জলে বাঘ, ডাঙায় কুমির, টি-টোয়েন্টিতে নাঈম

৩০ বলে ১৫ রানের এক ইনিংস। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন কোন টেস্ট ইনিংস। তবে না, টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এই ইনিংস খেললেন নাঈম শেখ। তাও আবার বিপিএলের মত ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট চার, ছয়ের খেলা এই কথাটাকে যেনো সপাটে চড় মারলেন বাংলাদেশের এই ওপেনার। নাঈম শেখ বোঝালেন, টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও এতটা ধীরগতিতে খেলা যায়।

৩০ বলে ১৫ রানের এক ইনিংস। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন কোন টেস্ট ইনিংস। তবে না, টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এই ইনিংস খেললেন নাঈম শেখ। তাও আবার বিপিএলের মত ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট চার, ছয়ের খেলা এই কথাটাকে যেনো সপাটে চড় মারলেন বাংলাদেশের এই ওপেনার। নাঈম শেখ বোঝালেন, টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও এতটা ধীরগতিতে খেলা যায়।

আজ দিনের প্রথম ম্যাচে মিরপুরে মাঠে নেমেছিল মিনিস্টার ঢাকা ও সিলেট সানরাইজার্স। ঢাকার হয়ে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন নাঈম শেখ। বিপিএলের এই ম্যাচে ৩০ বলের লম্বা এক ইনিংস খেললেন নাঈম। একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, ১২০ বলের খেলা। সেখানে ২৫ শতাংশ বল একাই খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। তাও আবার ব্যাটিং করেছেন পাওয়ার প্লের সময়টাতে।

সেই ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩০ বল খেলে নাঈমের সংগ্রহ সর্বসাকুল্যে ১৫ রান। ব্যাটিং স্ট্রাইকরেট ৫০.০০। এরমধ্যে নেই একটিও বাউন্ডারির মার। ৩০ বলের ১৫ টিই দিয়েছেন ডট, আর বাকি ১৫ বলে নিয়েছেন ১৫ টি সিঙ্গেল। এভাবেই নিজের ইনিংসটিকে সাজিয়েছেন নাঈম।

তাঁর এই ইনিংসের পর ঢাকা অল আউট হয়েছে মাত্র ১০০ রানে। হয়তো মিরপুরের উইকেটের দোষ দেয়া যেতে পারে। তবে এই পিচেই তো অন্য ব্যাটসম্যানরাও ব্যাটিং করছেন। আন্দ্রে রাসেল, বেনি হাওয়েলরা এখানেও ঝড় তুলছেন। দূরে না যাই, নাঈমের দলের শুভাগত হোমও ১৩১.২৫ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন এই ম্যাচে।

নাঈম শেখ যে এই প্রথম এমন ধীরগতির ইনিংস খেললেন তা নয়। এর আগে বাংলাদেশও তাঁর এমন ইনিংসের কারণে ভুগেছে। বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও এমন মন্থর ইনিংস খেলেছেন নাঈম। তাঁর কারণে পাওয়ার প্লেতে ঝড়ো কোন শুরু পায় না বাংলাদেশ। ফলে ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে যাচ্ছে দল।

তবুও বাংলাদেশের হয়ে ৩২ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন নাঈম। হয়তো অন্য ব্যাটসম্যানদের তুলনায় খানিকটা ধারাবাহিক ছিলেন নাঈম। তবে তাঁর রান আসলে দলের কতটা উপকার করে সেটা নিয়ে আছে প্রশ্ন। ৩২ টি-টোয়েন্টি মক্স্যাচে ২৫.৬১ গড়ে তাঁর ঝুলিতে আছে ৭৯৪ রান। তবে একজন ওপেনার হয়েও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁর স্ট্রাইকরেট মাত্র ১০৫.০২।

অর্থাৎ পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই এমন ধীরগতির ব্যাটিং করেছেন নাইম শেখ। নাঈমের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল ভারতের বিপক্ষে। সেই সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে নিজের স্বভাবসুলভ ব্যাটিংই করেছেন। তবে তৃতীয় ম্যাচে মাত্র ৪৮ বলে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ৮১ রান। সেই ম্যাচে তাঁর স্ট্রাইকরেট ছিল ১৬৮.৭৫। সেটিই সম্ভবত তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় এবং একমাত্র বিজ্ঞাপন।

এরপর থেকে পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই খেলেছে ১০০ এর আশেপাশে স্ট্রাইকরেটে। কখনো কখনো সেটাও ছুতে পারেননি। ফলে পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে তাঁর স্ট্রাইক রেট দাঁড়িয়েছে টেনেটুনে ১০৫। যদিও বাংলাদেশ দলে ২০১৯ সালে নাঈম শেখ জায়গা পেয়েছিলেন ডিপিএলে পারফর্ম করে। সেখানে ২০১৯ সালে ৫০ এর বেশি গড়ে রান করেছিলেন। ঝুলিতে ছিল তিনটি সেঞ্চুরিও।

তবে ওয়ানডে ফরম্যাটে নিজেকে প্রমাণ করার পর বাংলাদেশ নাঈম শেখকে ব্যবহার করলো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে লম্বা সময় বাংলাদেশের হয়ে ওপেন করার পর তাঁর ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল। তবে কখনোই নিয়মিত হতে পারেননি।

এখন আবার তাঁকে টেস্ট ক্রিকেটে ব্যবহার করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিছুদিন আগেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেট অভিষিক্ত হন নাঈম। আসলে নাঈমকে বাংলাদেশ কোন ফরম্যাটে ব্যবহার করতে চায় সেই প্রশ্নও তোলা উচিৎ। কিংবা আদৌ ব্যবহার করতে চায় কিনা সে প্রশ্নও তো এড়িয়ে  যাওয়া যায় না।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...