একটা স্বপ্ন বুকে নিয়ে দিনের পর দিন লাল বলে বল করে গিয়েছেন নোমান আলী, কেটেছে বছরের পর বছর, বয়সও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। তবে স্বপ্ন পূরণের কোন সম্ভাবনা জাগেনি। শেষমেশ আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন, কিন্তু ভাগ্যের দুয়ার খুললো তখনই। ৩৪ বছর বয়সে পাকিস্তান দলে ডাক পেলেন নোমান আলী – পরের গল্পটা আড্ডা জমিয়ে দেয়ার মতই।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেক হলো এই স্পিনারের। প্রথম ইনিংসে দুই উইকেট শিকার করে সামর্থ্যটা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে দেখালেন আসল জাদু, পাঁচ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের জয়ে রাখলেন বড় ভূমিকা। টেস্ট ইতিহাসে ৭১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়সী হিসেবে গড়লেন অভিষেক টেস্টে ফাইফারের স্বাদ পাওয়ার কীর্তি।
কিন্তু চাকা উল্টো দিকে ঘুরতেও দেরি হয়নি, ২০২৩ সালে হুট করেই দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। অথচ নিজের খেলা শেষ ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে একাই নিয়েছিলেন সাত উইকেট, তবু অদৃশ্য কারণে হারিয়ে যান নির্বাচকদের ভাবনা থেকে।
বয়সটা ততদিনে ৩৬ পেরিয়েছে, অবসরের চিন্তা তাই শুরু করেই দিয়েছিলেন নোমান। তবে জীবনের চিত্রনাট্যে তখনও বাকি ছিল টুইস্টের! তাই তো ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এসে আবারও জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন ঘটলো তাঁর – ১৪ মাসের ব্যবধানে তাঁকে স্মরণ করলো টিম ম্যানেজম্যান্ট।
আগামী সাত অক্টোবর মুলতানে মাঠে গড়াবে পাকিস্তান-ইংল্যান্ডের মধ্যকার তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট। তার আগে ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। সেখানেই চমক হিসেবে রাখা হয়েছে হয়েছে ৩৭ বছর বয়সী এই বোলারকে। এ যেন বুড়ো বয়সের খেল!
মূলত বাংলাদেশ সিরিজে এক স্পিনার নিয়ে খেলায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল পাকিস্তানকে। এছাড়া স্পিন বিভাগের পারফরম্যান্স অনেক দিন থেকেই নিম্নমুখী। সেজন্যই নিজেদের পুরনো অস্ত্রকে পুনরায় ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিলো তাঁরা।
ঘরের মাঠে এই বাঁ-হাতির রেকর্ড অবশ্য ঈর্ষনীয়, সাত ম্যাচে নিয়েছেন ২৪ উইকেট, ইকোনমি মাত্র তিন! এছাড়া তাঁর ক্যারিয়ারে আছে একটা হাফ-সেঞ্চুরিও, লোয়ার অর্ডারে তাই একটু হলেও ভরসা হতে পারেন। এখন কেবল দেখার বিষয় প্রত্যাবর্তনে নিজেকে কতটা রাঙাতে পারেন নোমান, শেষ বয়সে এসে কতটা জাদু দেখাতে পারেন।