অধিনায়ক মানেই দলের গুরুদায়িত্ব কাঁধে নেওয়া একজন। যেকোনো পরিস্থিতিতেই নার্ভ ধরে রেখে ম্যাচ বের করে আনতে অধিনায়কের ভূমিকাই মূখ্য। নিজের সেরা অস্ত্র ব্যবহার করে ম্যাচ জয় করাটাই একজন অধিনায়কের সাফল্য। ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত বহু অধিনায়ক দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। এর মধ্যে সেরা কে তা নিয়ে প্রায়সই চলে ব্যাপক আলোচনা। আমাদের আজকের আলোচনাটাও এই বিষয়ে।
কমপক্ষে ৫০ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা ক্রিকেটারদের হার-জিতের অনুপাত বিবেচনায় নিয়ে সেরাদের একটা তালিকা করা হল। যারা জায়গা পেয়েছেন তাঁদের সবাই কম বেশি অধিনায়ক হিসেবে কিংবদন্তি।
- মাইকেল ক্লার্ক (অস্ট্রেলিয়া)
সাত বছরের ক্যারিয়ারে অজিদের হয়ে ৭৪ ওয়ানডেতে অধিনায়কত্ব করেন সাবেক অজি অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। ২০১৫ বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়কের হাত ধরে অজিরা জয় পেয়েছে ৫০ ওয়ানডেতে।
বাকি ২৪ ম্যাচে ২১ হার আর বাকি ৩ ম্যাচ পরিত্যক্ত। জয়ের হার ৭০.৪২ শতাংশ! হার-জিতের অনুপাত হিসেবে জয়ের হার ২.৩৮০। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অধিনায়ক হিসেবে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ জয় করেন তিনি।
- বিরাট কোহলি (ভারত)
সম্প্রতি ওয়ানডে অধিনায়কত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ভারতের বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে। ভারতের হয়ে রঙিন জার্সিতে ৯৫ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেন তিনি। এই ৯৫ ম্যাচে ভারত জয় পেয়েছে ৬৫ টিতে এবং হেরেছে ২৭ ম্যাচ! ১ টাই ও ২ ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
অনুপাত হিসেবে বিরাট ২.৪০৭ হারে ম্যাচ জিতেছেন অধিনায়ক হিসেবে। ভারতের হয়ে যেকোনো অধিনায়কের এটিই সেরা জয়ের হার। বাকি অধিনায়ক থেকে তবুও তিনি পিছিয়ে থাকবেন কোনো আইসিসি ট্রফি জিততে না পারার কারণে।
- হ্যান্সি ক্রনিয়ে (দক্ষিণ আফ্রিকা)
সাবেক প্রোটিয়া গ্রেট হ্যান্সি ক্রনিয়ে অধিনায়ক হিসেবেও ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সেরা একজন। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ১৩৮ ওয়ানডেতে ৯৯ ম্যাচে জয় পায় ক্রনিয়ে। ৩৫ ম্যাচে হার, ১ টাই ও ৩ ম্যাচ পরিত্যক্ত হয় ক্রনিয়ের আমলে। জয়ের হার ৭৩.৭০ শতাংশ।
ক্রনিয়ের অধীনে দক্ষিণ আফ্রিকা গড়ে ২.৮২৮ ম্যাচ পর এক ম্যাচে হেরেছে! বলতে গেলে দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে সফল অধিনায়কও তিনি। তাঁর অধীনেই দলটি নিজেদের ইতিহাসে একমাত্র আইসিসি ট্রফি জয় করে।
- রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া)
তর্কযোগ্যভাবে সর্বকালের সেরা অধিনায়ক হিসেবে রিকি পন্টিংকেই বিবেচনা করা হয়। অধিনায়ক হিসেবে তিনি ২০০৩ ও ২০০৭ – দু’টো বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করেন। ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৩০ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেন পন্টিং। ১৬৫ জয় আর ৫১ হারের পাশাপাশি ২ ম্যাচ টাই ও ১২ ম্যাচে পরিত্যক্ত হয়।
জয়ের হার ৭৬.১৪ শতাংশ! হার-জিতের অনুপাত বিবেচনায় নিলে গড়ে এক ম্যাচ হারার বিপরীতে তিনি ৩.২৩৫ ম্যাচে জয় পেয়েছেন। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটারই নন, অন্যতম সফল অধিনায়ক হিসেবেও পন্টিং নিজেকে রেখে গেছেন ২২ গজের ইতিহাসে।
- ক্লাইভ লয়েড (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
দশ বছরের ক্যারিয়ারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ওয়ানডের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক ছিলেন ক্লাইভ লয়েড। ক্রিকেট ইতিহাসেও তিনি অন্যতম সেরা অধিনায়ক, জিতেন টানা দু’টো বিশ্বকাপের শিরোপা। যে যুগটায় ২২ গজে ক্যারিবিয়ানরা ত্রাশ করেছিলো সেসময়ের বেশিরভাগটাই অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন লয়েড।
ওয়ানডেতে ৮৪ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করে জয় পেয়েছেন ৬৪ ম্যাচ! ১৮ হার ছাড়া আছে ১ টাই ও ১ পরিত্যক্ত ম্যাচ। জয়ের হার ৭৭.৭১ শতাংশ! প্রতি ম্যাচ হারের বিপরীতে জয় পেয়েছেন ৩.৫৫৫ ম্যাচে! যা ক্রিকেট ইতিহাসে যেকোনো অধিনায়কের মধ্যে সেরা!