ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ জিতবে পাকিস্তান!

এক যুগ পর আবারো উপমহাদেশে ফিরছে বিশ্বকাপ। ২০১১ সালে পুরো উপমহাদেশ মিলিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজিত হলেও এবারই প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের একক আয়োজক হচ্ছে ভারত। এক যুগের আগের সেই বিশ্বকাপে শিরোপা জেতার পর আর কোনো আইসিসি ট্রফি জেতেনি ভারত। তাই ২০২৩ বিশ্বকাপকেই পাখির চোখ করেছেন কোহলি, রোহিতরা। পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরামও ভারতকেই বিশ্বকাপ জেতার বড় দাবিদার মনে করলেও জানালেন, পাকিস্তানের সামনেও বড় সুযোগ বিশ্বকাপ জেতার।

২০১১ সালে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশকে সাথে নিয়ে বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিল ভারত। সেই বিশ্বকাপের আয়োজকের তালিকায় প্রথমে পাকিস্তানও ছিল। কিন্তু ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর হামলার পর আয়োজকের তালিকা থেকে কাটা পড়ে পাকিস্তানের নাম। এর আগেও ১৯৮৭ ও ১৯৯৬ সালে উপমহাদেশের মাটিতে আয়োজিত হয়েছে বিশ্বকাপ।

২০১১ সালের সেই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতের মোহালিতে মুখোমুখি হয়েছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ২৯ রানে হারিয়ে ফাইনালে যায় ভারত। ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে নিজেদের ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটান মাহেন্দ্র সিং ধোনিরা।

আর মাত্র ছয় মাস দূরে থাকা বিশ্বকাপ নিয়ে এর মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। কোন দেশ হতে পারে চ্যাম্পিয়ন, কারা আছে ফেভারিটের তালিকায় ; সেই আলোচনায় যোগ দিয়েছেন সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা। কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরাম মনে করেন, ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ হওয়ায় ফেভারিট ভারত। হবে পাকিস্তানকেও পুরোপুরি বাদ দেয়া যাবে না ফেভারিটের তালিকা থেকে।

স্পোর্টস টককে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওয়াসিম বলেন, ‘দুটোই দারুণ দল। আমাদের অধিনায়ক অসাধারণ একজন খেলোয়াড় এবং আমাদের বিশ্বের অন্যতম সেরা পেস বোলিং লাইন আপ আছে।’

৩১ বছর পর বিশ্বকাপ জিততে পেস বোলিং ইউনিটের দিকেই তাকিয়ে ওয়াসিম। পাকিস্তানের পেস বোলিংয়ে এই মুহূর্তে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শাহিন আফ্রিদি। সদ্যই অধিনায়ক হিসেবে লাহোর কালান্দার্সকে জিতিয়েছেন পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) শিরোপা। শুধু বল হাতে নয়, এই টুর্নামেন্টে দেখা গেছে ব্যাটার শাহিন আফ্রিদি রুদ্রমূর্তিও। পিএসএল ফাইনালে ১৫ বলে ৪৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলার পর বল হাতে নেন চার উইকেট। এমন পারফরম্যান্সে দলকে শিরোপা জেতাতে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

ওয়াসিম আকরাম বলেন, ‘শাহীন এই মুহূর্তে দারুণ ফর্মে আছে। সে দ্বিতীয়বারের মত তাঁর দলকে শিরোপা জিতিয়েছে। অলরাউন্ডার হিসেবেও সে দারুণ ভাবে মেলে ধরছে নিজেকে। তাঁর সাথে হারিস রউফ, নাসিম শাহ, হাসনাইনরাও আছে। ইহসানউল্লাহও দারুণ পেস বোলিং প্রতিভা। আমি মনে করি যেহেতু বিশ্বকাপ ভারতের মাটিতে হচ্ছে, যে দলের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ আছে সেই দলগুলোই সফল হবে কারণ পিচ সেখানে ব্যাটিং সহায়ক হবে।’

ওয়াসিম ছাড়াও বিশ্বকাপের ফেভারিট নিয়ে কথা বলেছেন আরো অনেক সাবেক ক্রিকেটার। ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন বলেন, ‘ইংল্যান্ডকে আমাকে ফেভারিট বলতেই হবে। যদিও ২০১৯ সালে যে কন্ডিশনে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ জিতেছে সেই কন্ডিশন থেকে এবারের বিশ্বকাপের কন্ডিশন আলাদা। স্পিনে ইংল্যান্ডের ভালো বিকল্প আছে। এছাড়াও ইংল্যান্ডের এমন খেলোয়াড় আছে যারা স্পিন ভালো খেলে। পেস বোলিং আক্রমণেও বৈচিত্র আছে ইংল্যান্ডের। জোফরা আর্চারের ফিরে আসাটা অনেক বড় ব্যাপার। মার্ক উডও ঘন্টায় ৯০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করছে।’

ইংল্যান্ডের সম্ভাবনা দেখলেও ঘরের মাটিতে ভারতকেই বিশ্বকাপের দাবিদার মানছেন ভন, ‘ইংল্যান্ড অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হলেও ভারত হুমকি হবে তাঁদের জন্য। ভারত যদি নিজেদের আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে খেলতে পারে তাহলে ঘরের মাটিতে ভারত দুর্দান্ত এক দল হয়ে উঠবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link