ক্যাপ্টেন লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট

টেস্টে ক্রিকেট একজন খেলোয়াড়ের ধৈর্য্য, সক্ষমতা, দক্ষতা এসবকিছুর পরিমাপক। এখানে প্রতিটা পা ফেলতে হয় বুঝে শুনে। আর আপনি যদি হন অধিনায়ক তবে আপনার উপর দায়িত্ব থাকে খানিক বেশি। বোলার কিংবা ব্যাটার অধিনায়কের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজের সে খেলোয়াড় সত্ত্বার যথাযথ বহি:প্রকাশ ঘটাতে ক’জনই বা পারে।

তবে যারা পারেন তাঁরা ইতিহাস হয়ে রয়ে যান। ক্রিকেটে চিরকাল অমরত্ব লাভ করে ফেলেন নিজেদের অনবদ্য, দূর্দান্ত, অসাধারণ পারফরমেন্স দিয়ে। এমন কিছু অধিনায়ক ব্যাটারদের নিয়ে থাকছে আজকের আলোচনা। যারা কিনা অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করার চাপটা সামলে ব্যাট হাতে ছিলেন উজ্জ্বল।

  • গ্রায়াম স্মিথ (দক্ষিণ আফ্রিকা)

দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সফল অধিনায়ক গ্রায়াম স্মিথ একটা লম্বা সময় ছিলেন অধিনায়কের দায়িত্বে। ২০১৩ থেকে ২০১৪ এ সময়কালে ছিলে প্রোটিয়া টেস্ট দলের অধিনায়ক।

নেতৃত্বের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে তিনি খেলেছেন ১০৯টি টেস্ট ম্যাচ। ৪৭.৮৩ গড়ে রান করেছেন ৮৬৫৯ রান। ২৫টা শতকের পাশাপাশি ৩৬টা অর্ধশতক করেছেন তিনি তাঁর অধিনায়কত্বের সময়কালে।

  • অ্যালান বোর্ডার (অস্ট্রেলিয়া)

দশ বছর অস্ট্রেলিয়ার মত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন অ্যালান বোর্ডার। ১৯৮৪-৯৪ এই সময়ে তিনি ৯৩টি টেস্ট ম্যাচে অজিদের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

১৫৪টি ইনিংস তিনি ব্যাট হাতে বাইশ গজে নেমে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংকে সহয়তার করার চেষ্টা করেছেন। তাতে তিনি সফল হয়েছেন বলাই যায়। ৬৬২৩ রান রয়েছে তাঁর নামের পাশে। সে সাথে ১৫টি সেঞ্চুরি ও গ্রায়াম স্মিথের সমান ৩৬টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে বোর্ডারের।

  • রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে রিকি পন্টিং একজন কিংবদন্তি অধিনায়ক এবং ব্যাটার দু’টো রুপেই থাকবেন চির অমলিন। তিনি ২০০৪-১০ এই ছয় বছরের মেয়াদকালে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

তাঁর নেতৃত্বে ৭৭টি টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছিল অজিরা। তবে পন্টিং ১৪০টি ইনিংসে ব্যাট হাতে নামতে পেরেছিলেন। মিডল অর্ডারে ভরসার হাত পন্টিং ৫১.৫১ গড়ে রান করেছেন ৬৫৪২। ৩৫টি হাফ সেঞ্চুরির বিপরীতে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে দেখেছেন ১৯ বার।

  • বিরাট কোহলি (ভারত)

এইতো ক’দিন আগেই একে একে ভারত জাতীয় দলের তিন ফরম্যাটে টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলেন বিরাট কোহলি। সর্বশেষ তিনি সাদা পোশাকে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার কঠিন কাজটার ইস্তফা দেন।

অবশ্য এর আগে তিনি ৬৮ ম্যাচে অধিনায়ক হিসেবে টসে অংশ নিয়েছেন ভারতের হয়ে। এ সময়ে তাঁর ব্যাটও চলেছে সমানতালে। ২০১৪-২২ এ সময়ে টেস্ট ক্রিকেটে ২০ খানা শতক ও ১৮টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন বিরাট কোহলি। তাঁর ব্যাট থেকে ৫৪,৮০ গড়ে রান এসেছে ৫৮৬৪। তাঁর গড় আজকের তালিকার সর্বাধিক।

  • জো রুট (ইংল্যান্ড)

ব্যর্থতার দায়ভার কাঁধে নিয়ে টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিয়েছেন জো রুট। ২০১৭-২২ এই পাঁচ বছরের তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে ৬৪টি টেস্ট ম্যাচে দলনেতার দায়িত্ব পালন করেছেন। সাফল্য খুব বেশি ধরা দেয়নি, ২০২১ সালটা তো কেটেছে যাচ্ছেতাই ভাবে।

তবে অধিনায়ক হিসেবে ব্যর্থ হলেও জো রুট ব্যাটার হিসেবে ছিলেন দারুণ সফল। ২০২১ সালে টেস্টে সর্বাধিক রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। তাছাড়া অধিনায়ক হিসেবে ৬৪ ম্যাচে তিনি ৪৬.৪৪ গড়ে রান করেছেন ৫২৯৫।  পেয়েছেন ১৪টি শতকের দেখা পেয়েছেন, সে সাথে ২৬টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন জো রুট। 

এই তালিকায় থাকা প্রত্যেকে অধিনায়ক হিসেবে সফল হয়েছেন কিংবা ব্যর্থতা ছুঁয়ে গেছে তাদেরকে তবে অধিনায়কের দায়িত্ব তাঁদের ব্যাটিংকে প্রভাবিত করতে পারেনি। তাঁরা সবাই তাঁদের ব্যাটিং সমর্থ্যের সর্বোচ্চটুকু প্রদর্শন করে গেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বনেদি ফরম্যাটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link