মিরাজ হ্যাজ ডান দ্য ট্রিক

ব্যাটিংয়ের চাপে যে বোলিংয়ের পরিচয়টা তিনি হারিয়ে ফেলেননি - সেটা বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই প্রমাণ করলেন তিনি। প্রতিপক্ষের রান আটকাতে বা উইকেট পেতে বোলিং বৈচিত্রে মরচে ধরেনি তাঁর।

পরিস্কার ব্যাটিং সহায়ক উইকেট। আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ একপ্রান্তে ভয়ংকর হয়ে উঠতে শুরু করেছিলেন। হাফ সেঞ্চুরির দুয়ারে পৌঁছে গেলেন। ঠিক ওই সময়ে দুইটা উইকেট মেইডেন। পরপর দুই ওভারে ফিরলেন দুই সেট ব্যাটার – গুরবাজ ও হাশমতউল্লাহ শাহীদি। ম্যাচে দারুণ ভাবে ফিরে আসল বাংলাদেশ দল।

প্রথম ১৫ ওভারে ৮৩ রান তোলা আফগানিস্তান পরের ১৫ ওভারে তুলল মাত্র ৪৩ রান। উইকেট গেল পাঁচটি। ধর্মশালার ব্যাটিং উইকেটে বড় রানের স্বপ্ন দেখিয়েও আফগানদের ইনিংস থেমে যায় সামান্যতেই। এখানে বড় একট ভূমিকা আসলে সাকিব আল হাসানের পাশে মেহেদী হাসান মিরাজেরও।

১৫ ওভার ওভারে প্রথমে আক্রমণে আসা মিরাজের শুরুটা ছিল বেশ খরুচে। প্রথম ওভারে হজম করেন নয়টি রান। তবে, এর বাকিটা বেশ দর্শনীয় ছিলেন মিরাজ। প্রথম ওভারে আসলে কিছুটা স্নায়ুচাপেও ভুগছিলেন মিরাজ।

ম্যাচের বিরতিতে বলেন, ‘প্রথম ওভারে আমি একটু নার্ভাস ছিলাম। তবে, অধিনায়ক সাকিব আমাকে ভরসা দেয়। বলে, আমি ভাল বল করতে পারবো।’

সাকিবের ওই কথাতেই বদলে যান মিরাজ। পরের আট ওভারে মাত্র ১৬ রান দেন মিরাজ। মানে ওভারপ্রতি মাত্র দু’টি করে রান। মেইডেন তিনটা। মিরাজ প্রতিপক্ষ আফগানদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পেরেছেন বলেই বাকিদের জন্য উইকেট পাওয়াটা সহজ হয়েছে।

এর মানে এই নয় যে, মিরাজ উইকেট পাননি। তিনি নিজেও নিয়েছেন তিনটি উইকেট। এর মধ্যে আলাদা করে বলতে হয় হাশমতউল্লাহ শাহীদির উইকেটের কথা। এই নিয়ে তৃতীয়বারের মত এই আফগান অধিনায়কের উইকেট পেলেন তিনি।

ধর্মশালায় এদিনও মিরাজের বিপক্ষে ধুকেছেন হাশমতউল্লাহ। মিরাজের বিপক্ষে ২২ বলে করতে পেরেছেন মাত্র তিন রান। এখানে অর্থটা স্পষ্ট। ‍শাহীদির ওপর নেমে আসা চাপটাই আসলে পুরো দলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে, যার ধারাবাহিকতায় আউট হয়ে গেছেন গুরবাজ কিংবা মোহাম্মদ নবীরা।

কালক্রমে অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা মিরাজ এখন ব্যাটিংয়ে বাড়তি দায়িত্ব নিচ্ছেন। নিয়মিত তাঁকে খেলতে হচ্ছে টপ অর্ডারে। তবে, ব্যাটিংয়ের চাপে যে বোলিংয়ের পরিচয়টা তিনি হারিয়ে ফেলেননি – সেটা বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই প্রমাণ করলেন তিনি। প্রতিপক্ষের রান আটকাতে বা উইকেট পেতে বোলিং বৈচিত্রে মরচে ধরেনি তাঁর।

সাকিব-মিরাজদের সাথে বাকি তিন পেসার মিলে নিয়েছেন বাকি চারটা উইকেট। সব মিলিয়ে পুরোটা সময় প্রতিপক্ষকে চাপেই রেখেছেন ‘ক্যাপ্টেন কুল’ সাকিব। বড় সম্ভাবনা দেখিয়েও আফগানিস্তান মাত্র ১৫৬ রান করতে পারে। ধর্মশালার ব্যাটিং স্বর্গে এই রানটা বাংলাদেশের জন্য কোনো বাঁধাই নয়।

সেই বাঁধাটা মিরাজ নিজেও কিছুটা কাটিয়ে দিয়েছেন। তিন নম্বরে নেমে খেলেছেন ৫৭ রানের ইনিংস। বিশ্বকাপটা তাহলে কি মেহেদী হাসান মিরাজের হতে যাচ্ছে? উত্তরের জন্য সময়ের অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...