ছয় ছয়টি উইকেট শিকার। খরচ মাত্র ১০ রান। বেশ পুলকিত হওয়ার মত এক বোলিং ফিগার। অন্য যেকোন সময় হলে নিশ্চিত উচ্ছ্বাসের একটা বন্যা বয়ে যেত। মুস্তাফিজুর রহমানকে ঘিরে লেখা হয়ে যেত বিশাল সব কাব্যিক রচনা। পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। তাই বলে রচনা না হোক এক খণ্ড অনুচ্ছেদ অন্তত লেখা হবে।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটিং অর্ডার একাই ধসিয়েছেন তিনি। ম্যাচটা যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে যতটা না গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশের জন্যে। কেননা চোখের সামনেই অবস্থান করছিল হোয়াইটওয়াশের মত লজ্জা। তাও আবার শক্তিমত্তায় বেজায় পিছিয়ে থাকা এক দলের বিপক্ষে।
সিরিজ ইতোমধ্যেই খুইয়ে বসে আছে বাংলাদেশ। মার্কিন ক্রিকেট দলের এটাই যে এখন পর্যন্ত ইতিহাস সেরা প্রাপ্তি। উচ্চাভিলাষী হতে চায়নি যেন যুক্তরাষ্ট্র। তাইতো তারা সিরিজ জয়ী দলের চারজনকে বিশ্রাম দিয়েছে এদিন। প্রস্তুতি সিরিজে বেঞ্চের খেলোয়াড়দের বাজিয়ে দেখার এর থেকে ভাল সুযোগ সম্ভবত আর হতে পারে না। সেটাই করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ তাদের ইতিবাচক ও দৃঢ় মানসিকতার প্রমাণই দিয়েছে বটে। তবে বাংলাদেশকে মার্কিনিদের চেপে ধরতেই হতো। অন্তত শেষ ম্যাচটায় একটা দাপুটে জয় পেতেই হত বাংলাদেশকে। চারিদিকে যে সমালোচনার তীব্র ঝড় বয়ে যাচ্ছে সে ঝড়ের মাঝে টিকে থাকার খুটি হতে পারে একটি জয়।
সে বিষয়টি ভালভাবেই আন্দাজ করতে পেরেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। তাইতো তিনি আমেরিকার ব্যাটারদের কোনরকম বাড়তি সুবিধাই নিতে দেননি। নিজের অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে কাবু করেছেন ৬জন ব্যাটারকে। নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মত ফাইফার তুলে নেন মুস্তাফিজুর রহমান।
তার করা ১৮টি বলেই কোন রান নিতে পারেননি। তার খরচ করা ১০ রানের মধ্যে ছিল ৪টি ওয়াইড। অতএব সেই ওয়াইডগুলো না হলে মুস্তাফিজের খরচ হতো মাত্র ছয় রান। তাতে করে টেস্ট খেলুড়ে দেশের বোলারদের মধ্যে সেরা টি-টোয়েন্টি বোলিং ফিগারের মালিক বনে যেতে পারতেন কাটার মাস্টার। তবে শেষ অবধি হয়নি তেমনটি।
কোরি অ্যান্ডারসনদের উইকেট তুলে নিয়ে আমেরিকাকে ১০৪ রানের মধ্যেই আটকে রাখতে সহয়তা করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। বেশ স্বল্প এক টার্গেট অন্তত বোলাররা পেতে সহয়তা করেছেন। বাকি কাজটা বাংলাদেশের ভঙ্গুর ব্যাটার অর্ডারকেই করতে হতো। সে সক্ষমতা ব্যতীত বিশ্বকাপ খেলা বামন হয়ে চাঁদ ছোঁয়ার শামিল।