হতাশ সাইফউদ্দিন; ক্ষুব্ধ নির্বাচকরা

গত দু বছর ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি এই বিপিএল। কিছুদিন আগেও বলছিলেন, ২০২২ সালের বিপিএল দিয়ে মাঠে ফিরতে চান। কিন্তু সে সব স্বপ্নই হতাশায় পরিণত হয়েছে। শেষ অবধি বিপিএলের ড্রাফটে নামই ওঠেনি সাইফউদ্দিনের।

এই নাম না ওঠা নিয়ে হতাশার শেষ নেই সাইফউদ্দিনের। তিনি এরই মধ্যে হতাশা প্রকাশ করে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। আর এই স্ট্যাটাসের জেরে তার উপর যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন নির্বাচকরা। রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধাণ নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু খেলা-৭১ কে বলেছেন, খুবই কাণ্ডজ্ঞাহীন কাজ করেছেন সাইফউদ্দিন।

২০১০ সাল থেকে পিঠের ইনজুরি বয়ে বেড়াচ্ছেন সাইফউদ্দিন। এর ভেতরে ভেতরে পড়েছেন বিভিন্ন সময় নতুন নতুন ইনজুরিতে। চোটের কারণেই খেলতে পারেননি গত মৌসুমের বিপিএলও খেলতে পারেননি। এর আগে চোটের কারণে গত বছর নভেম্বরে যেতে পারেননি ভারত সফরে। ২০১৯ এর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের পর পিঠের সমস্যায় ভুগছেন সাইফউদ্দিন। পিঠের চোটের কারণে বিশ্বকাপের পর পাঁচ মাস মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি।

তবে সব পেছনে ফেলে মাঝে কয়েকটা মাস ভালোই ছিলেন। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শারজাহতে আবারও ইনজুরিতে পড়েন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে চোট পান কোমরে। পরে স্ক্যান করে দেখা যায়, কোমরের হাড়ে ফাটল ধরেছে। সেই ইনজুরি থেকে সেরে ওঠার জন্য এখন চিকিৎসক দলের পরামর্শ অনুযায়ী পুনর্বাসন চলছে তার।

এর মধ্যে কিছুদিন আগেই আশার কথা শুনিয়েছিলেন যে, বিপিএল দিয়ে হয়তো খেলায় ফিরতে পারবেন। নিজে ভাবছিলেন, অন্তত ব্যাটসম্যান হিসেবে এবারের বিপিএলটা খেলতে পারবেন তিনি। কিন্তু শেষ অবধি চিকিৎসকদের বিশ্লেষনেই তিনি খেলার মত ফিট হতে পারেননি। ফলে ড্রাফটে নাম ওঠেনি তার। আর এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন সাইফউদ্দিন।

হতাশাটার কারণ সাইফউদ্দিন বলেছেন। তিনি আসলে অনেকদিন ক্রিকেটের বাইরে থাকতে থাকতে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন বলে বলছিলেন, ‘আসলে অনেকদিন ক্রিকেটের বাইরে আছি। গত দুটো বিপিএল খেলতে পারিনি ইনজুরির কারণে। এবার খুব আশায় ছিলাম। মনে করেছিলাম, অন্তত শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে পারবো। কিন্তু ড্রাফটে নাম না আসায় হতাশ হয়ে পড়েছিলাম।’

সাইফউ্দ্দিনের এই হতাশার বহিঃপ্রকাশটা ভালোভাবে নেননি নির্বাচকরা। প্রধাণ নির্বাচক নান্নু বেশ ক্ষুব্ধ ভাবেই কথা বললেন এ প্রসঙ্গে। তিনি বলছিলেন, ‘এটা তো সে ঠিক করেনি। আমরা তো নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারি না। আমার কাছে মেডিকেল টিমের রিপোর্ট আছে। আমি চাইলে এটা প্রেসে দিতে পারি। পরিষ্কার বলা আছে, আগামী ফেব্রুয়ারির আগে সে ম্যাচ ফিট হবে না। এখন জোর করে খেললে তার ক্ষতি হতে পারে। সে কী তাহলে নিজের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটের ফিউচারের চেয়ে বিপিএলকে বেশি গুরুত্ব দিতে চায়? সে এই ধরণের ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে ঠিক করেনি।’

কথায় মনে হলো, সাইফউদ্দিন নিজেও বুঝতে পারছেন যে, এই হতাশাটার এরকম প্রকাশ করা ঠিক হয়নি। তিনি ড্রাফট থেকে বাদ পড়া মেনে নিয়েই সামনে এগোতে চান, ‘আসলে চিকিৎকরা আর নির্বাচকরা তো আমার ভালো চান বলেই এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সামনে ইন্টারন্যাশনাল খেলা আছে। সেটাই ওনারা হয়তো মাথায় রেখেছেন। আমি এটা নিয়ে আর ভাবতে চাই না। এখন নিজেকে ফুল ফিট করে তবে মাঠে ফিরতে চাই। দোয়া করবেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link