মায়াঙ্ক যাদব, নামটা শুনতে হবে বারবার

মাত্রই টিভি অন করেছি তখন। দেখি বোলিং মার্কে দাঁড়িয়ে এক বোলার। চেহারা চিনি না। স্ক্রিনে নাম দেখলাম, মায়াঙ্ক যাদব। নাম শুনেছি বলে মনে পড়ল না। কিন্তু প্রথম ডেলিভারি দেখেই চমকে গেলাম। দারুণ গতিময়। স্পিডগানে গতি দেখা গেল ১৪৭ কিলোমিটার।

চমকের সেটি কেবল শুরু। দ্বিতীয় ডেলিভারি ১৪৬ কিলোমিটার। পরেরটি ১৫০ কিলোমিটার! জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে জনি বেয়ারস্টো বল চোখে দেখলেন বলে মনে হল না।

ধারাভাষ্য থেকেই জানলাম, আইপিএলে তার অভিষেক ম্যাচ এটি। তাকে ক্যাপ তুলে দেওয়ার ভিডিও দেখানো হল।

তার পরের ওভারের প্রথম ডেলিভারি দেখে আরেকবার চমকে গেলাম। ১৫৫.৮ কিলোমিটার! ওই ওভারের আরেক ডেলিভারি ১৫৩ কিলোমিটার। দেড়শো ছাড়ালেন পরে আরও। ১৪৭-১৪৮ কিলোমিটার তো ছিলই।

২০২২ আইপিএলে উমরান মালিক ১৫৭ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেছিলেন। আর কোনো ভারতীয় পেসার ১৫৫ ছুঁয়েছেন বলে মনে পড়ে না।

মায়াঙ্ক শুধু গতির ঝড়ই তোলেননি, কার্যকরও ছিলেন দারুণ। ২০০ রান তাড়ায় পাঞ্জাব কিংস শতরানের উদ্বোধনী জুটি গড়লেও মায়াঙ্কের স্পেলই ঘুরিয়ে দিল ম্যাচের মোড়। ৪ ওভারে ২৭ রানে ৩ উইকেট। জনি বেয়ারস্টো, প্রাভসিমরান সিং, জিতেশ শর্মা – সবাই আউট হলেন মূলত গতির সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে।

তাৎক্ষণিকভাবে একটু জানার চেষ্টা করলাম তা সম্পর্কে। দিল্লীর ছেলে। বয়স স্রেফ ২১। এবার সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতেও তিনি ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করেছেন। গতির কারণেই বছর দুয়েক আগে তাকে নজরে রেখেছিলেন গৌতম গম্ভীর। ২০২২ আইপিএলের নিলামে তাকে ২০ লাখ রুপিতে দলে নেয় লখনৌ সুপার জায়ান্টস। গাম্ভির তখন দলের মেন্টর। তবে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি মায়াঙ্ক। গত আইপিএলের আগে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে চোট পেয়ে ছিটকে যান গোটা আসর থেকে। অবশেষে এবার সুযোগ পেলেন এবং তাক লাগিয়ে দিলেন।

ম্যাচের পর পাঞ্জাব কিংস অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান বললেন, মায়াঙ্কের গতিতে তিনি নিজেও বিস্মিত হয়ে গেছেন। এই ম্যাচের পর তার সম্পর্কে নিশ্চয়ই আরও অনেক কিছু জানতে পারব ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোয়।

তরুণ এক পেসার গতি দিয়ে প্রতিপক্ষকে নাড়িয়ে দিচ্ছেন, সব সময়ই তা দেখতে উপভোগ্য। ভারতীয় ক্রিকেট আরও একজন দারুণ প্রতিভা পেয়ে গেল। মায়াঙ্ক প্রভু যাদব – নামটা হয়তো আরও অনেক শুনতে হবে আমাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link