মহিপাল লোমরর, দেরিতে ফোটা ফুল

বয়সভিত্তিক দলের সতীর্থরা যখন জাতীয় দলে খেলছেন, তখনো দৃশ্যপটেই দেখা মেলেনি তাঁর। তবে খানিকটা দেরিতে হলেও আইপিএলে নিজের প্রতিভার জানান দিচ্ছেন মহিপাল লোমরর। এবারের আইপিএলে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর মিডল অর্ডারের মূল ভরসা এই তরুণ। 

বয়সভিত্তিক দলের সতীর্থরা যখন জাতীয় দলে খেলছেন, তখনো দৃশ্যপটেই দেখা মেলেনি তাঁর। তবে খানিকটা দেরিতে হলেও আইপিএলে নিজের প্রতিভার জানান দিচ্ছেন মহিপাল লোমরর। এবারের আইপিএলে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর মিডল অর্ডারের মূল ভরসা এই তরুণ। 

রাজস্থানের তরুণ মহিপাল লোমররের গল্পটা বাকি দশটা প্রতিভাবান তরুণের চাইতে ভিন্ন নয়। ভারতের বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলোতে আলো ছড়িয়ে জায়গা করে নেন ছোটদের বিশ্বকাপগামী দলে। সেখানেও প্রতিভার ছাপ রাখেন এই ব্যাটার, দ্বিতীয় ম্যাচেই খেলেন ৪৫ রানের ঝড়ো এক ইনিংস। 

কিন্তু বিশ্বকাপ থেকে ফিরতেই যেনো ক্যারিয়ারের চাকা উল্টোদিকে ঘুরতে শুরু করে লোমররের। সতীর্থ ঋষাভ পান্ত কিংবা ওয়াশিংটন সুন্দর যেখানে ঘরোয়া ক্রিকেটের গন্ডি পেরিয়ে আলো ছড়াতে শুরু করেন জাতীয় দলের জার্সিতে, যেখানে লোমররের তখন আইপিএলে একাদশে জায়গা করাই দায়। দিল্লী ডেয়ারডেভিলসের হয়ে সেবারের মৌসুমে প্রায় পুরোটা সময় বেঞ্চেই কাটাতে হয়েছে তাঁকে। 

গল্পটা বদলায়নি পরের মৌসুমগুলোতেও। ঠিকানা বদলে রাজস্থান রয়্যালসে নাম লেখালেও গল্পটা বদলায়নি। নিয়মিত খেলার সুযোগ পাননি, যে দুয়েক ম্যাচে সুযোগ মিলেছে তাতে আলো ছড়াতে পারেননি। সবার ধারণা ছিল বয়সভিত্তিক দল আর সিনিয়র ক্রিকেটের মাঝের ব্যবধানটা বড্ড বেশিই হয়ে গিয়েছে লোমররের জন্য। 

তবে লোমরর নিজে হাল ছাড়েননি। নেটে ঘাম ঝরিয়েছেন, ব্যাটিংয়ে শটের সংখ্যা বাড়িয়েছেন। ছক্কা হাঁকানোর সুনাম ছিল সেই বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই। বাকিরা যেখানে সীমানা পার করতেই হিমশিম খেতেন, সেখানেই অবলীলায় বড় মাঝ গ্যালারিতে পাঠাতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। এছাড়া কাজ করতে শুরু করতে শুরু করেন বাঁহাতি স্পিন নিয়েও।

পরিশ্রমের ফলাফল পেতেও খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। ঘরোয়া ক্রিকেটে আলো ছড়ানোর সুবাদে রাজস্থান ছেড়ে দিলেও আইপিএলে দল পেতে সমস্যা হয়নি। বিরাট কোহলির রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু তাঁকে দলে ভেড়ায় ৯৫ লাখ রুপির বিনিময়ে। গত মৌসুমেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর মাঝে ভালো করার সকল উপাদানই বিদ্যমান, কেবলমাত্র ছন্দটা পাবার অপেক্ষা। 

ব্যাঙ্গালুরু কর্তৃপক্ষও তাই আস্থা হারায়নি এই তরুণের উপর থেকে। ব্যাটিংয়ে খানিকটা অধারাবাহিক হলেও নিয়মিত একাদশে সুযোগ দিয়ে গেছে এই তরুণকে। লোমররও সেই আস্থার প্রতিদান দিতে শুরু করেছেন দারুণভাবে। মিডল অর্ডারে দীনেশ কার্তিকের অফফর্ম মোটেই টের পেতে দেননি এবারের মৌসুমে। 

দিল্লী ক্যাপিটালসেরর বিপক্ষে ধীরগতির শুরুর সুবাদে যখন ধুঁকছে ব্যাঙ্গালুরু, তখনি ক্রিজে আবির্ভাব লোমররের। তাঁর মারকুটে ব্যাটিংয়ের সামনে খেই হারিয়েছেন দিল্লীর বোলাররা। অপরপ্রান্তে বিরাট কোহলি যেখানে বাউন্ডারি হাঁকাতে হিমশিম খেয়েছেন, সেখানে লোমরর বলকে সীমানাছাড়া করেছেন অবলীলায়।

যেন বাউন্ডারি হাঁকানোর চাইতে সহজ আর কিছু হতেই পারে না! শেষপর্যন্ত ছয় চার আর তিন ছক্কায় তাঁর ২৯ বলে অপরাজিত ৫৪ রানে ভর করে লড়াকু সংগ্রহ পায় ব্যাঙ্গালুরু। 

Mahipal Lomror of Royal Challengers Bangalore plays a shot during match 49 of the TATA Indian Premier League 2022 (IPL season 15) between the Royal Challengers Bangalore and the Chennai Superkings held at the MCA International Stadium in Pune on the 4th May 2022
Photo by Pankaj Nangia / Sportzpics for IPL

ক্রিকেট খেলায় শেষ বলে আসলে কিছু নেই। ফর্মটা ধরে রেখে সামনে এগোতে পারলে মহিপাল লোমরর তাই ফিরে আসার স্বপ্নটা দেখতেই পারেন। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...