আমাদের নিজস্ব এমএস

দু জনের কারো ব্যাট ধরে দাড়ানোতে সৌন্দর্য নেই, ব্যাটিংয়ে ব্যবকরণ নেই, মুগ্ধতা ছড়ানোর বালাই নেই। কিন্তু দু জনেই জানেন, বলটা আসলে পেটানোর জন্য। ব্যাটে-বলের অদ্ভুত সুন্দর সংযোগের আওয়াজ একাকার করে দেয় দুই এমএসকে।

একজন উইকেটরক্ষণ করতেন, একজন তা করেন না। একজন ছিলেন ফিনিশার; আরেকজন ইনিংস শুরু করেন। একজন ছিলেন জাত নেতা; আরেকজন কেবলই উঠতি তরুণ।

তাহলে দু জন এক হলেন কি করে?

আর কিছু না হোক, তাদের নামের আদ্যাক্ষরটা তো এক – এমএস। একদিকে মহেন্দ্র সিং ধোনি; আরেক দিকে মুনিম শাহরিয়ার- নিউ এম এস।

তবে মুনিমের সাথে ধোনির আরেকটা মিল আপনি চাইলে বের করতে পারেন। দুই জনের কারো ব্যাট ধরে দাড়ানোতে সৌন্দর্য নেই, ব্যাটিংয়ে ব্যবকরণ নেই, মুগ্ধতা ছড়ানোর বালাই নেই। কিন্তু দু জনেই জানেন, বলটা আসলে পেটানোর জন্য। ব্যাটে-বলের অদ্ভুত সুন্দর সংযোগের আওয়াজ একাকার করে দেয় দুই এমএসকে।

কী করেছেন মুনিম শাহরিয়ার?

আজকের কথা যদি বলি, তাহলে ৩০ বলে ‘মাত্র’ ৪৪ রানের একটা ইনিংস খেলেছেন। ৪টি ছয় ও ২টি ছক্কা মেরেছেন। বাংলাদেশী ওপেনারদের বিভিন্ন ফরম্যাটে যে হাল, তাতে এই একটা ইনিংস দেখেও আপনাকে ‘বাহ’ বলতে হবে। কিন্তু মুনিম তো এই এক ইনিংসের খেলোয়াড় নন।

মুনিম নজর কাড়া শুরু করেছিলেন ঢাকা প্রিমিয়ারডিভিশন ক্রিকেট  লিগ টি-টোয়েন্টিতে। আবাহনীর হয়ে দুটো দানবীয় ইনিংস খেলেছিলেন। তারপরও বিপিএলে দল পাননি। সে নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। অবশেষে বরিশাল প্লেয়ার ড্রাফটের বাইরে থেকে তাকে কিনে নিয়েছে।

এরপরও মুনিমের অপেক্ষা। ম্যাচ পাচ্ছিলেন না। অবশেষে ম্যাচ পেলেন। প্রথম ম্যাচে করলেন একটি মাত্র রান। কী ভাবছেন? গল্পের শেষ? আজ্ঞে না, ওখান থেকেই গল্পের শুরু।

এর পরের স্কোরগুলো শুনুন-২৫ বলে ৪৫, ২৮ বলে ৫১, ২৫ বলে ৩৭ এবং ৩০ বলে ৪৪।

৫ ম্যাচে করেছেন ১৭৮ রান। এই পরিসংখ্যান দিয়ে আপনি কিচ্ছু বুঝতে পারবেন না। স্রেফ একটা তথ্য দরকার। সেটা হলো, এই ৫ ইনিংসে মুনিমের স্ট্রাইক রেট ১৬১.৮১! এই বিপিএলে কমপক্ষে ১০০ রান করেছেন, এমন ব্যাটসম্যানদের আর কারো স্ট্রাইক রেট ১৫০-এর ওপরেও নেই। সেরা রান সংগ্রাহকদের মধ্যে সেরা স্ট্রাইক রেট মুনিমেরই।

এখন আসছে দিনে মুনিমের কী হবে, সেটা সময়ের হাতে রইলো।

অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে হতাশ করার নজির বাংলাদেশে নিতান্ত কম নয়। তাই তরুন কাউকে নিয়ে বড় বাজি ধরতে ভয় লাগে। কিন্তু মুনিম যেনো একটু অন্য ধাতুতে গড়া। তিনি যেন নুয়ে পড়তে জানেন না।

আমরা বলছি না যে, মুনিমকে টেস্ট বা ওয়ানডে খেলাতে হবে। সেটা করতে হলে টেকনিক ও ফুটওয়ার্কে অনেক উন্নতি করতে হবে মুনিমের। কিন্তু টি-টোয়েন্টির জন্য তিনি রেডি ম্যাটার। এখন তাকে নির্বাচকদের চোখে পড়লেই হয়। আমাদের নির্বাচকদের চোখে যে কাকে কাকে পড়ে!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...