জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজকে সামনে রেখে আফগান প্রধান কোচ ল্যান্স ক্লুজনার জানান, তারা সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পাওয়া সিরিজ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে চান। ক্রিকেট ভিত্তিক গণমাধ্যম ক্রিকবাজের সাথে এই সাক্ষাৎকারে সাবেক এই দক্ষিণ আফ্রিকান গ্রেট জানিয়েছেন, তাঁরা ক্রিকেটের এই লম্বা ফরম্যাটের জন্য ফোকাস করছেন। সে হিসেবে মাইন্ডসেটও তৈরি করছেন।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একটি সফল সিরিজ ছিলো আপনার। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট ভিন্ন বলের খেলা…
আমি মনে করি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ তে জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে আমাদের বেশ অনুপ্রেরণা যোগাবে। আমরা দীর্ঘদিন পর টেস্ট ক্রিকেট খেলবো, যেকোনো ম্যাচ জেতাই আত্মবিশ্বাস এবং মোমেন্টাম আমাদের পক্ষে ধরে রাখবে। এবং আমরা সেটি ক্রিকেটে বড় ফরম্যাটে খেলায় কাজে লাগাতে চাই।
এই সিরিজকে সামনে রেখে আপনার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কোনটি?
আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ১০০ ওভারের বেশি ব্যাটিং করা। আমাদের খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে সেট করতে হবে যে তারা একটা দীর্ঘসময় ব্যাট করার সক্ষমতা রাখে। আমরা চাই ৪০০ এর বেশি রান করতে, যেটা আমাদেরকে একটা ভালো অবস্থানে রাখবে, এটিই মূলত আমাদের টার্গেট। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের পর আমরা কথা বলেছিলাম খেলোয়াড়দের সাথে যেখানে তারা ৫০ ওভার (ওয়ানডে) ব্যাট করেছিলো, তবে এখন আমাদেরকে আরো দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্যাট করতে হবে।
হঠাৎ করেই মানসিক পরিবর্তন করা আফগানিস্তানের জন্য সহজ হবে না যেহেতু তারা এই ফরম্যাটে খুব কম খেলেছে…
টি-টোয়েন্টি থেকে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য খেলোয়াড়দের মানসিক ভাবে পরিবর্তন টা জরুরি। উইন্ডিজের বিপক্ষে যারা খেলেছে তারাও সুযোগ পাবে। আমাদের মূল লক্ষ্য ৫ দিন টেস্টে টিকে থাকা, যেখানে টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচ হয় ৪০ ওভারের। মানসিক পরিবর্তন হওয়াটা খুব বড় চ্যালেঞ্জ, যেহেতু আমরা টেস্ট এর তুলনায় টি-টোয়েন্টি বেশি খেলা হয়। শারজাহতে আমাদের বেশ ভালো একটা সময় গেছে। আমরা বড় সময় ব্যাটিং করার বিষয়ে এবং লম্বা জুটির ব্যাপারে কথা বলেছি। এবং বোলিংয়ে আমাদের লক্ষ্য ২০ উইকেট নেওয়া, নাহলে আমরা টেস্ট জিততে পারবো না।
বায়ো-বাবলে থাকার অভিজ্ঞতা কেমন?
বায়ো-বাবলে থেকে খেলাটা অনেক কঠিন। যদিও এখন এটা সাধারণ, আমাদের কে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে হলে এবং পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে হলে এটা করতে হবে। এখন আমাদেরকে মানসিকভাবে বায়ো-বাবলের ব্যাপারে প্রস্তুতি নিতে হবে। বায়ো-বাবলে মূল চ্যালেঞ্জ হলো কোথাও হাটা যায় না, সুইমিং পুল কিংবা জিমে যাওয়া যায় না। কিন্তু বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই এটার সাথে মানিয়ে নিয়েছে। আমাদের খেলোয়াড়দের অবশ্যই সবকিছু মাথায় রাখতে হবে এবং নিয়ম ফলো করে দায়িত্ব নিতে হবে।
রহমত শাহের জন্য আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দূর্দান্ত এক সিরিজ ছিলো। টেস্ট অবশ্যই আপনি হয়তো তাকে আরো বেশি ব্যাটিংয়ে দেখতে চান?
রহমত শাহ ব্রিলিয়ান্ট ছিলো। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সে খুব ভালো ব্যাট করেছে। তার ব্যাটিং টেকনিক অসাধারণ, কিন্তু আমরা শুধু একজন খেলোয়াড়ের দিকেই ফোকাস করছি না। আমাদের ৭-৮ জন ব্যাটসম্যান আছে, আমাদেরকে দল হিসেবে ব্যাট করতে হবে এবং ৪০০ এর বেশি রান করতে হবে। আমাদের বাকি খেলোয়াড়েরাও ভালো ব্যাট করে। হাসমতুল্লাহ শাহিদি ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো ব্যাট করেছে, তাই আমাদের ভালো সুযোগ রয়েছে, আমরা একজন খেলোয়াড়ের উপর ফোকাস করছিনা। আমরা দল হিসেবে ভালো ব্যাটিং করতে চাই।
আসগর আফগানকে অধিনায়ক হিসেবে আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
আমাদের একজন অসাধারণ অধিনায়ক রয়েছে যে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারে, আমি বেশি ভাগ্যবান যে তারা খুব উচ্ছ্বসিত আফগানিস্তানের হয়ে খেলতে পেরে। আমরা কথা বলেছি যখন সবাই জার্সি তুলে রাখে, তোমরা তোমাদের বুকের সামনে থাকা ব্যাচের জন্য খেলো, যেটা প্রমাণ করে তোমরা আফগানিস্তানকে নেতৃত্ব দিচ্ছো। যেটা খুব বড় দায়িত্ব এবং প্রেরণা, কিন্তু যখন তুমি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলো, তুমি শুধু তোমার এবং তোমার জার্সির পেছনের নামের জন্যই খেলো।