সাকিবের শূন্যস্থান রয়ে যাবে শূন্য!

সবচেয়ে দুশ্চিন্তার বিষয় সাকিবের বিকল্পের তালিকা এখানেই শেষ। অনেকেই হয়ত ভিন্ন ভিন্ন বিকল্পের নাম নিয়ে হাজির হবেন। কিন্তু তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকার সক্ষমতা নেই, সে কারণেই তারা নেই কোন আলোচনায়। 

বিতর্ক ছাপিয়ে সাকিব আল হাসান এক বিস্তৃত চরিত্র। বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্থান কিংবা প্রচার, সর্বত্রই সাকিব ছিল ধ্রুব। সেই সাকিব বিদায়ের রাগিণী বাজিয়েছেন বেশ শান্ত বদনে, দৃপ্ত গলায়। বিষাদের মেঘে ছেয়ে আছে কানপুর থেকে মিরপুর। বিষণ্ণতা কাটিয়ে বিকল্প খুঁজতে শুরু করবে সকলে। সেটাই পৃথিবীর চিরন্তন সত্য।

সেই বিকল্প অভিযান অবশ্য বছর তিনেক ধরেই করছি আমরা। তবুও মনঃপুত হয়নি কখনোই। ক্রিকেটার সাকিবের জুতোয়া পা গলাবেন, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভীষণ দুষ্কর। তবুও তো শূন্যস্থানকে শূন্য রাখার তো উপায় নেই। এই পৃথিবী কখনও শূন্যস্থান শূন্য রাখে না।

মেহেদী হাসান মিরাজকে বিকল্প হিসেবে ধরে নিয়েছেন সকলেই। মিরাজও অবশ্য নিজেকে সে জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন প্রতিনিয়ত। ব্যাটার মিরাজের উন্নতি হয়েছে বেশ। স্পিন বান্ধব উইকেটে বোলার মিরাজও বেশ দুর্ধর্ষ। কিন্তু নির্বিষ উইকেটে ডান-হাতি অফস্পিন যেন ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা এক বোলিং মেশিন। একা হাতে মিরাজ ম্যাচ জেতাবেন, সে সক্ষমতা এখনও অবশ্য তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।

যে অলরাউন্ডার গোটা বিশ্ব শাসন করেছে একটা সময়, তাকে রিপ্লেস করা বড্ড কঠিন, ভীষণ কঠিন। তবুও তরুণ মাহফুজুর রহমান রাব্বিকে সাকিব সদৃশ বিকল্প হিসেবে গড়ে তোলা যায়। বাঁ-হাতি বোলিং অলরাউন্ডার তিনি। সদ্যই অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছেন তিনি। অতএব হাতে যথেষ্ট সময় রয়েছে পুরাদস্তুর অলরাউন্ডার বনে যাওয়ার।

সেজন্য অবশ্য রাব্বির পেছনে যথেষ্ট সময় বিনিয়োগ করতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে। হুট করে তৈরি হওয়া শূন্যস্থান মিরাজ পূরণ করার চেষ্টা করবেন বটে। কিন্তু সবচেয়ে দুশ্চিন্তার বিষয় সাকিবের বিকল্পের তালিকা এখানেই শেষ। অনেকেই হয়ত ভিন্ন ভিন্ন বিকল্পের নাম নিয়ে হাজির হবেন। কিন্তু তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকার সক্ষমতা নেই, সে কারণেই তারা নেই কোন আলোচনায়।

সাকিব আল হাসান, আপাতত টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলে দিয়েছেন। টেস্ট ক্রিকেটেও পর্দা টেনে দিচ্ছেন। ওয়ানডে খেলবেন হয়ত ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অবধি। প্রায় ১৫ হাজার রান ও সাতশোর বেশি উইকেটের ক্যারিয়ারের পর্দা উঠে যাবে। এই পথের দূরত্ব আদতে কেউ কি আর কখনও পেরুতে পারবে? হয়ত পারবে, তা লাল-সবুজ জার্সি গায়ে হবে না হয়ত আর কখনোই।

Share via
Copy link