কেউ নিজেদের সময়ে সরাসরি দেখেছেন ক্রিস গেইল, সুরেশ রায়নাদের পাওয়ার হিটিং; হরভজন সিং কিংবা ব্রেট লির মত তারকাদের বোলিং। পুরনো দিনের নায়কদের আবারো মাঠে দেখার স্বপ্ন তাই ভাসে সেই ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখে। আবার অনেকে হয়তো ক্রিকেটটা ঠিকঠাক বোঝার আগেই অবসরে চলে গিয়েছিলেন এই কিংবদন্তিরা, খানিকটা আক্ষেপ সেজন্য হয়তো আছে তাঁদের মনে।
তবে অতৃপ্তি আর আক্ষেপ মেটানোর সুযোগ করে দিয়েছে লেজেন্ডস লিগ ক্রিকেট (এলএলসি)। ক্রিকেট মাঠ থেকে বিদায় নেয়া তারকারা পুনরায় বাইশগজে ফিরেছেন এই টুর্নামেন্ট দিয়ে। এটা শুধুই স্মৃতিচারণের ব্যাপার নয়, রীতিমতো নতুন অভিজ্ঞতা দিচ্ছে দর্শকদের। একই সাথে বর্ষীয়ান ক্রিকেটারদের আর্থিকভাবেও দারুণ সাহায্য করছে এই ধরনের আয়োজন।
গত মাসেই শেষ হয়েছে এলএলসি টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসর। নতুন দল হিসেবে এবার যোগ হয়েছিল সাউদার্ন সুপার স্টারস এবং আরবানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। ব্যাট বলের দুর্দান্ত লড়াই শেষে শিরোপা জিতেছে হরভজন সিংয়ের মনিপাল টাইগার্স; ফাইনালে হায়দ্রাবাদকে পাঁচ উইকেটে হারিয়েছিল দলটি।
২০২২ সালে প্রথম সূচনা হয়েছিল এটির; বিশ্বের নানান প্রান্ত থেকে নানান কাজে ব্যস্ত সাবেক ক্রিকেটারদের জড়ো করা হয়েছিল একটা মাঠে। তারপরের সবকিছু তো জলের মত সরল; ব্যাট আর বল হাতে তাঁরা নেমে পড়েছেন মাঠে, হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতই মন্ত্রমুগ্ধকর সুরে ডেকে এনেছেন ক্রিকেট পাগলদের।
ছয় দলের এই ক্রিকেট উৎসব এক বা দুইটি স্টেডিয়ামে আবদ্ধ ছিল না; আয়োজকরা পাঁচটি স্টেডিয়াম ব্যবহার করেছেন। প্রতিটা জায়গাতেই গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন তাঁরা; দর্শকদের কোলাহল ছিল, স্বত:স্ফূর্ত ছিল। দুইটি ভিন্ন প্রজন্মের মাঝে এই যে মেলবন্ধন এটাই তো লিজেন্ড লিগ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সাফল্য।
ক্রিস গেইল বড় বড় ছক্কা হাঁকাতে ভোলেননি এতদিনেও, গৌতম গম্ভীর কি অনায়াসে বাউন্ডারি হাঁকাচ্ছেন, দুই পাঠান – ইউসুফ আর ইরফানের ফিনিশিং দেখে এখনো মুগ্ধ হতে হয় – এসবকিছু দেখা সম্ভব হয়েছে অজানা কোন এক ক্রিকেট উদ্যোক্তার বদৌলতে। এমন আয়োজন যতদিন থাকবে ততদিনই ক্রিকেটের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রতিদান দিয়ে যাবেন ভক্ত-সমর্থকেরা।