পাকিস্তানের মিডল অর্ডার দুর্দশার সঙ্গী ফখর

অস্বীকার করার উপায় নেই, এখনো টি-টোয়েন্টিতে ‘অ্যাঙ্করিং’ গুরুত্বপূর্ণ একটা ট্যাকটিক্স। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের উইকেট একেবারে ব্যাটিংস্বর্গ হয় না, ফলে ব্যাটারদের মধ্যে কাউকে দায়িত্ব নিতে হয় লম্বা ইনিংস খেলার। আর সেজন্য শুরুতে তাঁকে যদি খানিকটা সময় দেয়া লাগে, সেটিও দেয়া হয়। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় যখন এমন ব্যাটারের সংখ্যা বেড়ে যায়।

পাকিস্তান ঠিক এমন সমস্যাতেই ভুগছে, এইতো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে বাবর আজমের পাশাপাশি ফখর জামানও মেতে উঠেছিলেন বড় রান করার নেশায়। সেটির প্রভাবে কমে গিয়েছিল রানের গতি, দারুণ একটা সূচনা পাওয়ার পরেও স্বাগতিকরা ১৮০ রানের গন্ডি স্পর্শ করতে পারেনি তার দায় ভার ফখরের উপরও বর্তায়।

এদিন ৩৩ বল খেলে ৪৩ রান করেছিলেন এই ব্যাটার। আপাতদৃষ্টিতে ১৩০ স্ট্রাইক রেট চলনসই মনে হতে পারে, তাছাড়া স্কোরকার্ড দেখে বাকি ব্যাটারদের সঙ্গে তুলনা করলে এমন ইনিংসকে খারাপ বলার সুযোগ নেই। কিন্তু তাঁর ব্যাটিংয়ের ব্যবচ্ছেদ করা হলেই বের হয়ে আসবে কঙ্কালসার মূর্তি।

চার নম্বর ব্যাটার হিসেবে ফখর যখন বাইশ গজে আসেন তখন দলীয় সংগ্রহ ছিল ৮.৫ ওভারে ৮১ রান, রান রেট নয়ের বেশি। অথচ বাবরের সঙ্গে তাঁর ৩৭ বলের জুটিতে রান এসেছে মোটে ৪২, যেখানে আবার তিনি করেছেন ১৮ বলে ১৫ রান! আউট হওয়ার আগে বেন সিয়ার্সকে খানিকটা তুলোধুনো করেছিলেন এই বাঁ-হাতি; তা নাহলে স্ট্রাইক রেট থাকতো একশর ঘরে – স্রেফ হতাশাজনক বলা যায়।

মাঝের ওভারে অবশ্য পাকিস্তানের সংগ্রাম করাটা নতুন কিছু নয়। টি-টোয়েন্টির মারকাটারি ক্রিকেটের সঙ্গে আসলে মানিয়ে নিতে পারেনি দলটির মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। পরিসংখ্যানও বলছে একই কথা, দেশটির টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে কেবল মাত্র শহীদ আফ্রিদি পেরেছিলেন ১৪০ এর বেশি স্ট্রাইক রেট ধরে রাখতে। অথচ বিশ্বসেরা দলগুলোতে এমন ব্যাটারের সংখ্যা অনেক অনেক বেশি।

হালের ইফতেখার আহমেদ, আজম খানরা সম্ভাবনার আলো দেখালেও বাস্তবে ব্যর্থ হয়েছেন নিদারুণ ভাবে। ফখরও ওপেনিং থেকে মিডল অর্ডারে এসে তাল মেলাতে পারছেন না আধুনিক টি-টোয়েন্টির সঙ্গে। পাকিস্তানের টপ অর্ডার তেমন বিধ্বংসী নয়, দ্রুত রান তোলার দায়িত্ব তাই বর্তায় পরের দিকের ব্যাটারদের; কিন্তু তাঁরাই উল্টো রান রেট কমিয়ে ফেলছে। যাতে করে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল থেকে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link