লিওনেল মেসির ভবিষ্যৎ গন্তব্য কোথায়? এ নিয়ে জল্পনা কল্পনা ছিল আগে থেকেই। তবে কিছুদিন আগে বার্তা সংস্থা এএফপি সেই জল্পনা কল্পনার এক প্রকার অবসানই ঘটিয়ে দিয়েছিল। তাদের দাবি, এরই মধ্যে মেসি সৌদি আরবের একটি ক্লাবের সাথে চুক্তি চূড়ান্ত করে ফেলেছে।
গত জানুয়ারি থেকেই মেসির আল-হিলালে যাওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। তাই অনেকেই মেসির ভবিষ্যৎ গন্তব্য হিসেবে আল-হিলালকেই ধরে নেয়।
যদিও এর কিছুক্ষণ বাদেই মেসির বাবা হোর্হে মেসি এএফপির করা পুরো খবরটিই মিথ্যা বানোয়াট বলে ইন্সটাগ্রামে একটি পোস্ট দেন। তারপরও, ঐ সংবাদের ভিত্তিতেই অনেকেই ভাবতে শুরু করেছিল, মেসি বুঝি এবার ইউরোপ ছেড়ে সৌদি আরবেই যোগ দেবেন।
কারণ বিশ্বকাপ চলাকালীন আরেক ফুটবল মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো সৌদি ক্লাব আল নাসরে যোগ দেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও বিশ্বকাপ শেষের মাস খানেকের মধ্যেই রেকর্ড পারিশ্রমিকে সেই ক্লাবেই অবশেষে তিনি যোগ দেন।
তাই মেসির বাবা হোর্হে মেসির এমন বিবৃতিও তেমন মন গলেনি ফুটবল অনুরাগীদের। তবে এবার যে ক্লাবকে নিয়ে এত গুঞ্জন সেই আল-হিলালই মেসির সাথে চুক্তির ব্যাপারে অস্বীকার করেছে। স্প্যানিশ গণমাধ্যম মুন্ডো দে পোর্তিভো জানাচ্ছে, মেসির সাথে এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি হয়নি সৌদি আরবের এ ক্লাবটির।
শুধু লিখিতই নয়, মৌখিকভাবেও দুই পক্ষের মধ্যে এখন পর্যন্ত চুক্তি নিয়ে কোনো ফলপ্রসূ আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছে আল-হিলাল। তবে মেসিকে তাঁরা দলে ভেড়াতে প্রস্তুত।
একই সাথে, মেসির সাবেক সতীর্থ সার্জিও বুস্কেটস, যিনি সম্প্রতি বার্সা ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন, তাকেও দলে ভেড়াতে মাঠে নামবে সৌদির এ ক্লাবটি।
বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসি পিএসজির সাথে আরো এক মৌসুম চুক্তির মেয়াদ বাড়াবেন, এমনটাই প্রথম দিকে শোনা যাচ্ছিল। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ১৬ থেকে বিদায়ের পরই মূলত পরিস্থিতির রদবদল ঘটে। এরপর থেকেই পিএসজি ও মেসির মধ্যে চুক্তি নিয়ে বিলম্ব ঘটে।
মূলত দুই পক্ষের কেউই সব শর্ত মেনে এক জায়গায় আসতে পারেননি। এর মধ্যে আবার কয়েকদিন আগে অনুমতি ছাড়া সৌদি আরব ভ্রমণ করায় মেসিকে দুই সপ্তাহের জন্য নিষিদ্ধ করে পিএসজি। পরে সতীর্থদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেন মেসি নিজেই।
আর এই ঘটনার পরই পিএসজির সাথে মেসির সম্পর্কের অবনতির গুঞ্জনে ডালাপালা মেলে। একটা খবর চাওর হয় যে, এই মৌসুম পরেই মেসি পিএসজি ছাড়বেন। আর এরপরেই মেসির ভবিষ্যৎ গন্তব্য নিয়ে ফুটবল অনুরাগীদের মাঝে একটা কৌতূহল তৈরি হয়।
মেসির সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে এখন পর্যন্ত ৩ টি ক্লাবের নাম শোনা যাচ্ছে। যেখানে তাঁর পুরনো ক্লাব বার্সেলোনার পাশাপাশি রয়েছে আল-হিলাল আর ইন্টার মায়ামি। অবশ্য মাস খানেক আগেও মেসির বার্সা ফেরার ব্যাপারে একটা জোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল।
তবে বার্সার আর্থিক দুরবস্থায় সেটি কতটা আশার আলো দেখবে, তা এক প্রকার অনিশ্চিতই। আর ইন্টার মায়ামি কাতার বিশ্বকাপ থেকেই মেসিকে দলে ভেড়াতে আগ্রহের কথা জানিয়েছিল। তবে মেসি বরাবরই ইউরোপে আরো কিছু সময় খেলার কথা জানিয়ে আসছিলেন। তাই ইন্টার মায়ামির থেকে আর আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাওয়া যায়নি।
অবশ্য সৌদি ক্লাব আল-হিলাল মেসিকে দলে ভেড়ানোর জন্য রীতিমত টাকা বস্তা নিয়ে প্রস্তুত। শোনা যাচ্ছে, ৪০০ মিলিয়ন ইউরোতে নাকি মেসিকে দলে নিতে প্রস্তুত সৌদি আরবের এ ক্লাবটি।
যে চুক্তিটি হলে মেসি হবেন এই সময়ের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ক্রীড়াবিদ। এখন দেখার পালা, এ মৌসুম শেষের মেসির ভাগ্যতরী তাঁকে কোথায় নিয়ে যায়। পিএসজি, বার্সা নাকি আল-হিলাল? এমন প্রশ্নের জট খুলতে অপেক্ষায় থাকতে হবে আরো কয়েকটা মাস।