উপড়ে ফেললেন ট্রাভিস হেডের স্ট্যাম্প। এরপর তিনি অধিনায়কের দিকে তর্জনী তাক করে কিছু একটা বোঝাতে চাইলেন। নাভিন উল হক সম্ভবত নিজের প্রতি রেখেছিলেন অগাধ আস্থা। ইনিংসের শুরুতেই তার হাতে বল তুলে দেওয়ার জোর দাবিও সম্ভবত তিনি জানিয়েছিলেন। আর সফলতা ধরা দিতেই চোখে আঙুল দিয়ে তা দেখাতে চাইলেন।
মাত্র ১৪৮ রানের পুঁজি। এই পুঁজি নিয়েও যে লড়াই করা যেতে পারে, শুরুতেই সে বার্তা দিয়ে দিলেন নাভিন উল হক। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে ছোড়া বলটায় পুরোপুরি পরাস্ত ট্রাভিস হেড। সময়ের অন্যতম বিধ্বংসী ব্যাটার ফিরে গেলেন একেবারে খালি হাতে।
প্রথম ওভারেই নাভিন এনে দিলে সফলতা। ঠিক তখন থেকেই হয়ত আফগানরা একটু একটু করে বিশ্বাস করতে শুরু করলেন। সে ম্যাচে শেষ অবধি জয়ও ছিনিয়ে আনল রশিদ খানের দল। তবে পথিমধ্যে অজিদের কোণঠাসা তো করতে হয়েছে নাভিনদেরই।
নাভিন এদিন যথাযথভাবেই নিজের কাজটা করে গেছেন। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে আবারও উইকেটের খাতায় নাম লেখালেন। এদফা অজি অধিনায়ক মিচেল মার্শের উইকেট পকেটে পুরলেন নাভিন। অবিশ্বাস্যের জন্ম দিয়ে ম্যাচে ফিরতে শুরু করে আফগানিস্তান। ওই স্বল্প দূরত্বের পথও অস্ট্রেলিয়ার জন্যে বিশাল বড় এক রাস্তা মনে হতে শুরু করে।
মাঝে অবশ্য গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ম্যাচটা নিশ্চয়ই ভুলে যায়নি আফগানরা। তবুও নিজেদের উপর ভরসা রেখেছিল গোটা দল। নিজেদের কাজটা যথাযথভাবে করে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন প্রতিটা বোলার। নাভিনের দেখানো পথেই হেটেছেন গুলবাদিন নাইব। অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডারকে একাই গুড়িয়ে দিয়েছেন নাইব।
নতুন বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট শিকারের পাশাপাশি বেশ ইকোনমিক্যাল বোলিংও করেছেন নাভিন। নিজের চার ওভারে মাত্র ২০ রান খরচা করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার মত দলের বিপক্ষে যা সত্যিকার অর্থেই প্রশংসনীয়। শেষ দিকে তো তিনি দলের জয়কে ত্বরাণ্বিত করেছেন। অজিদের নবম উইকেটের পতন ঘটান নাভিন।
তাতে অবশ্য গুলবাদিন নাইবকেই কৃতীত্ব দিতে হয়। অ্যাস্টন অ্যাগারের দূর্দান্ত ক্যাচ যে তিনি লুফে নিয়েছিলেন। সেটাই দিনের তৃতীয় উইকেট হিসেবে যুক্ত হয় নাভিনের নামের পাশে। শেষ অবধি দারুণ একটা জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আফগানিস্তান। এই জয়ে সেমিফাইনাল খেলবার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল নাভিন-উল হকের দল।