দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঠিক পাঁচ বছর পর আবারও মাঠে গড়াচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বলা হয় টি-টোয়েন্টি নাকি শুধুই ব্যাটসম্যানদের খেলা। চার-ছয়ের বন্য দেখতেই নাকি বেশি আগ্রহী দর্শকর। ব্যাটসম্যানরা প্রতি ম্যাচেই খুলে বসেন রানের ফুলঝুড়ি। নানা রকম শটে জমে ওঠে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট তো নি:সন্দেহে ব্যাটসম্যানদের খেলা। তবে, ব্যাটসম্যানদের এই ফরম্যাটেও কয়েকজন বোলার নিজেদের জাত চিনিয়েছেন। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বল হাতে নিজেদের সেরাটাই নিঙরে দিয়েছেন তাঁরা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিদের নিয়েই এই তালিকা। মজার ব্যাপার হল, ছয় জনের এই তালিকায় সবাই উপমহাদেশীয় ক্রিকেটার।
- উমর গুল (পাকিস্তান)
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাকিস্তানের সফলতম বোলারদের একজন উমর গুলো। বিশ্বকাপেও বল হাতে পাকিস্তানের অগ্রগামী সৈনিক ছিলেন উমর গুল। বিশ্বকাপের প্রথম আসর থেকেই পাকিস্তানের হয়ে খেলেছেন এই পেসার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পঞ্চম সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হয়ে মোট ২৪ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন উমর গুল। সেখানে উমর গুলের ঝুলিতে আছে ৩৫ টি উইকেট। বোলিং করেছেন ১৭.২৫ গড়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁর ইকোনমি রেট ৭.৩০। বিশ্বকাপে একবার চার উইকেট ও একবার পাঁচ উইকেট ও নিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপে একবার মাত্র ৬ রান দিয়েই ৫ উইকেট নিয়েছিলেন এই পেসার।
- অজন্তা মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা)
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার বেশ কার্যকর বোলার ছিলেন অজন্তা মেন্ডিস। দেশটির হয়ে ৩৯ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে আছে ৬৬ উইকেট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসেও সফলতম বোলারদের একজন তিনি।
বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার হয়ে মোট ২১ টি ম্যাচ খেলেছে অজন্তা মেন্ডিস। সেখানে উমর গুলের সমান ৩৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপে মেন্ডিসের বোলিং গড় ছিল মাত্র ১৫.০২। বিশ্বকাপে ৬ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেয়ার কীর্তিও আছে তাঁর। এছাড়া বিশ্বকাপে তাঁর ইকোনমি রেট ৬.৭০।
- সাঈদ আজমল (পাকিস্তান)
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আরেক সফল বোলারদের একজন সাঈদ আজমল। পাকিস্তানের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের হয়ে তাঁর ঝুলিতে আছে ৮৫ উইকেট। এছাড়া বিশ্বকাপেও পাকিস্তানের অন্যতম সফল বোলার তিনি।
সাঈদ আজমল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হয়ে খেলেছেন ২৩ টি ম্যাচ। সেখানে প্রায় ৯০ ওভার বল করে তাঁর ঝুলিতে আছে ৩৬ টি উইকেট। বিশ্বকাপে তাঁর বোলিং গড় ১৬.৮৬ এবং স্ট্রাইক রেট মাত্র ১৪.৮। বিশ্বকাপে আজমলের ইকোনমি রেট ৬.৭৯। এই আসরে তিনবার ৪ উইকেটও নিয়েছেন তিনি।
- লাসিথ মালিঙ্গা (শ্রীলঙ্কা)
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম বোলারের নাম লাসিথ মালিঙ্গা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হিসেবে। এছাড়া বিশ্বকাপের শ্রীলঙ্কার সফলতম বোলার তিনি। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক এই কিংবদন্তি পেসার।
শ্রীলঙ্কার হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মোট ৩১ টি ম্যাচ খেলেছেন এই পেসার। দেশটির হয়ে ২০১৪ সালে বিশ্বকাপও জিতেছিলেন তিনি। এই আসরে তাঁর ঝুলিতে আছে মোট ৩৮ টি উইকেট। বিশ্বকাপে একবার ৫ উইকেটও নিয়েছেন তিনি। বোলিং করেছেন ২০.০৭ গড়ে। এছাড়া তাঁর ইকোনমি রেট ছিল ৭.৪৩।
- শহীদ আফ্রিদি (পাকিস্তান)
পাকিস্তানের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন শহীদ আফ্রিদি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে কার্যকর ক্রিকেটারদের একজন তিনি। ব্যাট-বল দুই ডিপার্টমেন্টের পাকিস্তানকে সার্ভিস দিয়েছেন। বিশ্বকাপেও পাকিস্তানের সেরা বোলার তিনি। বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেট শিকার পাকিস্তানের এই লেগ স্পিনার।
আফ্রিদি পাকিস্তানের হয়ে ৩৪ টি ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৩৯ উইকেট। বোলিং করেছেন ২৩.২৫ গড়ে এবং বিশ্বকাপে তাঁর ইকোনমি রেট ৬.৭১। বিশ্বকাপে দুইবার ৪ উইকেট নেয়ার কীর্তিও আছে তাঁর।
- সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)
এই তালিকায় থাকা একমাত্র সাকিবই খেলেছেন সবগুলো বিশ্বকাপ। আর বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই বোলার আছেন এই তালিকায় সবার ওপরে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে মোট ৩১ টি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব।
সেখানে ৪১ টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। রান দিয়েছেন ওভার প্রতি সাড়ে ছয়ের কম রেটে। এর মধ্যে এক ইনিংসে এক নয় রান দিয়ে নেন চার উইকেট। সেটাই বিশ্বকাপে তাঁর সেরা বোলিং ফিগার। মোট তিনবার তিনি চারটি করে উইকেট নিয়েছেন।