এশিয়া কাপের দল ঘোষণার পর থেকেই ক্রিকেট প্রেমীদের আলাপ আলোচনার অনেকটা জুড়েই আছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারকে বাদ দেয়া নিয়ে অনলাইন, অফলাইনে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন প্রায় সবাই। মুশফিকুর রহিমের স্ত্রীও নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে মাহমুদউল্লাহর পক্ষে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
কিন্তু মজার ব্যাপার, টিম ম্যানেজম্যান্টের পরিকল্পনা থেকে মাহমুদউল্লাহর বাদ পড়ার পেছনে অবদান আছে মুশফিকুর রহিমেরও। আপনি হয়তো ভাবছেন কিভাবে, যদিও সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দলের খোঁজ খবর রাখলে উত্তরটা জানা থাকারই কথা।
মূলত এই বছর মাহমুদউল্লাহর রেখে যাওয়া ছয় নম্বর পজিশনে ব্যাটিং করেছিলেন মুশি, আর তিনি যেভাবে পারফর্ম করেছেন এরপর আর রিয়াদকে নিয়ে ভাবার সুযোগ থাকেনি। ২০১৯ বিশ্বকাপের সময় ছয় নম্বরে ব্যাটিং করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তারপর থেকে কখনোই সাত নম্বরে নামেননি তিনি।
গত তিন বছরে ছয় নম্বরে খেলে ৮৭৮ রান করেছেন এই ডানহাতি; গড়টাও বলার মত, ৪৮.৭৮। কিন্তু সমস্যা স্ট্রাইক রেটে, লোয়ার মিডল অর্ডারে যেই গতিতে রান তোলা দরকার সেটা করতে পারছিলেন না রিয়াদ।
তাই তো বিকল্প হিসেবে মুশফিকুর রহিমকে ছয় নম্বরে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেন হেডকোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে লোয়ার মিডল অর্ডারে নিয়মিত খেলা শুরু করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
প্রথম ম্যাচে ২৬ বলে ৪৪ রানের ক্যামিও খেলার পরের ম্যাচেই মাত্র ৬০ বলে ঝড়ো সেঞ্চুরি করেন মুশফিকুর রহিম, যা এখন পর্যন্ত ওয়ানডে ফরম্যাটে টাইগারদের দ্রুততম শতক। এরপর আইরিশদের বিপক্ষে আবারো মুখোমুখি হয় টিম বাংলাদেশ, প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে ৭০ বলে ৬১ রানের সময়োপযোগী ইনিংস আসে মুশির ব্যাট থেকে।
দ্বিতীয় ম্যাচে টানটান উত্তেজনার মাঝে স্নায়ু ধরে রেখে বাংলাদেশকে দারুণ এক জয় এনে দেন মুশফিকুর রহিম। পরের ম্যাচেও করেছেন ৪৫ রান। আফগানিস্তানের বিপক্ষেও দল যখন মাঠ ও মাঠের বাইরে বিশৃঙ্খল সময় কাটাচ্ছিল মুশফিক তখনও রান করে গিয়েছেন।
সব মিলিয়ে এই ডানহাতি দারুণ সফল হয়েছিলেন নিজের নতুন পজিশনে, তাই তো ছয় নম্বরে আর মাহমুদউল্লাহকে বিবেচনা করেনি নির্বাচকরা। বিকল্প হিসেবে মাহমুদউল্লাহকে যে সাত নম্বরে সুযোগ দেয়া হবে সেটারও কারণ নেই।
কেন না সাত নম্বরেও রেকর্ড ভাল নয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। পুরো ক্যারিয়ারে এই জায়গায় মাত্র ৭৭.৩০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন তিনি। বলাই যায়, এই পজিশনে কখনোই তিনি সেরা পছন্দ ছিলেন না।
অন্যদিকে, ছয় নম্বরে এমন একজন ব্যাটসম্যানকে দরকার ছিল যিনি ডট বল কম দিয়ে স্ট্রাইক রোটেট করবে। সেই সাথে বাজে বল গুলোকে বাউন্ডারিতে পাঠাবে। মুশফিকুর রহিম ঠিক সেই কাজটাই করেছেন, একেবারে নিখুঁত ভাবে।
তাই তো বলা যায়, রিয়াদের জায়গা নিয়েছেন আসলে মুশফিকুর রহিম। আরো স্পষ্ট করে বললে মুশফিককে রিয়াদের জায়গাটা বুঝিয়ে দিয়েছেন স্বয়ং হাতুরুসিংহে।