কেবলই দৃশ্যের জন্ম হয়

২০১৩ সালে পাঞ্জাবে স্টেডিয়ামে স্মিথকে পাঁচ রানে আউট করেছিলেন পেসার ভূবনেশ্বর কুমার। দুই বছর পর ব্যাঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আট রানে সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান বলতে পরিচিত স্মিথকে ফিরিয়েছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। এবার তাঁদের দু’জনের চেয়ে কম রানে স্মিথকে ফেরালেন অশ্বিন, তাও আবার স্বয়ং অস্ট্রেলিয়ান মাটিতে। এজন্যই তো সময়ের সেরা!

উদযাপনটাই সব কিছু বলে দিচ্ছিল। বোঝা যাচ্ছিল, বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট ব্যাটসম্যানের উইকেট পেয়েছেন তিনি। সেটাও তখন যখন সেই ব্যাটসম্যানের রান মোটে এক।

ব্যাটসম্যানটির নাম হল স্টিভেন স্মিথ, ভেন্যুর নাম অ্যাডিলেড ওভাল। আর বোলারটি হলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। বলা হচ্ছে, স্টিভেন স্মিথের এই উইকেটটিই অ্যাডিলেডের দ্বিতীয় দিনে ভারতের টার্নিং পয়েন্ট।

সেই উদযাপনটি কি কেবল সাবেক অজি অধিনায়ককে ফেরানোর আনন্দ ছিল? তাতে কি কোনো আক্ষেপের সুর ছিল না? এই তো সেই অশ্বিন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে যার দিকে এখন আর ফিরেও তাকায় না ভারত। অথচ, রঙিন পোশাকের দুই ফরম্যাটে দেড়শো’র ওপর ম্যাচ খেলা অশ্বিন পেয়েছেন ২০০’র ওপর উইকেট।

তবে, টেস্টে তাঁর বিকল্প খুঁজে বের করা মুখের কথা নয়। তিনি ভারতের ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা স্পিনারদের একজন। সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে তিনি বিশ্বেরই অন্যতম সেরা।

স্মিথ অশ্বিনের ফ্লিপারটা পড়তে ভুল করেন। তাতেই নামে বিপদ। স্লিপে দাঁড়ানো আজিঙ্কা রাহানের হাতে ক্যাচ চলে যায়। স্মিথকে এর আগে কখনোই কোনো ভারতীয় বোলার এত কম রানে টেস্টে ফেরাতে পারেনি।

২০১৩ সালে পাঞ্জাবে স্টেডিয়ামে স্মিথকে পাঁচ রানে আউট করেছিলেন পেসার ভূবনেশ্বর কুমার। দুই বছর পর ব্যাঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আট রানে সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান বলতে পরিচিত স্মিথকে ফিরিয়েছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। এবার তাঁদের দু’জনের চেয়ে কম রানে স্মিথকে ফেরালেন অশ্বিন, তাও আবার স্বয়ং অস্ট্রেলিয়ান মাটিতে। এজন্যই তো সময়ের সেরা!

আরো পড়ুন

স্মিথ যখন তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন বোর্ডে রান অস্ট্রেলিয়া তুলেছে মাত্র ৪৫ টি। আসা যাওয়ার মিছিল চলেছে অজিদের গোটা ইনিংস জুড়েই। একপ্রান্ত আগলে রেখে বিরাট কোহলি মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক টিম পেইন।

তাঁর অপরাজিত ৭৩ রানের ইনিংস ও লাবুশেনের ৪৭ বাদে অস্ট্রেলিয়ার আর কোনো ব্যাটসম্যানই দ্বিতীয় দিনে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি। অশ্বিন চারটি উইকেট পেয়েছেন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে গেছেন দুই পেসার উমেশ যাদব ও জাসপ্রিত বুমরাহ। দু’জনে যথাক্রমে তিনটি ও দু’টি করে উইকেট নেন।

বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া মাত্র ১৯১ রানে অল আউট হয়ে গেছে। প্রথম ইনিংসে ২৪৪ করা ভারতের টিম ম্যানেজমেন্টের কপালে যে দুশ্চিন্তার ভাঁজ জমেছিল তা উবে গেছে অশ্বিনদের বোলিংয়ে। আরেকটা কথা হয়তো, ম্যাচ শেষে কারো মনেও থাকবে না যে – এই অশ্বিনই লোয়ার মিডল অর্ডারে ১৫ টা রান করে গেছেন। মহাকালের বিবেচনায় এই রান খুবই সামান্য, কিন্তু, এমন লো স্কোরিং ম্যাচে এসব ইনিংস খুবই জরুরী।

প্রসন্ন অ্যারোগাম, দক্ষিণ আফ্রিকার পারফরম্যান্স অ্যানালিস্ট। তিনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ও তামিল নাড়ু প্রিমিয়ার লিগে (টিএনপিএল) কাজ করেছেন অশ্বিনের সাথে। তিনি ভবিষ্যদ্বানী করে রেখেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চার টেস্টে ও ২০ উইকেট নেবে।’

তার শুরুটা অ্যাডিলেডের প্রথম ইনিংসেই করে ফেললেন অশ্বিন। এই তাণ্ডবলীলা চললে, কে জানে হয়তো ২০ উইকেটের এই ‘স্ট্যান্ডার্ড’ ভেঙেও ফেলতে পারেন তিনি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...