বিশ্বকাপের মঞ্চে ১১ ম্যাচে ৩১ উইকেট! তারপরও এবারের বিশ্বকাপের প্রথম চার ম্যাচে ভারতের একাদশে জায়গায় মেলেনি মোহাম্মদ শামির। তবে পঞ্চম ম্যাচে এসে প্রথম সুযোগটা যেন দু’হাত ভরেই লুফে নিলেন এ পেসার।
এক, দুই কিংবা ৩ উইকেট নয়, ধর্মশালায় এ দিন গুণে গুণে ৫ কিউই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন শামি। আর তাতেই ভারতের হয়ে দুটি বিশ্বকাপে ফাইফারের কীর্তি গড়লেন এই পেসার। শুধু তাই নয়, বিশ্বকাপের উইকেট সংখ্যায় এ দিন তিনি টপকে গেলেন অনিল কুম্বলেকে। বৈশ্বিক এ আসরে অনিল কুম্বলের ঝুলিতে আছে ৩১ টি উইকেট।
আর ৩ বিশ্বকাপের ১২ টি ম্যাচে ৩৬ টি উইকেট নিয়েছেন শামি। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে এখন শুধু তাঁর সামনে রয়েছেন দু’জন, জহির খান ও জাভাগাল শ্রীনাথ। এ দুই পেসারই বিশ্বকাপে ৪৪ টি করে উইকেট নিয়েছেন।ধর্মশালায় এ দিন নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের শুরুর আঘাতটা হেনেছিলেন মোহাম্মদ সিরাজ।
তবে পরের গল্পটা লিখেছেন মোহাম্মদ শামি। ২৭ বলে ১৭ রানে ব্যাট করতে থাকা উইল ইয়ংকে বোল্ড করেন তিনি। তবে এরপরে লম্বা একটা সময় ধরে ভারতীয় ফিল্ডারদের হতাশায় ভাসিয়েছে রাচিন-মিশেল জুটি। তাদের ১৫৯ রানের জুটিতে খেলার মোমেন্টামই এক রকম ঝুঁকে যায় নিউজিল্যান্ডের দিকে।
তবে ৩৪তম ওভারে এসে এই জুটি ভেঙে ভারত শিবিরে স্বস্তি ফেরান সেই শামিই। শামির অফকাটারের ছক্কা হাঁকাতে গিয়েছিলেন রাচিন রবীন্দ্র। তবে শেষমেশ বলটাকে আর বাউন্ডারি ছাড়া করতে পারেননি। শুভমান গিলের তালুবন্দী হন তিনি। আর এই উইকেটের পরই ম্যাচে দুর্দান্ত ভাবে ফিরে আসে ভারত।
স্লগ ওভারে আরো আক্রণাত্মক বোলিং শুরু করেন শামি আর বুমরাহ। এর ফলও হাতেনাতে পায় ভারত। নিউজিল্যান্ডের শেষ ৫ উইকেট তাঁরা তুলে নেয় মাত্র ৩০ রানে। এর মধ্যে মোহাম্মদ শামি নিজের শেষ ২ ওভারেই নেন ৩ উইকেট। ৪৮তম ওভারে মিশেল স্যান্টনার ও ম্যাট হেনরি বোল্ড হন পরপর ২ বলে।
ফলত তখন হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন শামি। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তবে নিজের শেষ ওভারে এসে সেঞ্চুরি করা মিশেলকে থামিয়ে দেন তিনি। যে উইকেটের মাধ্যমে তিনি পৌঁছে যান ফাইফারে। শেষ পর্যন্ত নিজের বোলিং ফিগার শেষ করেন ১০ ওভারে ৫৪ রানে ৫ উইকেট প্রাপ্তির মাধ্যমে। যা বিশ্বকাপে তাঁর সেরা বোলিং ফিগার।
অবশ্য এ দিন হ্যাটট্রিক মিস হলেও বিশ্বকাপে কিন্তু হ্যাটট্রিকের কীর্তি রয়েছে শামির। এর আগে ২০১৯ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি। চেতন শর্মার পর যা ছিল দ্বিতীয় ভারতীয় বোলার হিসেবে বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক করার রেকর্ড।
বেঞ্চ থেকে ফিরে এসে ফাইফার। তার চেয়েও উল্লেখযোগ্য ব্যাপার, ভারতের হয়ে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট এখন তাঁর। এই বিশ্বকাপ দিয়েই হয়তো শীর্ষে পৌঁছাতে চাইবেন শামি। এখন পর্যন্ত ১২ ম্যাচে ৩৬ উইকেট নেওয়ার শামির জন্য নিশ্চয়ই আর ৯ টি উইকেট নেওয়া দুঃসাধ্যকর কিছু হবে। কারণ পরবর্তী ম্যাচ গুলোতে শামি একাদশে থাকলে, এখনও ন্যূনতম ৫ টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন এ পেসার।