আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ – ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) পূর্ণ সদস্য এসব দলকে হটিয়ে এবারের বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। ডাচদের ভারতের বিমান ধরাটা তাই বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম অঘটনই ভাবা হয়। অবশ্য মূল টুর্নামেন্টেও এমন কিছুর পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চাইবে তাঁরা।
এর আগে ২০১১ সালে সর্বশেষ বিশ্ব আসরে খেলেছিল নেদারল্যান্ডস ক্রিকেট দল। যদিও ১৯৯৬ সালের আসর দিয়ে ক্রিকেটের বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পায় তাঁরা। সেবার অবশ্য পাঁচ ম্যাচেই হেরেছে দলটি, এরপর তিনটি আসরে খেললেও জয় পেয়েছে মাত্র দুইবার। সেই হতাশা আরো বেড়েছে যখন গত দুই বিশ্বকাপ ঘরে বসতে দেখতে হয়েছিল ডাচদের।
তবে হতাশা কেটে স্বস্তি আর আনন্দ ফিরেছে দেশটিতে। দীর্ঘ এক যুগ পর আবারো আরাধ্য মঞ্চে ফিরতে যাচ্ছে ডাচরা, যদিও সাম্প্রতিক ফর্ম তাঁদের দুশ্চিন্তার কারণ। আইসিসির সুপার লিগে ২৪ ম্যাচ খেলে মাত্র তিনটি ম্যাচ জিততে পেরেছে স্কট এডওয়ার্ডসের দল।
তবে বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ার পর্বে তাঁদের পারফরম্যান্স নতুন করে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে। শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সুপার ওভারের লড়াইয়ে হারানো কিংবা জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ডের মত দলকে টপকে বিশ্বকাপে যাওয়া নিশ্চিতভাবেই বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিবে ইউরোপীয় দলটিকে৷
তেজা নিধামানুরু এই দলের সেরা ব্যাটারদের একজন। ২০১৪ সালের পর প্রথম ডাচ ব্যাটার হিসেবে গত মার্চে তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছিলেন তিনি; কয়েক মাস পরেই হোল্ডার, পুরানদের বিপক্ষের সেই ঐতিহাসিক জয়ে বড় ভূমিকা ছিল তাঁর।
টপ অর্ডারে নেমে ইনিংস বড় করার সামর্থ্য আছে এই ব্যাটারের; সেজন্যই বিক্রমাজিত সিং, ম্যাক্স ও’ডউড এর মত আগ্রাসী ক্রিকেটাররা ভয় ডর ছাড়া নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারে।
আরেক অলরাউন্ডার বাস ডি লিড এই বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের অন্যতম শক্তি। চলতি বছর কমলা জার্সিতে সর্বোচ্চ ১৫টি উইকেট শিকার করেছেন তিনি, এছাড়া স্কটল্যান্ডের সাথে ম্যাচে তাঁর সেঞ্চুরিতে ভর করেই ভারত বিশ্বকাপে খেলা চূড়ান্ত করেছিল ডাচরা।
অভিজ্ঞ সদস্যও আছেন নেদারল্যান্ডসের স্কোয়াডে। ৩৯ বছর বয়সী ওয়েসলি বারেসির সঙ্গে রাখা হয়েছে ৩৮ বছরের রুলফ ভ্যান ডার মারইউকে। মারইউ এর আগে কখনো বৈশ্বিক আসরে না খেললেও বারেসি ছিলেন ২০১১ বিশ্বকাপে। তবে ক্রিকেটীয় অভিজ্ঞতার কমতি নেই দুজনের, চাপের মুহুর্তে তাই দলের থিংক ট্যাংক হতে পারেন তাঁরা।
কলিন অ্যাকারম্যান, ফ্রেড ক্ল্যাসেন, ব্রেন্ডন গিটভার এর মত দেশসেরা ক্রিকেটারদের নিয়েই বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ইতিহাস রচনা করেছিল নেদারল্যান্ডস। এবার তাই পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে মূল মঞ্চে আরো দারুণ কিছু করার লক্ষ্য তাদের। সেই সামর্থ্য অবশ্য আছে, এখন কেবল প্রমাণ দেয়া বাকি।