বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাস লিখতে গেলে যে কয়েকটা নাম সবার আগে আসবে তাঁদের একজন তিনি। সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা পারফর্মারদের একজন। যদিও লাল বলে তাঁর পুরোটা না পাওয়ার আক্ষেপ আছে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাঁর শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলে ফেলেছেন এটা সবাই জানে। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটা কখনো আসেনি, আজ সেটাই পাওয়া গেল।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কত সোনালি সময় এনে দিয়েছেন এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি, কার্ডিফের সেই লড়াই, নিদাহাস ট্রফির ছয় – এগুলো আমাদের ক্রিকেটের সোনালি সময়ের পোস্টার। সবই এসেছে রিয়াদের ঝুলি থেকে। ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় এসে খুব একটা ভালো সময় পার করছেন না। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। তাই বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই বরপুত্রের টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায়টাও কেমন মলিন হয়েই রইলো।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারে স্টেডিয়ামে লম্বা সময় বাদে বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন। নিজের ৫০ তম টেস্ট ম্যাচে খেললেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটা। তাঁর অপরাজিত ১৫০ রানের ইনিংসে সহজ জয়ই পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে ম্যাচ চলাকালীন সময়েই ধরলেন অভিমানের সুর। অফিসিয়ালি কিছু না বললেও জানা গেল সেটাই তাঁর শেষ টেস্ট ম্যাচ। ড্রেসিং রুমে সতীর্থদের বলেছিলেন আর কখনো খেলবেন না এই ফরম্যাটটায়।
আজ বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান এই ফরম্যাটটায় আর দেখা যাবেনা রিয়াদকে। বিজ্ঞপ্তিতে রিয়াদ বলেন, ‘এত লম্বা সময় ধরে খেলা ফরম্যাটটা ছেড়ে দেয়া আমার জন্য সহজ না। আমি সবসময়ই সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি। তবে আমার মনে হয় টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর এটাই সঠিক সময়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আবার টেস্ট দলে ফিরে আসার সময় আমাকে সাপোর্ট করার জন্য আমি বিসিবি প্রেসিডেন্টের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি আমার দলের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই কেননা তাঁরা সবসময় আমার উপর আস্থা রেখেছে। এটা আমার জন্য অনেক সম্মানের ও গর্বের যে আমি বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পেরেছি।’
লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানালেও ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলে যাচ্ছেন রিয়াদ। টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্বও পালন করছেন তিনি। রিয়াদ এই বিষয়ে বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও আমি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলে যাব। সেখানে আমি আমার দেশের জন্য সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করবো।’
বাংলাদেশের হয়ে সবমিলিয়ে ৫০ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন এই ক্রিকেটার। সেখানে তাঁর ঝুলিতে আছে ২৯১৪ রান ও ৪৩ উইকেট। এই ফরম্যাটে ৫ টি সেঞ্চুরিও করেছেন রিয়াদ। সবমিলিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে বড় একটি ভরসার জায়গা ছিলেন তিনি। তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করাও বড় চ্যালেঞ্জ হবে বাংলাদশের জন্য।