ক্যারিয়ারের কঠিন সময়ই পার করছেন কুলদ্বীপ যাদব।
বোলিং সামর্থ্য নিয়ে কারো কোন প্রশ্ন না থাকলেও, তার দলে জায়গা পাওয়া – না পাওয়া নিয়ে রয়েছে অনেক আলোচনা সমালোচনা। ২০১৭ সালে এই বাঁহাতি রিস্ট স্পিনারের অভিষেকের পর সাদা বলে বোলিং যাদু ছড়িয়ে গেলেও টেস্ট দলে যথেষ্ট সুযোগ না পাওয়ার আক্ষেপ তার রয়েছে। চলমান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল ও তার ইংল্যান্ডের সাথে অনুষ্ঠিত ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রাথমিক দল পর্যন্ত ডাক না পড়ায় স্বাভাবিকভাবেই হতাশায় ভুগছেন কুলদ্বী প যাদব। এই কঠিন সময়ে তিনি সবচেয়ে বেশি এম এস ধোনিকে মিস করছেন।
দল ঘোষনার পর থেকেই কুলদ্বীপ যাদবের দলে জায়গা না পাওয়া নিয়ে অনেক ভারতীয় প্রাক্তন ক্রিকেটাররা তীব্র সমালোচনা করেছেন, অনেকে তাকে দলে রাখার দাবি করছেন। এরকম সময়ে স্বভাবতই হতাশ কুলদীপ যাদব একটি সাক্ষাৎকারে নিজেই তার এই কঠিন সময়ের না বলা কথাগুলো বলেছেন। এমত অবস্থায় তিনি সবচেয়ে বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে কথা বলেছেন এম এস ধোনি কে নিয়ে। উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে মহেন্দ্র সিং ধোনি যে ভাবে পরামর্শ দিতেন, সামলে রাখতেন, ব্যাটসম্যানের দুর্বলতার জায়গা বোঝে যেসব টোটকা দিতেন, সেগুলো খুব মিস করেন কুলদীপ যাদব।
কুলদীপ বলেছেন, ‘কখনো কখনো তো আমি ওর ( ধোনি ) গাইডেন্স খুব মিস করি। ওর অসাধারণ অভিজ্ঞতা রয়েছে। ও উইকেটের পিছনে দাড়িয়েও আমাদের গাইড করে দিত। চিৎকার করে উৎসাহ দিত, বলে দিত কি করতে হবে। আমরা ওর ওই জায়গাটা মিস করি। ঋষভ (পান্ত) এখন ওর জায়গায় খেলে। যত বেশি ও খেলবে, তত ওর অভিজ্ঞতা হবে। আমি সবসময় মনে করি বোলারদের এমন একজন যে অন্য প্রান্ত থেকে নির্দেশ দিয়ে দিবে।’
মহেন্দ্র সিং ধোনিকে মিস করার ব্যাপারে কুলদ্বীপ আরো বলেন, ‘মাহিভাই যখন ছিলো, তখন আমি আর চাহাল একসঙ্গে খেলতাম। মাহিভাই চলে যাওয়ার পর থেকে আমরা কখনো একসঙ্গে খেলিনি। আমার আরো বেশি ম্যাচ খেলা উচিৎ। আমার হ্যাট্রিকও রয়েছে। পুরো পারফর্ম্যান্সের গ্রাফটা যদি দেখেন, সেটা কিন্তু খারাপ নয়। কিন্তু আলাদা আলাদা ভাবে যদি দেখা যায় তবে সেটা হয়তো ততটা ভালো ও নয়। কাদের বিরুদ্ধে খেলছি, সেটা কিন্তু দেখা দরকার।’
বাঁহাতি রিস্ট স্পিনারদের বৈশিষ্ট্য, কার্যকারিতা, ভ্যারিয়েশনস ইত্যাদি কারণে তাদেরকে স্পিনের যাদুকর বলা হয়। এই স্পিন যাদু দিয়ে অনেক ব্যাটসম্যানদের কাবু করেছেন কুলদীপ যাদব। ২০১৭ সালেই ৩ ফরম্যাটে অভিষেক হলেও এখন পর্যন্ত সাদা বলের ৬৩ ওয়ানডে, ২১ টি টোয়েন্টি খেললেও লাল বলের মাত্র ৭ টেস্ট খেলেছেন কুলদীপ। তার বোলিং ফিগার, উইকেট সংখ্যা, কার্যকারিতা সাদা বলে বেশি হলেও লাল বলে যথেষ্ট সুযোগ না পাওয়ার কারণে তিনি ভালো করতে পারেনি।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলার পর ২০২১ সালে এসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলে আবার বাদ পড়েন। এর মধ্যে ভারতের টেস্ট স্কোয়াডে নিয়মিত থাকলেও টেস্ট দলে মূল একাদশে সুযোগ হয়নি। কিন্তূ এখন কোন কারণ ছাড়া প্রাথমিক দলেই না থাকার হতাশা তাকে এতটাই কাবু করেছে যে নিজের সামর্থ্য নিয়ে দ্বিধায় ভোগছেন। এই সময়ে এম এস ধোনির মেন্টরশিপ, গাইডেন্সের অভাব তাকে আরো আবেগপ্রবণ করে তুলছে। তার মতে গত ১২ মাস ২০১৭ সালের অভিষেকের পর সবচেয়ে কঠিন সময় গিয়েছে।
এখন পর্যন্ত এই বাঁহাতি চায়নাম্যান ৬৩ ওয়ানডে খেলে ৫.২২ ইকোনমিতে নিয়েছেন ১০৫ উইকেট যেখানে তার বোলিং গড় ২৭.৯০। টি টোয়েন্টি ২১ টি ম্যাচ খেলে ৭.১১ ইকোনমিতে নিয়েছেন ৩৯ উইকেট। এখানে বোলিং এভারেজ ১৩.৭৬।। আর ৭টি টেস্ট খেলে ৩.৪৯ ইকোনমিতে, ২৩.৮৪ এভারেজে নিয়েছেন ২৬ উইকেট। তিনি ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫০ উইকেট শিকারিদের মধ্যে রয়েছে ৪র্থ স্থানে।