অজি বধের নায়ক

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৩ ওভার ৩৭ রান দেওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশি স্পিনার নাসুম আহমেদকে নিয়ে চলছিলো বেশ সমালোচনা। তাকে দলের অন্তর্ভুক্তি করা নিয়ে নাখোশ ছিলেন অধিকাংশ বাংলাদেশী ক্রিকেট ভক্ত সমর্থকরা।

এরপর অস্ট্রেলিয়া সিরিজ! জিম্বাবুয়ে সিরিজ শেষে বায়ো বাবলে থাকা কেউই পূর্বের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েননি। তারপরও, মিরপুরে ঘরের মাঠে কি নাসুম আহমেদ সুযোগ পাবেন কিনা সেটি নিয়েও ছিলো সংশয়। তবে সবকিছু ছাপিয়ে প্রথম ম্যাচের একাদশে জায়গা করে নিলেন তিনি। আর সুযোগ পেয়েই করলেন বাজিমাত।

অজিদের বিপক্ষে মিরপুরে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নাসুমের দুর্দান্ত বোলিংয়ে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবার অজিদের বিপক্ষে জয় পেলো বাংলাদেশ। ম্যাচের একাদশ ঘোষণার পরও অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় কম সমালোচনা হয়নি নাসুমকে নিয়ে। নাসুমের বদলি হিসেবে কেনো সাইফউদ্দিন কিংবা তাইজুল ইসলামকে নেওয়া হলো সে নিয়েও কত আলোচনা। তবে ম্যাচ শেষে বল হাতে সমালোচনার জবাব দিয়ে নায়ক বনে গেলেন সেই নাসুমই।

টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ১৩১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। প্রথমে লক্ষ্যমাত্রা স্বল্প মনে হলেও পরবর্তীতে অজিদের জন্য সেটি পাহাড়সম হয়ে দাঁড়ায়। বোলিংয়ে নেমে প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন মেহেদী হাসান। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন নাসুম।

নিজের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই ছক্কা হাঁকান জস ফিলিপে। পরের বলেই উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে নাসুমের ঘূর্ণিতে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন ফিলিপে। নিজের প্রথম শিকার বানান নাসুম। প্রথম ওভার থেকে ৯ রান দিয়ে শিকার করেন ১ উইকেট।

এরপর দলীয় দশম ওভারে নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে আসেন তিনি। ওভারের চতুর্থ বলে লেগ স্টাম্পের বাইরের শর্ট লেন্থের পুল করতে করতে গিয়ে লেগ সাইডে মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে ধরা পড়েন ম্যাথু ওয়েড। ম্যাথু ওয়েডকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান নাসুম। ওই ওভারে মোটে ৪ রান দিয়ে শিকার করেন ১ উইকেট।

এরপর দলীয় ১৪ তম ওভারে নিজের কোটার তৃতীয় ওভার করতে আসেন তিনি। দ্বিতীয় বলেই লেগ সাইডে মারতে গিয়ে পেছনের পা উইকেটে লেগে হিট আউট হন অ্যাশ্টন অ্যাগার। নিজের তৃতীয় উইকেট শিকারে ৩ ওভারে ১৫ রান দেন তিনি।

নিজের কোটার শেষ এবং ইনিংসের ১৬ তম ওভারে বল করতে আসেন নাসুম। তৃতীয় বলেই উইকেটে থাকা অজিদের একমাত্র ভরসা মিচেল মার্শকে তুলে নেন তিনি। লেগ সাইডে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শরিফুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন মার্শ।

মার্শের উইকেটে অজিদের জয়ের আশাও অনেকটাই শেষ হয়ে যায়। নিজের শেষ ওভারে ৪ রানে ১ উইকেট নেন তিনি। ৪ ওভারের স্পেলে ১৯ রানের বিনিময়ে ক্যারিয়ার সেরা ৪ উইকেট শিকার করেন নাসুম। যদিও ভাগ্য সুপ্রসন্ন বলা চলে। ম্যাথু ওয়েড কিংবা অ্যাগারের উইকেট ভাগ্য সহায় ছিলো বেশ।

তবুও, তাঁর অনবদ্য পারফরম্যান্স অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক ম্যাচে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর ঘরের মাঠে অজি বধের নায়ক! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নিজেকে প্রমাণ করার সবচেয়ে বড় সুযোগের প্রথম ধাপটা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন তিনি। এমন পারফরম্যান্সের পর শেষ চার ম্যাচে তাঁর প্রতি দলের প্রত্যাশা খানিকটা বেশিই থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link