মুশি এখন মাস্টার শিফু

কখনও তাসকিনকে শেখাচ্ছেন, তো আবার কখনও শেখাচ্ছেন জাকের আলীকে।

কখনও তাসকিনকে শেখাচ্ছেন, তো আবার কখনও শেখাচ্ছেন জাকের আলীকে। তিনি নিজে অবশ্য প্রতিনিয়ত শিখেই চলেছেন। মুশফিকুর রহিম নিজের দীর্ঘ পথচলার অভিজ্ঞতা নিঙড়ে দিচ্ছেন অনুজদের মাঝে। শেখার কোন শেষ নেই ব্রত নিয়ে প্রতিনিয়ত অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম।

সময়ের হিসেবে প্রায় ১৯ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গনে। তবুও অনুশীলনে নিবেদনের অভাব নেই। কাউকে মাঠে না পাওয়া গেলেও মুশফিকের উপস্থিতি সর্বদাই থাকে। চলার পথে নিজে কতকিছু শিখেছেন। সেসব এখন সতীর্থদের মাঝে বিলিয়ে দিচ্ছেন তিনি।

টেলএন্ডার ব্যাটারদের ব্যাটিংটাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তাসকিন আহমেদ সেই গুরুত্ব উপলব্ধি করেছেন অনেক আগেই। টেস্ট ক্রিকেটে টেলএন্ডারদের সাথে নিয়েও যে দুর্দান্ত কিছু করে ফেলা যায়, সেই উদাহরণ তো পাকিস্তান টেস্টেই করে দেখিয়েছেন লিটন দাস।

ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে অনুশীলনে নিজেকে ঝালিয়ে নিচ্ছেন তাসকিন। মুশফিকের সাথে একই নেটে ব্যাটিং করেছেন। তাসকিনের ডিফেন্সে খানিক ভুল চোখে পড়ে মুশফিকের। অভিজ্ঞ মুশফিক তাই তো সতীর্থকে সঠিক পথটা বলে দিলেন। তাসকিন তার ডান পা খুব বেশি প্রসারিত করে ফেলেন। তাতে করে এডজ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সেই সাথে ব্যালেন্স হারিয়ে স্ট্যাপিং হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায় স্পিনারদের বিপক্ষে।

তাই তো তাসকিনকে লেন্থ বুঝে পা প্রসারিত করবার টোটকা দিলেন মুশফিক। গুড লেন্থের বলকে একটু শরীরের কাছ থেকে খেলার পরামর্শ দিয়েছেন। যাতে করে এড়ানো যায় আউটের সম্ভাবনা। এরপর আবার নিজের কাজেই মন দিয়েছেন মুশফিক।

তার সবচেয়ে পছন্দের শট, সুইপ শট। সেটাকেও ঝালিয়ে নিয়েছেন মুশফিক। তারপর সুযোগ পেয়েই তার কাছ থেকে জাকের নিলেন দীক্ষা। তাকে ব্যাটিংয়ের কিছু দিকও বলে দিলেন। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছেন জাকের। প্রথমবারের মত টেস্ট স্কোয়াডে যুক্ত হয়েছে তিনি। সম্ভাবনা রয়েছে একাদশে সুযোগ পাওয়ার।

ভারতের বোলিং লাইন আপের বিপক্ষে একজন অতিরিক্ত ব্যাটার হয়ত প্রয়োজন হবে বাংলাদেশের। সেকারণেই তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় স্কোয়াডে। তাইতো জাকের যতটুকু শেখার সময় পাচ্ছেন, ব্যবহার করছেন। মুশফিকেরও অবশ্য তাতে কোন ক্লান্তি নেই। প্রায় দুই ঘন্টা ধরে নিজে ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন। এরপরও ক্লান্তিহীন ভাবে জাকেরের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।

এখানেই মুশফিকদের বোঝা উচিত, তাদের গুরুত্ব ঠিক কতটুকু। খেলোয়াড়ি জীবন শেষেও যে তাদের দেশের ক্রিকেটকে দেওয়ার আছে অনেক কিছুই। তা নিয়ে মুশফিকদের ভাবার সময় এসে গেছে।

Share via
Copy link