পাকিস্তানকে বলা হয় পেসারদের কারখানা। কিন্তু এই ধারার সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্রের দেখা মিলেছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে পাকিস্তানের কোন পেসার বোলিংই করেননি। এমনকি পাকিস্তানের একাদশে ছিল না কোন ফ্রন্টলাইন পেসার। আমের জামাল ছিলেন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে।
প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডকে কুপোকাত করেছেন সাজিদ খান। দ্বিতীয় ইনিংসে সে দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন নোমান আলি। ইংল্যান্ড গুটিয়ে গেছে মাত্র ১১২ রানে। যার পুরো কৃতিত্ব নোমান আলির প্রাপ্য। কেননা তিনি যে ছয় খানা উইকেট নিজের করে নিয়েছেন।
ইংল্যান্ডের প্রথম ছয় উইকেটের পাঁচটিই নিয়েছেন নোমান। তাতে করে আর প্রতিরোধ গড়বার শক্তিটুকু জড়ো করতে পারেনি জো রুটরা। যার ফলে পাকিস্তানকে মাত্র ৩৬ রানের টার্গেট দিতে সক্ষম হয় ইংল্যান্ড। অনায়াসে সে লক্ষ্য উৎরে যায় পাকিস্তান।
তবে পাকিস্তানে স্পিনারদের এমন দাপুটে পারফরমেন্সে ভ্রু কপালে উঠতে বাধ্য বটে। রাওয়ালপিন্ডিতে দুই দলের ৩১ খানা উইকেটের পতন ঘটেছে। যার মধ্যে ২৯টি উইকেটই নিয়েছেন স্পিনাররা। এমন দৃশ্য পাকিস্তানের মাটিতে বেশ বিরল। অন্তত কেউ হয়ত কল্পনাতেও এমন কিছু ভাবেনি কখনও।
তবে কল্পনাতীত বিষয়কে বাস্তবে রূপান্তরিত করেছে মূলত রাওয়ালপিন্ডির মাঠ কর্মীরা। রাওয়ালপিন্ডির উইকেট নিখাঁদ ব্যাটিং উইকেট ছিল। সে উদাহরণ তো বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেই দেখেছে গোটা বিশ্ব। সেই উইকেটকে স্পিনারদের স্বর্গ বানিয়েছেন মূলত মাঠকর্মী আর রাওয়ালপিন্ডি মাঠের কর্তারা।
কারখানার সুবিশাল ফ্যান, হিটার ব্যবহার সহ নানামুখী উদ্ভট সব কাণ্ড ঘটানো হয়েছে উইকেট তৈরিতে। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে হোয়াইট ওয়াশ নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা পাকিস্তান ক্রিকেটকে। ঠিক সে কারণেই সম্ভবত এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ। তাছাড়া ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেও পরাজয় পাকিস্তানকে এমন এক্সট্রিম পন্থা অবলম্বন করতে বাধ্য করেছে।
তবে এই পন্থা সফলতা বয়ে নিয়ে এসেছে পাকিস্তানের জন্য। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে পাকিস্তান। প্রায় এক দশকবাদে ইংল্যান্ডকে সাদা পোশাকে হারিয়েছে পাকিস্তান। জয়ের এই কৃতিত্বের সঙ্গী যেমন সাজিদ, নোমানরা, তেমনি মাঠকর্মীরাও বটে।