তিনি রক্ষণভাগের ত্রাস, গোলরক্ষকদের জন্য দু:স্বপ্ন। একটা বিশ্বকাপ জিতেছেন, দুটো বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছেন। কেবল বিশ্বকাপের ফাইনালেই আছে তাঁর তিনটা গোল।
কিংবদন্তি পেলের পর ইতিহাসের একমাত্র টিন এজার হিসেবে জোড়া গোল করেছেন বিশ্বকাপে। সেটাও খোদ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে।
তিনি কিলিয়ান এমবাপ্পে। ফুটবল বিশ্বের এখন অবিসংবাদিত সেরাদের একজন। রোজ রোজ নিত্যনতুন খবরের জন্ম দেন তিনি। রিয়াল মাদ্রিদে যাবেন কি না, প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি) ছাড়বেন কি না – এই নিয়ে অনেক জল্পনা কল্পনা হয়। রটে যায় অসংখ্য গুজব।
কিন্তু, এমবাপ্পে তো রটনা নয়, বরং ঘটনায় বিশ্বাসী। তিনি চান ঘটিয়ে ফেলতে, ইতিহাসের চূড়ায় উঠতে। কিন্তু, ওই যে বলে না – সব পেলে নষ্ট জীবন।
তাই তো, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপ তাঁর জন্য অধরা রয়ে যাচ্ছে বারবার। তীরে এসে তরী ডুবছে, বারবার। এবার যেমন পিএসজি কাটা পড়ল বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের সামনে। সেমিফাইনালের দুই লেগ মিলিয়ে হারল ০-২ ব্যবধানে।
এমবাপ্পে অবশ্য একা নন। বিশ্বকাপ জিতেছেন, অথচ জিততে পারেননি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা – কিংবদন্তি ফুটবলারদের এই তালিকায় আরও একজন গ্রেট আছেন।
রোনালদো নাজারিও, দ্য ফেনোমেনন নামে যাকে এক নামে চেনে সবাই। অলিভার কানকে জিজ্ঞেস করলে বোঝা যাবে কে ছিলেন ফেনোমেনন? ২০০২ বিশ্বকাপ ফাইনালে জোড়া আঘাত হেনেছিলেন এই ফেনোমেনন, অলিভার কানের গ্রেটনেসের দুধের হাড়িতে ফেলেছিলেন এক ফোঁটা বিষ।
বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রি, এসি মিলান কিংবা ইন্টার মিলান – নব্বই দশকে সেরা সব ক্লাবেই খেলেন রোনালাদো। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক পর্যন্ত করেছিলেন, কিন্তু জিততে পারেননি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ট্রফি। কে বলবে, এই ভদ্রলোকই বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা।
কে বলবে, এই রোনালদোই ১৯৯৮ বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল বিজয়ী, যিনি ২০০২ সালে ব্রাজিলের সর্বশেষ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক। ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব তাঁর জন্য অধরাই ছিল চিরকাল।
কেউ না বুঝলেও সেই কষ্টটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন এমবাপ্পে। অবশ্য বয়স মাত্র ২৫। কিলিয়ান এমবাপ্পের জন্য পুরো ফুটবল ক্যারিয়ারটাই পড়ে আছে কার্যত। আর এমবাপ্পেও নিশ্চয়ই লড়ে যাবেন শেষ পর্যন্ত!