আন্তর্জাতিক ফুটবলে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো বরাবরই দূর্বল। অধিকাংশের জন্য এশিয়া কাপ খেলাটাই যেখানে এককথায় অসম্ভব। বিশ্বকাপ তো সেখানে আরও দূরের কথা। ইউরোপিয়ান লিগ গুলোতে খেলাটাও এখানকার খেলোয়াড়দের জন্য বেশ দুস্করই বটে। তবে এ কাঠিন্যের বাধা পেরিয়েই ইংল্যান্ডে ফুটবল খেলে যাচ্ছেন পাক বংশদ্ভূত ওটিস খান। মূল ধারার প্রিমিয়ার লিগে যদিও জায়গা হয় নি তার। তবুও বেশ দাপটের সাথেই নিচের লিগ গুলোতে খেলে যাচ্ছেন ২৯ বছর বয়েসী এই মিডফিল্ডার।
ওটিসের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা ইংল্যান্ডে। যুব ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল একাডেমিতে। পরবর্তীতে ২০১২ সালে আরেক প্রিমিয়ার লিগ খেলা শেফিল্ড ইউনাইটেডের যুব দলে যোগ দেন তিনি। ক্রাওলি টাউনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের মার্চ মাসে মূলদলে তার অভিষেক ঘটে। পরবর্তী তিন সিজন তিনি লোনে বাক্সটন, ম্যাটলক বা ব্যারোর মতো নিচ সারির দলে কাটান।
পরবর্তীতে ওটিস একে একে ইয়েওভিল,ট্র্যানমিয়ার, গ্রিমস্বি এবং ম্যান্সভিল জার্সি তে মাঠ কাপান। যারা প্রত্যেকেই কখোনো না কখনো খেলেছেন তৃতীয় সারির ইএফএল-এ। ওটিসের ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা কাটে ইয়েওভিল-এ। গ্লোভার্স জার্সি গায়ে রয়েছে তার ১২ গোল। তাও ৬৭ টি উপস্থিতির বিপরীতে। কাটিয়েছেন দুই মৌসুম।
ইংল্যান্ডে জন্ম হওয়া ওটিসের পূর্ব পুরুষদের প্রতি রয়েছে অগাধ টান। সেই টানের জের ধরেই খেলতে আসেন পাকিস্তান ফুটবল দলে। গতবছর নভেম্বর মাসেই তিনি পাকিস্তান দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলার সুযোগ লাভ করেন। দলকে প্রথম বারের মতো নেতৃত্বও দেন। তাও বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের মতো কঠিন মঞ্চে। যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল শক্তিশালী সৌদি আরব। পাক জার্সিতে ইতোমধ্যেই খেলে ফেলেছেন নয়টি ম্যাচ।
সাম্প্রতিক গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার মৌসুমে তিনি যোগ দিয়েছেন পঞ্চম সারির দল ওল্ডহ্যাম অ্যাথলেটিক্সে। ম্যানেজার মিকি মেলনও প্রচুর আশাবান তার এই নব্য মিডফিল্ডারকে নিয়ে। প্রাক মৌসুমী টুর্নামেন্টে তার (ওটিস) উপস্থিতিতে মিকি অত্যন্তু সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, ‘আমাদের চাহিদা মূলত এখন টেকনিক্যাল খেলোয়াড়, যিনি পরিশ্রমী এবং দলের জন্য দৃঢ় মনোভাব রাখে। ওটিস এ সব কিছুই ধারন করে।’
লেটিক্সদের হয়ে ৩৩ নম্বর জার্সি গায়ে জড়াবেন এই পাক ফুটবলার। ওটিস মূলত একজন আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার। তবে উইং এ খেলারও যোগ্যতা রাখেন। বয়স হয়েছে কেবল ২৯। খুব বেশি খেলুড়ে সময় হয়তো নেই। তবে এর মাঝেই রয়েছে অগাধ সম্ভাবনা। নতুন দলে তিনি সম্ভাবনা কতটুকু কাজে লাগাবেন তা সময়ের ধারাই সিদ্ধান্ত নেবে।