Social Media

Light
Dark

রিয়াদের রঙে রঙিন খুলনা

বারবারই বলা হচ্ছিলো, অভিজ্ঞতার সাথে তারুণ্যের লড়াই হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু কাপ টি-টোয়েন্টির ফাইনালে। সেই অভিজ্ঞতার কাছেই হেরে গেলো চট্টগ্রাম। খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কামব্যাক ইনিংসে ভর করে ট্রফি জিতে গেলো খুলনা।

প্রথমে দারুণ ইনিংসে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিলেন মাহমুদউল্লাহ। অধিনায়কের বীরত্বে উজ্জীবিত হয়ে শেষটা রাঙালেন বোলাররা। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে চট্টগ্রামকে ৫ রানে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের শিরোপা জিতলো জেমকন খুলনা।

লক্ষ্যটা খুব বেশি বড় ছিলো না; তবে চ্যালেঞ্জিং ছিলো। রান তাড়া করতে নেমে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত হারতে হয়েছে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ধারাবাহিক দল গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামকে।

টুর্নামেন্ট জুড়ে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের ইনিংসের গতিপথ অনেকটাই নির্ভর করেছে উদ্বোধনী জুটির উপর। ফাইনালেও রান তাড়া করতে নামা চট্টগ্রামের ভরসার জায়গা ছিলো লিটন-সৌম্য। কিন্তু আজ ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন দুজনই। স্পিনে পরাস্ত হয়ে সৌম্য ফিরে যান ১২ রান করে এবং রান আউটের ফাঁদে পড়া লিটনের ব্যাট থেকে আসে ২৩ রান। লিটনের আগে অধিনায়ক মিঠুনও ফিরে যান ৭ রান করে।

৫১ রানে ৩ উইকেট হারানো চট্টগ্রাম ম্যাচে ফেরে ৪র্থ উইকেটে শামসুর রহমান ও সৈকত আলীর ৪৫ রানের জুটিতে। শামসুর রহমান ২১ বলে ২৩ রান করে যখন আউট হয়ে যান তখনও জয়ের জন্য ৩৪ বলে ৬০ রান প্রয়োজন ছিলো চট্টগ্রামের। কিন্তু লড়াই করেও শেষের সমীকরণ মেলাতে পারেননি সৈকত আলী ও মোসাদ্দেক হোসেন।

জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে ২৯ রান প্রয়োজন ছিলো চট্টগ্রামের। হাসান মাহমুদের করা ১৯তম ওভার থেকে মোসাদ্দেক ও সৈকত আলী ১৩ রান সংগ্রহ করলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৬ রানের হিসেব মেলাতে হতো চট্টগ্রামকে। কিন্তু শেষ ওভারে শহিদুলের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ফিরে যান সৈকত ও মোসাদ্দেক দুজনই আউট হয়ে গেলে আর সমীকরণ মেলাতে পারেনি চট্টগ্রাম। খুলনার পক্ষে শহিদুল ২ টি এবং শুভাগত, আল আমিন ও হাসান মাহমুদ ১ টি করে উইকেট শিকার করেন।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা জেমকন খুলনার শুরুটা ভালো হয়নি। ইনিংসের প্রথম বলেই বড় শট খেলতে গিয়ে নাহিদুলের বলে মোসাদ্দেকের হাতে ধরা পড়েন জহুরুল ইসলাম। জহুরুলের বিদায়ের পর উইকেটে এসে বেশীক্ষণ থাকতে পারেননি ইমরুল কায়েসও। নাহিদুলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ইমরুল ফিরে যান ৮ রান করে। সাকিব আল হাসান না থাকায় চারে ব্যাট করতে আসেন আরিফুল হক; জুটি বাঁধেন ওপেনার জাকির হাসানের সাথে।

দলীয় ২১ রানে ২ উইকেট হারানো জেমকন খুলনাকে বেশী দূর টানতে পারেনি এই জুটিও। ভালো খেলতে থাকা জাকির হাসানকে ফিরিয়ে দেন মোসাদ্দেক হোসেন। জাকিরের ব্যাট থেকে আসে ২০ বলে ২৫ রান। জাকিরের বিদায়ের পর খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ উইকেটে এসে ৪র্থ উইকেট জুটিতে আরিফুলকে নিয়ে যোগ করেন ৪০ রান ও ৫ম উইকেট জুটিতে শুভাগত হোমকে নিয়ে যোগ করেন ৩৪ রান। আরিফুলের ব্যাট থেকে আসে ২১ রান ও শুভাগত করেন ১৫ রান।

দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিতে শেষের দিকে একাই লড়াই চালিয়ে যান খুলনার অধিনায়ক। ইনিংসের শেষ ২৬ বলে ৩৮ রান সংগ্রহ করে জেমকন খুলনা। যেখানে রিয়াদের ব্যাট থেকেই আসে ১৮ বলে ৩২ রান। শেষ পর্যন্ত অধিনায়কের ৪৮ বলে ৮টি চার ও ২টি ছয়ের সাহায্যে অপরাজিত ৭০ রানে ভর করে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান সংগ্রহ করে জেমকন খুলনা। চট্টগ্রামের পক্ষে নাহিদুল ও শরিফুল ২টি করে এবং মোসাদ্দেক ও মোস্তাফিজ ১ টি করে উইকেট শিকার করেন। আগের ম্যাচের নায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ৪ ওভারে ৪০ রান দিয়ে ছিলেন উইকেট শূন্য।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর 

জেমকন খুলনা: ২০ ওভারে ১৫৫/৭ (জহুরুল- ০, জাকির- ২৫, ইমরুল- ৮, আরিফুল- ২১, মাহমুদউল্লাহ- ৭০*, শুভাগত- ১৫, শামীম- ০, মাশরাফি- ৫, শহিদুল- ১; নাহিদুল- ২/১৯, শরিফুল- ২/৩৩, মোস্তাফিজ- ১/২৪, মোসাদ্দেক- ১/২০)

গাজি গ্রুপ চট্টগ্রাম: ২০ ওভারে ১৫০/৬ (লিটন- ২৩, সৌম্য- ১২, মিঠুন- ৭, সৈকত- ৫৩, মোসাদ্দেক- ১৯, নাহিদুল- ৬*, নাদিফ- ১*; শহিদুল- ২/৩৩, হাসান মাহমুদ- ১/৩০, আলআমিন- ১/১৯, শুভাগত- ১/৮)

ফলাফল: জেমকন খুলনা ৫ রানে জয়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link