অস্ট্রেলিয়ার জার্সি গায়ে তিনি একজন ফিনিশার। মাঝে মধ্যে বল হাতেও দেখা যায়। তবে সময়ের চাহিদা মেনে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে যেন তিনি বনে গেলেন টপ অর্ডার ব্যাটার। লখনৌ সুপার জায়ান্টসের জার্সি গায়ে ব্যাট করতে নামেন তিন নম্বরে। আর সেখানেই নেমেই বাজিমাত করেন মার্কাস স্টোয়িনিস। চিপকের বুকে লিখে ফেলেন একাধিক রেকর্ড।
আইপিএলে ব্যাট হাতে সময়টা মোটেও ভাল যাচ্ছিল না মার্কাস স্টোয়িনিসের। ব্যাট হাতে বড় ইনিংস খেলতে পারছিলেন না। দলের হয়ে অবদানও রাখতে পারছিলেন না তিনি। সে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে। চেন্নাইয়ের চিপক স্টেডিয়ামে অবশেষে হেসেছে তার ব্যাট।
আগে ব্যাটিং করে চেন্নাই সুপার কিংস স্কোরবোর্ডে জমা করে ২১০ রান। সেই লক্ষ্য পার করতে এবার যেন খানিক দ্রুতই ডাক এসে যায় স্টোয়িনিসের। তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে তিনি আসেন বাইশ গজে। এরপর ধীরে ধীরে লখনৌ সুপার জায়ান্টসকে রাখছিলেন জয়ের কক্ষপথে।
লখনৌর ওপেনার কুইন্টন ডি কক ফিরে যান দ্রুতই। এরপরই তিনি এসে দলের দায়িত্বভার নিজের কাঁধে তুলে নেন। অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও নিজের ইনিংসটি বড় করতে পারেননি। স্বাভাবিকভাবেই অভিজ্ঞ খেলোয়াড় হিসেবে স্টোয়িনিসের কাঁধে এসে পড়ে দায়িত্ব। তিনি একটা প্রান্ত তাই আগলে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যান।
তেমনটি করতে গিয়ে যে একেবারেই রক্ষণের খোলসে বন্দী হয়ে যান তিনি, তা নয়। রান তোলার চাহিদা মাথায় রেখেই ব্যাট চালাতে থাকেন স্টোয়িনিস। বল হাতে যে আরও এক দুঃখকর দিনই পার করেছেন তিনি। ৪ ওভার হাত ঘুরিয়েও উইকেটের দেখা পাননি। এমনকি রান দেওয়ার বেলায় দেখিয়েছেন উদারতা। ৪৯ রান হজম করেন বোলার স্টোয়িনিস।
তাইতো দলকে জয় এনে দেওয়ার দায়িত্ব কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছিল তার। সেই দায়িত্ব পালনেই মনোযোগ দেন তিনি। আর তাতেই তিনি পৌঁছে যান শতকের দুয়ারে। আইপিএল ক্যারিয়ারের নিজের প্রথম শতক তুলে নেন অজি এই অলরাউন্ডার। দারুণ দক্ষতা, সেই সাথে দায়িত্ববোধের মঞ্চায়ন।
নিজের আসল রুপটি যেন তিনি জমিয়ে রেখেছিলেন ইনিংসের একেবারে শেষ ওভারের জন্যে। জয়ের জন্যে শেষ ওভারে ১৭ রান প্রয়োজন ছিল লখনৌয়ের। সেই ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানকে রীতিমত তুলোধুনো করেন তিনি।তাকে বাইশ গজে আমন্ত্রণ জানান ছক্কা হাকিয়ে। এরপরের দুই বলে দুইটি চার মেরে জয়কে একেবারে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন স্টোয়িনিস।
প্রায় ১৯৭ স্ট্রাইকরেটের এক ইনিংস খেলেন তিনি। মাত্র ৬৪ বলে ১২৪ রান করে দলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি। চিপক স্টেডিয়ামে তার খেলা ইনিংসটিই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। এছাড়াও চেন্নাইয়ের ঘরের মাঠে এর আগে কেউ এত রান তাড়া করে জিততে পারেনি। স্টোয়িনিস সেই অসাধ্যই সাধন করলেন।