বাঁ-হাতির আক্ষেপ ও ভারতের ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট

কোটি মানুষের সেই স্বপ্ন পূরণে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা। নিজেদের দলও প্রায় গুছিয়ে ফেলেছে টিম ইন্ডিয়া, তবে স্কোয়াডে বাঁ-হাতি পেসারের অভাব দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০১১ সাল, যুবরাজ সিংয়ের অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স, গৌতম গম্ভীরের ৯৭ রানের অমর এক ইনিংস আর মহেন্দ্র সিং ধোনির আইকনিক একটা ছয় – ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জিতে নিয়েছিল ভারত। এরপর কেটে গিয়েছে এক যুগ, ২০২৩ সালে আবারো নিজেদের ডেরায় বিশ্ব আসর; শিরোপা স্বপ্নে তাই বিভোর হয়ে আছে ভারতবাসী।

কোটি মানুষের সেই স্বপ্ন পূরণে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা। নিজেদের দলও প্রায় গুছিয়ে ফেলেছে টিম ইন্ডিয়া, তবে স্কোয়াডে বাঁ-হাতি পেসারের অভাব দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এছাড়া কারও ওপর ভরসাও পাচ্ছে না ভারত। মোহাম্মদ সিরাজ ছাড়া কোনো পেসারই ওয়ানডে ফরম্যাটে হতে পারেননি নির্বাচকদের আস্থা। ফলে বিশ্বকাপ দল তৈরি করতে বেশ কয়েকজনকে নিয়ে ভাবতে হচ্ছে টিম ম্যানেজম্যান্টকে। বাঁ-হাতিরাই সেই ভাবনায় প্রাধান্য পাচ্ছেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে বাম-হাতি পেসারের অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। মোহাম্মদ সিরাজকে বিশ্রাম দেয়ায়  মুকেশ কুমারকে অভিষেক করিয়েছিল রোহিত বাহিনী। তিনিও বাঁ-হাতি নন। যদিও স্কোয়াডে জয়দেব উনাদকাটও ছিলেন, কিন্তু তিনি সর্বশেষ ২০১৩ সালে পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচ খেলেছিল। সব মিলিয়ে তাই এদের কারোই উপর বিশ্বকাপের মত মঞ্চে ভরসা করা যায় না।

দলের এমন অবস্থায় মুখ খুলেছেন সাবেক ফাস্ট বোলার রূদ্র প্রতাপ সিং। ২০০৭ সালে ভারতের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে অবদান রেখেছিলেন এই বাঁ-হাতি। তিনি মূলত ভারতকে ক্রিকেটারদের ওয়ার্ক লোড নিয়ে মাতামাতি করতে বারণ করেছেন।

বরং, তিনি মনে করেন বাম-হাতি পেসারদের যতটা সম্ভব ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশি বেশি ম্যাচ খেলা উচিত। প্রাক্তন এই ক্রিকেটার বিশ্বাস করেন ওয়ার্ক লোড কেবল জিমের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত।

রূদ্র প্রতাপ সিং আরো বলেন, ‘এটা (ওয়ার্ক লোড) নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। আমরা ক্রিকেটাররাও একে অপরের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা করি। কিন্তু বোলিংয়ের ক্ষেত্রে আমি আসলে এসব মাথায় রাখতে চাই না। বোলাররা আসলে কম বল করে। অথচ আপনি যত বেশি বল করবেন, আপনার পেশী তত শক্তিশালী হবে।’

নিজেদের অনুশীলন প্রক্রিয়া, তখনকার ক্রিকেট সংস্কৃতি নিয়েও আলোচনা করেন রূদ্র প্রতাপ সিং। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক সময়ে খেলেছি যখন বোলাররা এক টানা দেড় ঘন্টা নেটে বোলিং করতো, এভাবেই তো নিজের উন্নতি করতে হয়। বলের সাথে ভালবাসার সম্পর্ক করা দরকার, মূলত চারদিনের ম্যাচ, লিস্ট এ ক্রিকেটে নিয়মিত অংশ না নেয়ার কারণেই দেশে মানসম্পন্ন বাম-হাতি পেসারের পরিমাণ কমে গিয়েছে।’

বাম-হাতি পেসার হিসেবে আশ্বর্দীপ সিং হতে পারতেন দারুণ অপশন। কিন্তু ওয়ানডে দলের ভাবনাতেই নেই এই তরুণ। এশিয়ান গেমসের দলের রাখা হয়েছে তাঁকে, তাতেই স্পষ্ট বিশ্বকাপ দলে থাকছেন না তিনি। কিন্তু এমন পরিকল্পনা ভুল হয়েছে বলে মনে করেন রূদ্র প্রতাপ সিং।

টানা ম্যাচ না খেলার কারণে আর্শদ্বীপরা ভাল করতে পারছে না বলেই মত এই সাবেক ক্রিকেটারের। মোহাম্মদ সিরাজের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সিরাজের শুরুটা কিন্তু ভাল হয়নি, এরপর সে কঠিন পরিশ্রম করেছে এবং এখন সব ফরম্যাটে তাঁর পারফরম্যান্সের গ্রাফ উপরের দিকে যাচ্ছে। বাম-হাতিরা চাইলে তাঁকে অনুসরণ করতে পারে।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...