উইকেটের বর্ষণে আইপিএলের উদ্বোধন রাঙালেন মুস্তাফিজ। অথচ, খুব বেশিদিন আগের কথা নয় কারো মনে ছিল সংশয়, আর কারো মনে বিদ্রুপ। চেন্নাই সুপার কিংস যখন তাঁকে দলে ভিড়িয়েছিল তখন ক্রিকেটাঙ্গনের পরিস্থিতি ঠিক ছিল এমনই।
তবু কেউ কেউ আশায় বুক বেঁধেছিলেন, অন্তত মহেন্দ্র সিং ধোনির ছায়ায় যদি পুরনো ফিজকে দেখা যায়। এই গুটিকয়েক মানুষের ভরসার প্রতিদান দিতেই হয়তো জ্বলে উঠেছেন তিনি, চেন্নাইয়ের হয়ে প্রথম ম্যাচেই করেছেন বাজিমাত।
চার ওভার হাত ঘুরিয়ে টাইগার তারকা রান দিয়েছেন কেবল ২৯ রান, বিনিময়ে তুলে নিয়েছেন চার চারটি উইকেট। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর ব্যাটিং লাইনআপ একাই ধ্বসিয়ে দিয়েছেন তিনি। আর এই ম্যাচ দিয়ে আইপিএলে নিজের সেরা বোলিং ফিগারের দেখা পেয়েছেন তিনি; একইসাথে পূর্ণ করেছেন উইকেটের হাফসেঞ্চুরি।
প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে চার হজম করে অবশ্য শঙ্কা জাগিয়েছিলেন এই বাঁ-হাতি। কিন্তু এরপরের গল্পটা শুধুই তাঁর; ভয়ানক হয়ে উঠা ফাফ ডু প্লেসিসকে গতির ভেরিয়েশনে বোকা বানিয়েছেন তিনি। দুই বল পরেই সিম মুভমেন্টে পরাস্ত করেন রজত পাতিদারকে, ধোনির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন পতিদার।
বারোতম ওভারে পুনরায় আক্রমণে এসে আবারো জ্বলে উঠেন টাইগার তারকা। ক্রিজে সেট হওয়া বিরাট কোহলিকে আউট করে ব্রেক থ্রু এনে দেন, একই ওভারে ক্যামেরন গ্রিনকেও শিকার করেন তিনি। দুই ওভার শেষে তাঁর বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৭ রানে চার উইকেট!
ডেথেও কার্যকরী ছিলেন কাটার মাস্টার; দুই ওভার বল করে খরচ করেছেন ২২ রান। এসময় কোন উইকেট না পেলেও ব্যাঙ্গালুরুর দলীয় সংগ্রহ নাগালের বাইরে যেতে না দেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ রেখেছেন তিনি।
শেষটা আহামরি না হলেও সবমিলিয়ে মুস্তাফিজুর রহমান দারুণ একটা দিন কাটিয়েছেন। হলুদ জার্সিতে অভিষেকটা তিনি রাঙিয়েছেন রংধনুর রঙে; পেয়েছেন ডু প্লেসিস, কোহলির মত বিশ্বসেরার উইকেট। টুর্নামেন্টের বাকি অংশেও এমন পারফরম্যান্স ধরে রাখা এখন লক্ষ্য তাঁর।
তবে একটু আক্ষেপ বোধহয় করতেই পারে লাল সবুজের ভক্ত সমর্থকেরা। আজ যেভাবে মাথা কাটিয়ে বল করেছেন দ্য ফিজ, জাতীয় দলে সাম্প্রতিক সময়ে তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। দুই পরিচয়ে দুই রকম পারফরম্যান্স আফসোসই বাড়াচ্ছে। যদিও আইপিএলে ভাল করতে পারলে সেই আত্মবিশ্বাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও কাজে লাগাতে পারবেন তিনি, এমন স্বপ্নই দেখছে সবাই।