প্রথম ওয়ানডেতে এলো বৃষ্টির বাঁধা। তা অবশ্য আগে থেকেই ছিল অনুমিত। প্রায় ঘন্টা দুই বন্ধ ছিল খেলা। বৃষ্টির পরপরই বল হাতে বাইশ গজে হাজির নাসুম আহমেদ। এসেই যেন জানান দিলেন দিনটি নিজের করে নেওয়ার।
মিরপুরের চিরচেনা স্পিনিং উইকেট। বৃষ্টির পর যেন আরও খানিকটা স্পিন সহায়ক হয়ে উঠলো শেরে বাংলার বাইশ গজ। লাইন লেন্থ ঠিক রেখে বল করে যেতে বেশ পটু নাসুম আহমেদের স্পিন ধরতে শুরু করল। ভয় ধরাবার জন্যে যথেষ্ট পরিমাণ টার্ন পেতে শুরু করেন নাসুম।
নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক লোকি ফার্গুসন আগের দিনই বাংলাদেশের স্পিনারদের প্রসংশা করেছিলেন। আর নাসুম এসে যেন রীতিমত ব্ল্যাকক্যাপসদের আত্মবিশ্বাসকে নড়বড়ে করে দিলেন। নাসুমের ঘূর্ণিপাকে খানিকটা ভরকেই গেলেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার।
তাদেরকে বোকা বানিয়ে নিজের প্রথম ওভারেই মেইডন আদায় করে নেন নাসুম আহমেদ। একটা চাপ সৃষ্টি করে যান নাসুম। কোন প্রকার রান না দিয়ে। সেই চাপের সফলতা পেয়ে যান মুস্তাফিজুর রহমান। ফিন অ্যালেনের উইকেট চলে যায় মুস্তাফিজুরের ঝুলিতে।
আরেক প্রান্ত থেকে ঠিক পরের ওভারে নাসুমের চাপ সৃষ্টি। নিজের টানা দুই ওভারে মেইডেন দিয়ে রীতিমত চাপ দ্বিগুণ করেন নাসুম। তাতে আবারও লাভবান মুস্তাফিজ। এবার তিনি তুলে নেন চ্যাড বোয়েসের উইকেট। এরপর দীর্ঘক্ষণ উইকেট খরায় কাটিয়েছে বাংলাদেশ।
উইল ইয়ং আর হেনরি নিকোলাস জুটি গড়েন। ৯৭ রানের সেই জুটি ভাঙেন আবারও সেই মুস্তাফিজ। এদফা ফেরান হেনরি নিকোলাসকে। তবে এবারও উইকেট পাওয়ার ঠিক আগের ওভারটা করেছিলেন নাসুম আহমেদ। সেই ওভারে তিনি দেন চার রান।
তবে নাসুম স্রেফ সতীর্থদের উইকেট পেতে সহয়তা করেই কেন ক্ষান্ত হবেন। তিনি এবার সিদ্ধান্ত নিলেন নিজের ঝুলিতেও উইকেট যুক্ত করবার। সে ভাবনা থেকেই এক ওভারে জোড়া আঘাত করেন নাসুম আহমেদ। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচের ৩১ তম ওভারের দ্বিতীয় ও চতুর্থ বলে যথাক্রমে উইল ইয়ং ও রাচিন রবীন্দ্রর উইকেট তুলে নেন নাসুম আহমেদ।
সেই ওভারের দ্বিতীয় বলটিতে আবারও টার্ন পান নাসুম। সেই সাথে হালকা বাউন্স। সামনে ঝুকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে পরাস্ত হন ইয়ং। ততক্ষণে বল গিয়ে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের দস্তানায়। তিনি কোন রকম ভুল ছাড়াই স্ট্যাম্প ভাঙেন। তাতে দিনের প্রথম উইকেটের দেখা পান নাসুম। সেট ব্যাটার ইয়ংকে শিকার করে স্বস্তি ফেরান তিনি।
সেই ওভারের চতুর্থ গিয়ে আঘাত করে রবীন্দ্রর প্যাডে। জোরালো আবেদনে সারা দেননি আম্পায়ার শরফুদৌলা ইবনে সৈকত। তবে রিভিউ নিলে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হয় তাকে। নিউজিল্যান্ডের পঞ্চম উইকেটের পতনের সাথে সাথে নাসুমের নামের পাশে যুক্ত হয় দুই উইকেট।
শেষ অবধি বৃষ্টির কারণে হাত ঘোরাতে পারেননি নাসুম। আট ওভার বোলিং করতে পেরেছেন তিনি। যার তিনটিই ছিল মেইডেন। তাছাড়া রান খরচায় ছিলেন বেশ কৃপণ। মাত্র ২.৬২ ইকোনমি রেটে তিনি দিয়েছেন ২১ রান। তার এই আঁটসাঁট বোলিংয়েই স্টেয়ারিং উইলটা বাংলাদেশের হাতেই ছিল, শেষ বল হওয়া অবধি।