রাচিন রবীন্দ্র, নব্য রান মেশিন

রাচিন রবীন্দ্র যেন থামতেই ভুলে গিয়েছেন; প্রতি ম্যাচেই রান করাকে অভ্যাসে পরিণত করেছেন। কেন উইলিয়ামসনের ইনজুরি শাপে বর হয়ে এসেছে তাঁর জন্য।অভিজ্ঞ এই তারকা না থাকায় টপ অর্ডারে সুযোগ দেয়া হয়েছিল তাঁকে, আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্য দেখিয়েছেন পুরো বিশ্বকে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে অবশ্য উইলিয়ামসন বাইশ গজে ফিরেছেন, তবে কিউই অধিনায়ককে ছাপিয়ে আবারো আলো কেড়ে নিয়েছেন রবীন্দ্র। ওপেনিংয়ে নেমে খেলেছেন ৯৪ বলে ১০৮ রানের দুর্দান্ত একটা ইনিংস। এবারের বিশ্বকাপে এটি তাঁর তৃতীয় সেঞ্চুরি; ১৫ চার আর এক ছয়ে সাজানো এই ইনিংসে আরো একবার বড় রান করার ভিত পেয়েছে নিউজিল্যান্ড।

ডেভন কনওয়েকে নিয়ে শুরুটা ভালভাবেই করেছিলেন এই তরুণ; উদ্বোধনী জুটিতে দুজনে করেন ৬৫ রান। এরপর কনওয়ে ফিরলেও অবিচল থাকেন তিনি। তখনি বোঝা গিয়েছিল আরো একটা বড় ইনিংস আসবে তাঁর ব্যাট থেকে। হয়েছেও তাই; কাপ্তানকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে গড়েছেন ১৮০ রানের জুটি।

এদিন ৫৩ বলে এই ব্যাটার তুলে নিয়েছিলেন ব্যক্তিগত ফিফটি। সেখান থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। শাহীন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফদের দারুণভাবে সামলেছেন; স্পিনারদেরও শাসন করেছেন। পুরোটা সময় জুড়ে আধিপত্য দেখিয়ে এই বাঁ-হাতি পৌঁছে যান তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে। মাত্র ৮৮ বলে পূর্ণ করেন শতক, তাতেই রেকর্ড বুকে ঝড় ওঠে।

বিশ্বকাপের অভিষেক আসরে আর কোন ব্যাটসম্যানই পারেননি রবীন্দ্রের সমান ৩টি হান্ড্রেড নিজের ঝুলিতে পুরতে। এমনকি নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসেই কোন ব্যাটসম্যান বিশ্বকাপের একটি আসরে তিনবার হেলমেট খুলে উদযাপনের উপলক্ষ খুঁজে পাননি। আবার উদীয়মানদের মাঝে সবচেয়ে বেশি বিশ্বকাপ সেঞ্চুরির মালিকও এখন তিনি।

অবশ্য খানিক পরেই বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন এই অলরাউন্ডার। প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় ১০৮ রান করে; যদিও ততক্ষণে ২৫ বছরের কম বয়সী ব্যাটারদের মধ্যে একটি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের কীর্তি নিজের দখলে নিয়েছেন।

সবমিলিয়ে এবারের বৈশ্বিক আসরে ৮ ম্যাচ খেলে ৫৪৫ রান করেছেন রাচিন; টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এখন তিনি। তাই তো বলাই যায়, উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতি শুধু নিউজিল্যান্ডকেই একজন ভরসাযোগ্য ব্যাটার দেয়নি, নতুন এক তারকাকে চিনিয়েছে বিশ্ববাসীর সামনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link