রেকর্ড ভেঙেছেন। দুই ম্যাচ জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছেন দলকে, কিন্তু জেতাতে পারেননি। দিনশেষে ইতিহাস জয়ীদেরই মনে রাখে।

সে হিসেবে বেনজেমা সে যুদ্ধে পরাজিত এক সৈনিক। কিন্তু নিজের সন্তানের চোখে নিজেকে নায়ক পরিণত করার যে যুদ্ধে যিনি জয়ী, তার প্রতাবর্তনকে হিরো’স রিটার্ন না বলাটা অপরাধ। আর সে অপরাধে দোষী হতে নিশ্চয় চাইবেন না কেউ।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...