অনেক ক্রিকেটার জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর নিজেকে সঠিক ভাবে মেলে ধরতে পারেন না। এর ফলস্বরূপ জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর তাঁদের সবারই মূল লক্ষ্য হয় ঘরোয়া ক্রিকেট পারফর্ম করে আবারো জাতীয় দলে ফেরতে আসা।
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম জাতীয় দলে ফেরত আসার ঘটনা নেহায়েৎ কম নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই ঘটনা অহরহই ঘটছে। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে আবার জাতীয় দলে ফিরে আসার মধ্যে অনেক ক্রিকেটারের দীর্ঘ সময় কেটে গেছে। দীর্ঘ সময় পর জাতীয় দলে ফিরে এসেছেন এমন ক্রিকেটাদেরকে নিয়ে খেলা ৭১-এর আজকের এই আয়োজন।
- জেফ উইলসন (নিউজিল্যান্ড)
নাম দেখে তাঁকে না চেনা টাই স্বাভাবিক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে মোটে সাত ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। এর মধ্যে ৬ ওয়ানডে এবং এক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এই সাত ম্যাচ খেলতেই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে কাটিয়ে দিয়েছেন প্রায় ১২ বছর।
জেফ উইলসনের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অভিষেক ১৯ মার্চ, ১৯৯৩ সালে। অভিষেক ম্যাচের পর একই বছর নিউজিল্যান্ডের জার্সি গায়ে আবার মাঠে নামেন তিনি। বলার মত কোনো পারফর্ম করতে না পারায় চার ম্যাচ খেলেই জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন তিনি।
এর পর আবারো জাতীয় দলের জার্সিতে ফেরেন তিনি। ততদিনে নিউজিল্যান্ড খেলে ফেলেছে ২৭১ টি ওয়ানডে এবং সময়ের হিসেবে কেটে গিয়েছিলো ১১ বছর ৩৩১ দিন। এর পর আবারো দুই ওয়ানডে খেলে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। এরপর আর জাতীয় দলে ফেরা হয়ে উঠেনি তাঁর।
এরপর ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে বিদায় জানিয়ে রাগবি খেলা শুরু করেনজেফ উইলসন।
- ফ্লয়েড রেইফার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
এই ক্যারিবিয়ান বামহাতি ব্যাটসম্যান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলেছেন ১৫ টি ম্যাচ। এর মধ্যে ৮ ওয়ানডে,৬ টেস্ট এবং একটি ওয়ানডে।
রেইফারের ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক ১৯৯৭ সালে। ওই ম্যাচে শুন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। এরপরই জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন। এরপর আবার জাতীয় দলে ফেরেন ১৯৯৯ সালে। এইবারো এক ওয়ানডে খেলেই জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন তিনি।
৭ ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৯ সালে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর আবারো জাতীয় দলে ফিরেছিলেন তিনি। ১০ বছর ১৬৯ দিন পর দলে ফিরেন ২০০৯ সালে। এই সময়ের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে খেলেছিলো ২৫৪ টি। এই বার দলে ফিরে ৬ ম্যাচ খেলেছিলেন ফ্লয়েড রেইফার।
- ইরোল স্টুয়ার্ট (দক্ষিণ আফ্রিকা)
ইরোল স্টুয়ার্ট দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলেছেন মোট ৬ টি ম্যাচ। তিন বার জাতীয় দলে এসে এই ছয় ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি।
১৯৯৩ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক হয় ইরোল স্টুয়ার্টের। এরপর এই বছরেই অভিষেক ম্যাচ সহ তিনটি ম্যাচ খেলে দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। ১৯৯৪ সালে আবারো জাতীয় দলে ফেরেন তিনি। এই বার অস্ট্রেলিয়া সফরে দুই ম্যাচ খেলে আবারো বাদ পড়েন।
২০০২ সালে ৮ বছর ২৫১ দিন পর আবারো জাতীয় দলে ফেরেন ইরোল স্টুয়ার্ট। এতো দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা দল খেলে ফেলেছিলো ২১৮ ওয়ানডে। এই বার একটি ওয়ানডে খেলেই জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন ইরোল স্টুয়ার্ট।
- দিলহারা লোকুহেত্তিগে (শ্রীলঙ্কা)
দিলহারা লোকুহেত্তিগে শ্রীলঙ্কা দলের হয়ে অভিষেক ২০০৫ সালে। এই সময়ে অভিষেকের বছরে শ্রীলঙ্কা দলের হয়ে খেলেন আট ওয়ানডে। এরপরই জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন।
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে আবারো জাতীয় দলে ফেরেন ৭ বছর ২৩৯ দিন পর ২০১৩ সালে। এই সাত বছরে শ্রীলংকা দল খেলেছিলো ২১৮ টি ওয়ানডে। এই সময়ে জাতীয় দলে ফিরে মাত্র একটি ওয়ানডে খেলেই দল থেকে বাদ পড়েন। এর পর আর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ানো হয়ে উঠেনি তাঁর।
- জো ডেনলি (ইংল্যান্ড)
ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। তিনি এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ডের হয়ে ৪৪ টি ম্যাচ খেলেছেন। এর মধ্যে ১৫ টেস্ট, ১৬ ওয়ানডে এবং ১৩ টি-টোয়েন্টি।
ওয়ানডে ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক ২০০৯ সালে। অভিষেকের বছরে ইংল্যান্ড দলের হয়ে খেলেছেন ৯ টি ওয়ানডে। এই নয় ম্যাচে দুই হাফ সেঞ্চুরি করার পরও জাতীয় দল ক্রেইগ কিসওয়েটারের কারণে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন।
এরপর আবারো জাতীয় দলে ফেরেন ৯ বছর ২১৩ দিন পর ২০১৯ সালে। জো ডেনলি জাতীয় দলে না থাকাকালীন সময়ে ইংল্যান্ড খেলে ফেলেছিলো ২০৪ টি ওয়ানডে ম্যাচ। এরপর জাতীয় দলের হয়ে ৭ টি ওয়ানডে খেলেছিলেন তিনি। সাথে টেস্ট দলেও নিয়মিত জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। খারাপ পারফর্মেন্স এবং ইনজুরিজনিত সমস্যার কারণে আবারো জাতীয় দলে আবারো অনিয়মিত হয়েছেন তিনি।