ঘরোয়া কিংবা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রিকেট দলগুলোর আয়ের বড় অংশ আসে স্পন্সরশিপ থেকে। নিজেদের পণ্যের প্রচার ও প্রসারে ক্রিকেটারদের ব্যবহার করার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে থাকে বিভিন্ন কোম্পানি; আর্থিক দিক বিবেচনা করে ক্রিকেটাররাও তাই স্পন্সরদের সাহায্য করেন।
তবে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের কাছে অর্থের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ। তাই তো বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ানের মত বিশ্বমানের ক্রিকেটাররা বিতর্কিত কোন কোম্পানির স্পন্সরশীপ গ্রহণে আগ্রহী নন। জার্সিতে এমন কোন কোম্পানির নাম লিখে খেলতে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তাঁরা।
জানা গিয়েছে তামাক, অ্যালকোহল, বেটিং প্রতিষ্ঠান, শুকর সম্পর্কিত পণ্য এবং এডাল্ট সাইটের মত পরিষেবার অনুমোদন বা প্রচার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাবর আজমেরা। বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগের সাথে চুক্তি করার সময় এসব ধারা অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
শুধু ফ্রাঞ্চাইজি লিগ নয়, এই আবেদন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কাছেও উত্থাপন করেছেন ক্রিকেটারদের একাংশ। কেন্দ্রীয় চুক্তিতে বিতর্কিত কোম্পানির প্রচারে সাহায্য না করার শর্ত উল্লেখ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
বিশ্বজুড়েই বাবর, রিজওয়ানরা ব্যাপক জনপ্রিয়। কিন্তু এই জনপ্রিয়তা নিষিদ্ধ কোন পণ্য বা কোম্পানির প্রচারমূলক কাজে ব্যবহার করার অনুমতি দেবেন না এই তারকারা। এবং কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে কোন অর্থও নিবেন না ক্রিকেটাররা। বিকল্প স্পনসরশিপ, টিম সাপোর্ট বা লিগ মালিকদের চুক্তি থেকে পারিশ্রমিক গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
অবশ্য কিঞ্চিৎ নাম পরিবর্তন করে অনেক বেটিং সাইট জড়িয়ে আছে পিসিবির সঙ্গে। মনমতো স্পন্সর খুব একটা না পাওয়ায় সংস্থাটি এসব নিয়ে তখন মাথা ঘামায়নি। তবে খেলোয়াড়দের দাবির মুখে এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে পিসিবি, এমন তথ্য পাওয়া গিয়েছে। পিসিবি নিশ্চিত করেছে, এই স্পন্সরগুলোর সাথে বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে, আর নবায়ন করা হবে না।
যদিও সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) নিয়ে। ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট মানেই জুয়াড়ি প্রতিষ্ঠানগুলোর স্পন্সর বাণিজ্য, ব্যতিক্রম হয়নি এই লিগেও। একাধিক ফ্রাঞ্চাইজির সঙ্গে চুক্তি রয়েছে বেটিং কোম্পানির। তাই তো পিসিবি বেটিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করলে বিপাকে পড়বে দলগুলো, এমনকি পিএসএলের অর্থনৈতিক কাঠামোও বদলে যেতে পারে।
এর আগে কলম্বো স্ট্রাইকার্সের হয়ে খেলার সময় বেটিং কোম্পানির নাম ঢেকে রেখে খেলতে চেয়েছেন বাবর আজম, তাঁর ইচ্ছেকেই প্রাধান্য দিয়েছে দলটি। তাই তো ক্রিকেটাররা না চাইলে বেটিং সাইটগুলোকে স্পন্সরশীপ দিতে পারবেন না দলের মালিকেরা। আর এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে পিসিবির সঙ্গে আলোচনা করবে ফ্রাঞ্চাইজিরা।