শুরুতেই ব্যাকফুটে খুলনা টাইগার্স। ১৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মুনীম শাহরিয়ারের উইকেট হারায় টাইগার্সরা। স্বাভাবিকভাবেই লক্ষ্য তাড়া করবার মনোবলে দারুণ এক আঘাত। তবে সে আঘাতে যেন বিন্দুমাত্র টলেননি তরুণ ক্রিকেটার মাহমুদুল হাসান জয়। তিনি নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখলেন। খুলনার পক্ষে ব্যাট উচিয়ে ধরলেন।
মাহমুদুল হাসান জয়, বাংলাদেশ ক্রিকেটের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেশ সম্ভাবনাময় একজন খেলোয়াড়। তরুণ এই ক্রিকেটার ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে খেলে ফেলেছেন। তবে বাকি দুই ফরম্যাটে দলে জায়গা করে নিতে হলে অন্তত নিজেকে প্রমাণ করা চাই। সেই প্রমাণের মঞ্চ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। তবে খুলনার হয়ে প্রথম দিকে সুযোগ পেলেন না জয়। তাঁকে ম্যাচ দেখতে হলো সাইড বেঞ্চে বসে।
তিনি যেন নিজের সুযোগের অপেক্ষাটাই করছিলেন। সেই সুযোগটা এলো চট্টগ্রাম পর্বে। আর তিনি যে ম্যাচে সুযোগ পেলেন, সে ম্যাচটাই জয় পেয়েছে খুলনা টাইগার্স। ‘লাকি চার্ম’ বলা যেতে পারে তাঁকে। এর আগের সবগুলো ম্যাচই যে হেরেছিল ইয়াসির রাব্বির দল। অবশ্য সেই জয়ে জয় অবদান রেখেছিলেন ব্যাট হাতে।
রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে সে ম্যাচে নিজের পুরনো ফর্মে ফিরেছলেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটার তামিম ইকবাল। জয় শুধু সঙ্গ দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁকে। তবুও ৩৮ রানে অপরাজিত থেকে দলের পক্ষে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। তবে সেই ইনিংসটায় ঠিক মন ভরেনি জয়ের। তিনি যেন হয়ে গেলেন আরও বেশি ক্ষুধার্ত। রানের ক্ষুধা বেশ তীব্র। আর সেটার সুফলটাই যেন পেয়ে গেলেন জয়।
চট্টগ্রামের বিপক্ষে ১৫৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা খুলনার ওয়ান ডাউনে বাইশ গজে আসেন জয়। তিনি খানিকটা বাইশ গজের পরিস্থিতি বুঝে ওঠার চেষ্টা করেন শুরুর দিকে। এরপর বেশ অবলীলায় ব্যাট করতে থাকেন জয়। দারুণ সব ক্রিকেটীয় শটে তিনি মুগ্ধ করেন মাঠ ও মাঠের বাইরে থাকা দর্শকদের। তিনি প্রমাণ করেন টি-টোয়েন্টি সংস্করণেও তিনি বেশ কার্য্যকর।
প্রায় ১৩৪ স্ট্রাইকরেটে তিনি ব্যাট করে খুলনাকে জয়ের পথেই রাখেন। ৫৯ রানে নিহাদুজ্জামানের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে তিনি খেলেন ৪৪টি বল। এই ইনিংসটিতে যে তিনি খুব মারকাটারি ব্যাটিং করেছেন তেমন নয়। তবুও তিনি একটা বার্তা দিয়ে রাখলেন ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণেও খেলতে তিনি প্রস্তুত।
সুযোগের সদ্ব্যবহার করা এবং নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখার কাজটা বেশ কঠিন। তবুও মাহমুদুল হাসান জয়রা চ্যাম্পিয়ন মেন্টালিটি নিজেদের মধ্যে ধারণ করেন। বহু প্রতিক্ষিত সুযোগটা হেলায় হারান না তরুণ এই ক্রিকেটাররা। তেমনই এক উদাহরণ হয়ে রইলেন জয়। পাঁচ চার ও এক ছক্কায় সাজানো ইনিংসটা নিশ্চয়ই আরও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে।