জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব পাবার পর থেকেই যেন ব্যাট হাতে দু:সময় কাটাচ্ছেন রোহিত শর্মা। মাঝে ফিরে আসার ঝলক দেখালেও আইপিএলের এবারের আসরে এখনো ব্যর্থতার বেড়াজালেই বন্দী এই তারকা। ভারতের সাবেক ব্যাটার বীরেন্দর শেবাগ অবশ্য মনে করছেন রোহিতের এমন রান খরার কারণ ব্যাটিং টেকনিক নয়, বরং মানসিক।
এবারের আইপিএলে ১১ ম্যাচে মাত্র ১৭.৩৬ গড়ে ১৯১ রান করেছেন এই তারকা। স্ট্রাইক রেটটাও যেন হিটম্যান তকমার সাথে বেমানান, মাত্র ১২৪। সম্মুখীন হতে হয়েছে আইপিএল ইতিহাসের লজ্জার এক রেকর্ডের, সর্বোচ্চ ১৬ বার রোহিত আউট হয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। সবমিলিয়ে আইসিসি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল এবং ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের আগে অধিনায়কের অফফর্ম নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্তঃ নেই ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের।
ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দর শেবাগ এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন রোহিতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। এদিন শেবাগের সাথে সাক্ষাৎকারে আরো ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ এবং দক্ষিণ আফ্রিকান স্পিনার ইমরান তাহির।
শেবাগ বলেন, ‘রোহিতকে বোলাররা সমস্যায় ফেলছে কিংবা সে খেলতে পারছে না, ব্যাপারটা এমন নয়। আমার ধারণ রোহিতের রান না পাবার মূল কারণটা মানসিক। তাঁর ব্যাটিং টেকনিকে কোনো সমস্যা নেই। সে হয়তো কোনো কিছু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে ভুগছে। তবে সে যেদিন রানে ফিরবে, পুরনো সবকিছু ভুলিয়ে দেবে।’
রোহিতের অফফর্মের সুবাদে খানিকটা বিপাকে আছে আইপিএলে তাঁর দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সও। টপ অর্ডারের বাজে খেলার কারণে প্রায় প্রতি ম্যাচেই মুম্বাইকে নির্ভর করতে হচ্ছে তাঁদের মিডল অর্ডারের উপর। ফর্মহীন টপ অর্ডার আর ভঙ্গুর বোলিং লাইনআপ নিয়ে তাই দুশ্চিন্তার অন্ত নেই পাঁচবারের আইপিএল জয়ী দলটির। বর্তমানে পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বরে থাকলেও এখনো শেষ চার নিশ্চিত নয় দলটির।
অ্যারন ফিঞ্চ বলেন, ‘মুম্বাইয়ের ওপেনারদের অনেক বেশি দ্বিধাবিভক্ত লাগছে। তাঁরা বড্ড বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ক্রিকেট খেলছে, প্রতিটি বলেই বাউন্ডারি হাঁকানোর চেষ্টা করছে। তাঁদের রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের ব্যাটিং দেখে শেখা উচিত। রুতুরাজ মাঝের ওভারগুলো পর্যন্ত দেখে খেলে এবং বাজে বল মারার চেষ্টা করে।’
অন্যদিকে রোহিতের ফর্ম হারানোর দিনগুলোতে যেন নিজের স্বরূপে ফিরেছেন বিরাট কোহলি। স্ট্রাইকরেট নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকলেও প্রায় প্রতি ম্যাচেই রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিচ্ছেন কোহলি। এই মৌসুমে ইতোমধ্যেই ১১ ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ৪২০ রান।
ইমরান তাহির বলেন, ‘বিরাট কোহলির মাঝে সব সময়েই রান করার তাড়না ছিল। আপনি একবার, দুবার কিংবা সর্বোচ্চ তিনবার সেরা রানসংগ্রাহকের তালিকায় থাকতে পারেন। কিন্তু বিরাট সেই কাজটা বিগত ১৫ মৌসুম ধরেই করে চলেছে। সে অবিশ্বাস্য! তাঁর নিয়মিত রান করাতেই প্রকাশ পায় সে কতোটা পরিশ্রমী।’
বছরশেষের বিশ্বকাপে ভারতের ভালো করার অনেকটুকুই নির্ভর করবে কোহলি এবং রোহিতের উপর। নিজেদের দিনে এই দুই তারকা একাই ম্যাচের চিত্রনাট্য পাল্টে দেবার ক্ষমতা রাখেন। সেই কারণেই কিনা রোহিতের ফর্মে ফেরার অপেক্ষায় গোটা ভারতবাসী।