টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দারুণ এক প্যাকেজ তিনি। ব্যাট, বল মিলে যেকোন দলে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা তাঁর আছে। ফলে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে রীতিমত হটকেক মঈন আলী। আইপিএলের মত লিগেও তাঁকে নিয়ে দলগুলো কাড়াকাড়ি করছে। এদিকে বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে মঈন আলীর ঝলক যেন থামছেই না।
মঈন আলী অলরাউন্ডার হলেও তাঁর ব্যাটিংটাই মূল শক্তি। কুমিল্লা দলটার ব্যাটিং লাইন আপের স্তম্ভ তিনি। ব্যাট হাতে এই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ম্যাচও জিতিয়েছেন। এছাড়া বোলিং অপশন হিসেবেও একেবারে মন্দ না। মিডল ওভারে কয়েকটা ওভার হাত ঘুরাতে পারেন, আবার উইকেটও এনে দেয়ার ক্ষমতা তাঁর আছে।
তবে আজ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে মঈন আলীকে দেখা গেল ভিন্ন চরিত্রে। আজ যেন পুরোদস্তুর বোলার হয়ে উঠলেন ইংল্যান্ডের এই ক্রিকেটার। তাঁর উপর আজ প্রত্যাশাও ছিল বেশি। তবে কুমিল্লাকে বল হাতে প্র্যাতাশার চেয়েও বেশি কিছু দিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। ম্যাচের শুরুতেই ভেঙে দিয়েছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ব্যাটিং লাইন আপ।
কোয়ালিফায়ারের মত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। এই ম্যাচের জয়ী দলই চলে যাবে ফাইনালে। বিপিএলের শক্তিশালী দল কুমিল্লার তাই এই ম্যাচ জেতাই চাই। ওদিকে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সও আছে দারুণ ছন্দে। তবে এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই নেই কুমিল্লার সেরা স্পিনার নাহিদুল ইসলাম। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে অসাধারণ বোলিং করেছেন। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিদের একজনও তিনি। অথচ আজ নাহিদুলকে ছাড়াই খেলতে নামে কুমিল্লা।
নাহিদুলের অনুপস্থিতিতে তাই বড় দায়িত্ব ছিল কুমিল্লার অন্য স্পিনারদের উপর। কুমিল্লার আরেক বড় নাম সুনীল নারাইনও খুব একটা ছন্দে ছিলেন না। ফলে বাড়তি চাপ ছিল লোকাল স্পিনার তানভীর ইসলাম ও মঈন আলীর উপর। আর এই বড় ম্যাচে পুরো দায়িত্বটা যেন নিজের কাঁধে তুলে নিলেন মঈন আলী।
আগে ব্যাট করতে নামা চট্টগ্রামের মূল ব্যাটসম্যান উইল জ্যাকস দ্রুত ফিরে গেলে চাপে পড়ে যায় চট্টগ্রাম। এরপর চ্যাডউইক ওয়ালটনও ফিরে যান দ্রুতই। তবে চট্টগ্রামের উপর আসল ঝড়টা তখনো আসা বাকি। ৫ ওভার শেষে ৪২ রান করা চট্টগ্রামের মিডল অর্ডার মঈন আলীর ঘূর্নিতে দিশেহারা হয়ে গেল।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে বল করতে এসে প্রথম স্বীকার হিসেবে তুলে নিলেন জাকির হাসানের উইকেট। তাঁর পরের বলেই আবার ফেরালেন শামীম পাটোয়ারীকে। এরপর দলের অধিনায়ক আফিফ হোসেন ও মিরাজের ব্যাটে চড়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছিল চট্টগ্রাম। তবে এরপরের ওভার করতে এসেই মঈন আলীর আরো এক উইকেট। এবার ফিরলেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক আফিফ হোসেন।
এছাড়া রানও খরচ করেছেন বেশ হিসেব করে। আজ তিন ওভার বোলিং করে দিয়েছেন মাত্র ২০ রান। তাঁর ইকোনমি রেট ছিল মাত্র ৬.৬৬। এছাড়া তুলে নিয়েছেন চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট। নিজের ১৮ বলের ১১ টিই দিয়েছেন ডট। কুমিল্লার স্পিন বোলিং আক্রমণের সবচেয়ে বড় অস্ত্র নাহিদুলের অভাব যেন বোধই করতে দিলেন না এই অলরাউন্ডার।