নেইমার থাকছেন না বিশ্বকাপে!

দুইদিন আগেই প্রেস কনফারেন্সে থিয়াগো সিলভা বলছিলেন তিনি নেইমারকে এরচেয়ে ভালো অবস্থায় এর আগে দেখেননি। ইনজুরিমুক্ত নেইমার যে কতটা ভয়ংকর তা সম্ভবত পুরো বিশ্বই জানে। কিন্তু যে দৃশ্যটা ব্রাজিল ভক্তরা একদমই দেখতে চাননি সেটা সম্ভবত নেইমারকে খোঁড়াতে দেখা।

রিচার্লিসনের অসাধারণ দ্বিতীয় গোলের পর আকাশে উড়তে থাকা ব্রাজিল সমর্থকদের মনে কাঁপন ধরিয়ে দেয় নেইমারের খুঁড়িয়ে মাঠ থেকে বের হতে থাকার দৃশ্য। সাইড বেঞ্চে রীতিমতো মন খারাপ করে বসেছিলেন নেইমার।

তবে ব্রাজিল চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমার ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘বেঞ্চেই নেইমারের চিকিৎসা শুরু করেছি আমরা।নেইমারের ডান পায়ের গোড়ালিতে যে চোট রয়েছে তাকে মেডিকেলের পরিভাষায় বলা হয় ‘ডিরেক্ট ট্রমা’। ২৪-৪৮ ঘন্টা তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।’


সার্বিয়ার বিপক্ষে নেইমারকে যথারীতি ব্রাজিলের খেলা নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে। সার্বিয়ার আঁটসাঁট ডিফেন্সকে ছড়িয়ে দিতে তিনি অধিকাংশ সময় পায়ে বল রেখেছেন। সতীর্থদের ফাঁকা জায়গা তৈরি করে দিয়েছেন। যখন ব্রাজিলের একের পর এক আক্রমণ থমকে যাচ্ছিল তখনও নেইমার আশা জাগাচ্ছিলেন। আর তাঁর বল হোল্ড করাই তাঁর জন্যে আরও একবার কাল হল।

অবশ্য ব্রাজিল কোচ তিতে আশা জুগিয়েছেন ব্রাজিল সমর্থকদের মনে। বিশ্বকাপ থেকে নেইমারের ছিটকে যাবার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। ম্যাচ শেষে তিতে বলেছেন, ‘নিশ্চিত থাকতে পারেন বিশ্বকাপে নেইমার খেলবে। তবে তাকে পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে।’

ব্রাজিলের অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটলজি সোসাইটির তথ্যমতে, পায়ের আড়াআড়ি মুভমেন্ট যখন সাধারণ ক্ষমতার বেশি হয় তখন গোড়ালি মচকানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে। আঘাতেও এমনটা ঘটে থাকতে পারে। অন্তত চার ধাপ হাটতে না পারলে এবং গোড়ালির যেখানে পায়ের হাড় সংযুক্ত হয়েছে সেখানে ব্যাথা অনুভব করলে এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষা করা হয়। নেইমারের ব্যাথা ঠিক সেই জায়গাটাতেই।


আঘাত পাবার পরেও ১১ মিনিট খেলা চালিয়ে গেছেন নেইমার। ফ্র্যাকচার হলে তা সম্ভব হতো না। সাধারণ মাত্রার চোটে শুধু আইসপ্যাক ব্যবহার ও গোড়ালির কিছু ব্যায়াম আর বিশ্রামের মাধ্যমেই সেড়ে উঠা সম্ভব তিন দিনের মধ্যে। ফিজিওথেরাপিতে এসব ব্যাথা দ্রুতই কাটিয়ে ওঠা যায়। তবে সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে গ্রুপ পর্বে পরবর্তী দুই ম্যাচে অনুপস্থিত থাকবেন ব্রাজিলিয়ান পোস্টার বয়।

ডান পায়ের এই গোড়ালিতেই এর আগে লিগামেন্ট ছিড়ে গিয়েছিলো নেইমারের। তাই ব্রাজিল ভক্তদের ভয়টাও হয়তো একটু বেশি। তবে তিতে আর রদ্রিগো লাসমারের কথার আশায় বুক বাধতেই পারে ব্রাজিল ভক্তরা। নেইমার হয়ত নিজেকে প্রথম ম্যাচে তাঁর মত করে মেলে ধরতে পারেননি। কিন্তু ইনজুরিমুক্ত নেইমার উড়ে বেড়ালে, ব্রাজিলের পতাকাও যে উড়বে- সেটা তো সবাই জানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link