১০৩ মিটার ছক্কা! বল সোজা মাঠের বাইরে। বুড়িয়ে যাওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে বিশাল ছক্কার মার। সেটা রীতিমত নিন্দুকদের গালে চপেটাঘাত। ক্লান্ত বদনে যে এখনও অনেকখানি ক্রিকেট বাকি। রিয়াদ প্রতিটা মুহূর্তে সেই প্রমাণ রেখে যাচ্ছেন।
এই তো সেদিন বঙ্গবন্ধু জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিক ট্র্যাকে দৌড়ালেন ক্রিকেটাররা। ফিটনেসের সে পরীক্ষায় রিয়াদ পিছিয়ে পড়েছিলেন। যত যাই হোক, বয়স হয়েছে সেটা তো মিথ্যে নয়। বয়স হলেই ফুরিয়ে গেছে, সে ধারণা মিথ্যে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ব্যাট হাতে সেটাই প্রমাণ করছেন, রিয়াদের ব্যাট কর্ণপর্দা ফাটিয়ে ফেলে সে চিৎকারই করছে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। দীর্ঘ একটা বিরতির পর তিনি ফিরেছিলেন টি-টোয়েন্টিতে। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করেছিলেন অর্ধশতক। এরপর জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরুর দিকে নিজের ব্যাটিং সত্ত্বা প্রদর্শনের সুযোগ পাননি। জিম্বাবুয়েই সে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে পারেনি।
তবে যে ম্যাচে সুযোগ পেলেন সে ম্যাচেই জ্বলে উঠল তার ব্যাট। এমন বিধ্বংসী এক ছক্কার মার তো বাংলাদেশী ব্যাটারদের কাছ থেকে সচারচর দেখা মেলে না। ছক্কা মেরে বলকে মাঠ ছাড়া করবার সাহসটাই যেন কেউ দেখায়নি। রিয়াদ জানেন তার এখন আর হারানোর কিছু নেই।
যা কিছু হারানোর তিনি তা হারিয়েছেন ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগেই। সেবার সমালোচনার তাজিংডনের নিচে চাপা পড়েছিলেন তিনি। অফফর্মের কারণে তাকে তিরস্কার করতেও ছাড়েনি কেউ কেউ। সেখান থেকে তিনি ফিরেছেন প্রতাপের সাথেই। তিনি বিশ্বকাপের মঞ্চে ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা পারফরমার।
তখন থেকেই হয়ত রিয়াদ আর কোন কিছু নিয়েই বিচলিত হননা। তিনি আস্থা রাখেন সৃষ্টিকর্তার উপর। তিনি অপেক্ষা করেন নিজের সময়ের। সেই সময়ে তিনি ছক্কা হাকান। তিনি ছক্কা হাকিয়ে হারিয়ে ফেলেন বল। রিচার্ড এনগারাভা তখন স্রেফ বিস্ময়ভরা নয়নের দর্শক।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্বল্প সময় মাঠে ছিলেন। তবে জয় নিশ্চিত করেই মাঠে নেমেছেন। ঐ বল হারানো ছক্কা ছাড়া আর একটি চার এসেছে তার ব্যাট থেকে। ১৬ বলে ২৬ রান নিয়ে অপরাজিত থেকেছেন। ১৬২ স্ট্রাইকরেটের একটা কার্যকর ইনিংস খেলেছেন রিয়াদ। তাতে করে বিশ্বকাপের দলের সুযোগ পাওয়ার দাবি আরও খানিকটা জোরালো করলেন তিনি।