ম্যাচ জিতিয়েও আফসোস কেন লোকেশের!

কভারের উপর দিয়ে ছক্কা। নিশ্চিত দলের জয়। তবুও, মাটিতে মাথা নিচু করে বসে পড়লেন লোকেশ রাহুল। সেঞ্চুরিটাই যে পাওয়া হল না। নিশ্চয়ই, বিবেক নয়-আবেগটাই এখন বেশি কাজ করেছে লোকেশ রাহুলের জন্য।

কভারের উপর দিয়ে ছক্কা। নিশ্চিত দলের জয়। তবুও, মাটিতে মাথা নিচু করে বসে পড়লেন লোকেশ রাহুল। সেঞ্চুরিটাই যে পাওয়া হল না। নিশ্চয়ই, বিবেক নয়-আবেগটাই এখন বেশি কাজ করেছে লোকেশ রাহুলের জন্য।

২০০ রানের টার্গেট, কিন্তু দুই রানের মধ্যেই সাজ ঘরে তিনজন – ভারতের উপর কতটা চাপ ভর করছিল তখন সেটা নিশ্চয়ই ব্যাখ্যা করে বলতে হবে না; তবে লোকেশ রাহুলকে টলাতে পারেনি সেই চাপ। ইনফর্ম অজি পেস আক্রমণভাগের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়েছেন, দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছেড়েছেন তিনি।

১১৫ বলে ৯৭ রানের হার না মানা এক ইনিংস – সংখ্যা তত্ত্বে যেমন অসাধারণ তেমনি ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনায় স্মরণীয়। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে পরাজয়ের ভয় যখন চেপে বসেছিল তখন ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হয়েছে রাহুলের এমন পারফরম্যান্স।

দ্বিতীয় ওভারের সময় বাইশ গজে এসে এই ডানহাতি ব্যাটার ছিলেন একেবারে ৪২তম ওভার পর্যন্ত। এসময় আটটা চার আর দুইটি বিশাল ছয়ের মারে সাজিয়েছেন নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা এই ইনিংস।

শুরুতে অবশ্য রয়েসয়েই খেলেছিলেন তিনি, বিরাট কোহলিকে সঙ্গী করে সামলেছেন প্রাথমিক বিপর্যয়। পাওয়ার প্লে-তে স্টার্ক, হ্যাজলউডদের সুইংয়ের বিরুদ্ধে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এই ডানহাতি; তাঁর ইনিসের কাঁটাছেড়া করলেই ব্যাপারটা বোঝা যায়। প্রথম ২০ রান করতে এই উইকেটকিপারের লেগেছে ৩৭ বল, আর ফিফটির দেখা পেয়েছেন ৭২ বলে।

ধৈর্যশীল রাহুলের ভিন্ন রূপ দেখা গিয়েছে এরপরেই; প্রায় প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি আদায় করেছেন। বিশেষ করে অজিদের একমাত্র জেনুইন স্পিনার অ্যাডাম জাম্পাকে দারুণভাবে মোকাবিলা করেছন তিনি, উইকেট তোলা তো দূরে থাক এই লেগিকে কোন আতঙ্ক সৃষ্টির সুযোগই দেননি। ইনিংসের শেষদিকে মাত্র ২০ বলে তিনি করেছেন ৩৩ রান।

সবমিলিয়ে ৯৭ রান, বিশ্ব মঞ্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যেকোনো ভারতীয় ব্যাটারের জন্য এটাই তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। যদিও সেঞ্চুরি থেকে তিন রান দূরে থেমে যাওয়ায় খানিকটা আফসোস রয়ে গিয়েছে এই ব্যাটারের হৃদয়ে।

চলতি বছর অবশ্য দারুণ ছন্দে আছেন রাহুল। ৬৬ গড় আর ৮৭ স্ট্রাইক রেট নিয়ে খেলেছেন বারো ইনিংস; করেছেন ৫০০ এর বেশি রান। বৈশ্বিক আসরেও টিম ইন্ডিয়ার ভরসা এখন তিনি; উইকেটের সামনে আর পিছনে দুই ক্ষেত্রেই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বলা যায় এই তারকাকে। অথচ একটা সময় শ্রেয়াস আইয়ার, সুরিয়াকুমারদের কাছে একাদশে জায়গা হারাতে বসেছিলেন তিনি।

ঋষাভ পান্তের অভাব মেটাতে লখনৌ অধিনায়ককে মিডল অর্ডারে ব্যবহার করছে টিম ম্যানেজম্যান্ট, আর তিনি এমন ফর্মের ধারাবাহিকতা দেখাতে পারলে বাঁ-হাতি ব্যাটারের অভাব খুব একটা অনুভব করবে না ভারত। এই ব্যাটার নিজেও নিশ্চয়ই টুর্নামেন্ট জুড়ে ধারাবাহিকতা দেখাতে চাইবেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...