কত উন্মাদনা একটা ম্যাচকে ঘিরে, কত আগ্রহ – শুধু ভক্ত-সমর্থক নয়, ক্রিকেট কর্তাদের মাথায় কেবল পাকিস্তান ভারত ম্যাচের কথাই ঘোরে। তবে এমন রোমাঞ্চ কেবল মাঠের বাইরেই, মাঠের খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বীদের দাঁড়াতেই দেয়নি রোহিত শর্মার দল। প্রায় বিশ ওভার হাতে রেখে সাত উইকেটের জয় পেয়েছে তাঁরা।
এই ম্যাচকে ঘিরে যতটা উত্তাপ ছড়ানো হয়েছিল, সেটা যেন প্রথম ইনিংসের পরই শেষ। নামেই ম্যাচটা বিশ্বকাপের সবচেয়ে হেভিওয়েট ম্যাচ। পুরনো সেই প্রবাদটাই এখানে সবচেয়ে বেশি মোক্ষম – ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার!
এদিন টসে জিতে পাকিস্তানকে আগে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানায় ভারত। শুরুটা অবশ্য রয়ে সয়ে করেছে পাক ব্যাটাররা, কিন্তু ওপেনিং জুটিকে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি মোহাম্মদ সিরাজ, আউট করেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আবদুল্লাহ শফিককে। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার একটু পরেই আরেক ওপেনার ইমাম প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।
৭৩ রানে দুই উইকেট হারানো দলকে টেনে তোলেন বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান। দুজনের ব্যাটে ভর করে ২৯ ওভারেই দলীয় ১৫০ রান ছুঁয়ে ফেলে পাকিস্তান; ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরিও পূর্ণ করেন বাবর। কিন্তু এরপরই ভোজবাজির মত পাল্টে যায় দৃশ্যপট – পঞ্চাশ রান করে অধিনায়ক আউট হতেই বাকি ব্যাটাররা শুরু করেন আসা যাওয়ার মিছিল।
মোহাম্মদ রিজওয়ান চেষ্টা করেছেন ঠিকই, কিন্তু ধ্বস ঠেকাতে পারেননি। শেষপর্যন্ত ১৩ ওভারের মধ্যে আট উইকেট হারিয়ে ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যায় তাঁরা – টপ অর্ডারের চার ব্যাটার বাদে কেবল হাসান আলী পেরেছিলেন দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে যদিও লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি, কিন্তু বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মার দৃঢ়তায় ম্যাচে ফিরতে পারেনি পাকিস্তান। আগের ম্যাচে আফগানিস্তানকে তুলোধুনো করা রোহিত এদিনও রান করেছেন টি-টোয়েন্টি গতিতে, বিরাটও এগিয়েছেন সাবলীল ভাবেই।
তবে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে তাঁকে ফিরিয়ে দলকে স্বস্তি এনে দেন হাসান আলী। ততক্ষণে অবশ্য স্কোরবোর্ডে আশি রান তুলে ফেলেছিল স্বাগতিকরা। তাই তো জয় পেতে মোটেই বেগ পেতে হয়নি তাঁদের।
বিশেষ করে রোহিতকে টলাতে পারেনি কেউই, ২২তম ওভারে আউট হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁর ৮৬ রানে ভর করে ততক্ষণে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যায় ভারত। বাকি কাজ সারেন লোকেশ রাহুল আর শ্রেয়াস আইয়ার। ৩০.৩ বলে আইয়ার চার মেরে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পাশাপাশি তুলে নেন নিজের হাফসেঞ্চুরিও।
আগে কখনো ভারতকে বিশ্ব মঞ্চে হারাতে পারেনি পাকিস্তান, এবারও সম্ভব হলো না। অপেক্ষা বাড়লো কেবলই; অন্যদিকে টানা তৃতীয় ম্যাচ জিতে রোহিত, বিরাটরা অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে সেমির দৌড়ে।