‘অভূতপূর্ব’ মুশফিকুর রহিম

দিনটা বাংলাদেশেরই ছিল। কিন্তু প্রকৃতির নিষ্ঠুরতায় তা আর পূর্ণতা পেল কই! বেরসিক বৃষ্টিতে তাই ফলাফলের জায়গাটা শূন্যই থেকে গেল। তবে, এই ম্যাচেও অর্জনের শেষ নেই বাংলাদেশের।

ম্যাচের বিরতি পর্যন্ত স্পষ্টভাবেই চালকের আসনে ছিল বাংলাদেশ। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের রেকর্ড গড়া সংগ্রহের দিনটা এমনভাবে ফলশূন্যতায় ভেস্তে যাবে, কেই-বা ভেবেছিল! তবে তাতে তো আর মুশফিকের ৬০ বলের ঝড়ো সেঞ্চুরির গুরুত্ব একটুও কমে যায় না। বরং মুশফিকের কল্যাণেই এমন ইনিংস খেলার অনুপ্রেরণা খুঁজে নিয়েছেন লিটন দাস।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন লিটন দাস। ম্যাচ মাঠে না গড়ানোয় স্বাভাবিকভাবেই হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি। তবে বৃষ্টির উপরে তো কারও হাত নেই। লিটন সেই কথাই মনে করিয়ে বললেন, ‘ম্যাচ হলে অবশ্যই ভালো লাগত। কিন্তু আমাদের তো আর বৃষ্টির উপর নিয়ন্ত্রণ নেই।’

এরপরেই লিটনের কন্ঠে ঝরলো মুশফিকের ইনিংসের প্রশংসা। এক নিমেষেই বলে দিলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, আমি যত দিন খেলছি, বাংলাদেশের কেউই শেষের দিকে এমন ১০০ করেনি। দলের কাউকে করতে দেখলে খুবই ভালো লাগে। সিনিয়ররা করলে আরও ভালো লাগে। আমরা এমন ইনিংস খেলার অনুপ্রেরণা পাই।’

বেশ কিছুদিন ধরেই অফফর্মের বৃত্তে ঘুরপাঁক খাচ্ছিলেন মুশফিক। আয়ারল্যান্ড সিরিজ থেকে নিজের ব্যাটিং অর্ডারেরও পরিবর্তন ঘটেছে মুশফিকের। চার থেকে নেমে গিয়েছেন ছয় নম্বরে। তবে মুশফিক যেন নিজেকে ফিরে পেলেন এই নতুন ব্যাটিং অর্ডারেই।

প্রথম ম্যাচে ফিফটি না পেলেও খেলেছিলেন ২৪ বলে ৪৬ রানের ঝড়ো এক ইনিংস। আর এবার দ্বিতীয় ম্যাচে গড়লেন নতুন ইতিহাস। ৬০ বলে সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশিদের মধ্যে দ্রুততম সেঞ্চুরির নতুন রেকর্ডে নিজের নাম লেখালেন। একই সাথে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এ দিনেই ৭০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

মুশফিক অবশ্য এমন ফিরে আসার পিছনে কৃতিত্ব দিয়েছেন বন্ধু তামিম ইকবালকে। ম্যাচের পর নিজের অফিশিয়াল ফেসবুকে তামিমের সাথে একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘তামিমকে ধন্যবাদ না জানিয়ে পারছি না। মাঠ ও মাঠের বাইরে সব সময় ও আমাকে সমর্থন জুগিয়েছে। ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত যা অর্জন করেছি তার জন্য ওর একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। ১৫০০০ রান পূরণ করার জন্য ওকে অভিনন্দন। আমার চোখে ও বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ, বন্ধু।’

তামিমের ধন্যবাদ অবশ্যই প্রাপ্য। তিনি ছিলেন বলেই তো মুশফিকের একাদশে থাকাটা নিশ্চিত হয়েছিল। আর তার সুবাদেই ক্যারিয়ারে একটা লাইফ লাইন পেয়ে গেলেন মুশফিক।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link