পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা

শুধু যে বোলারদের নৈপুণ্যে বিশ্ব ক্রিকেটে একটা দাপুটে অবস্থানে সব সময় ছিল পাকিস্তান তা কিন্তু নয়। বহু কিংবদন্তি ব্যাটারদের জায়গা হয়েছিল পাকিস্তানের জাতীয় ক্রিকেট দলে। জাভেদ মিঁয়াদাদ, জহির আব্বাস, মাজিদ খানদের পর হালের বাবর আজমরা পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে ভরসা জোগাচ্ছেন।

বিশ্ব ক্রিকেটে ত্রাসের সঞ্চার ঘটায় পাকিস্তান। বিশেষ করে পাকিস্তানের পেসাররা। বিশ্বনন্দিত এক একজন তারকা পেসার সময়কে করেছেন আলোকিত। আর পাকিস্তানের ক্রিকেটকে করেছেন উজ্জ্বল। ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুসদের নাম শুনলেই এক সময় কাঁপন ধরতে প্রতিপক্ষের মনে।

শুধু যে বোলারদের নৈপুণ্যে বিশ্ব ক্রিকেটে একটা দাপুটে অবস্থানে সব সময় ছিল পাকিস্তান তা কিন্তু নয়। বহু কিংবদন্তি ব্যাটারদের জায়গা হয়েছিল পাকিস্তানের জাতীয় ক্রিকেট দলে। জাভেদ মিঁয়াদাদ, জহির আব্বাস, মাজিদ খানদের পর হালের বাবর আজমরা পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে ভরসা জোগাচ্ছেন।

এমন এক পরিপূর্ণ ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের সেরা দশজন খেলোয়াড়দের নিয়েই থাকছে আজকের আয়োজন।

  • জাভেদ মিয়াঁদাদ

কিংবদন্তি পাকিস্তানি ব্যাটারদের নামের তালিকা হলে সবার আগেই উঠে আসবে জাভেদ মিয়াঁদাদের নাম। ডান হাতি এই ব্যাটার ছিলেন পাকিস্তানের ব্যাটিং স্তম্ভ।

১৯৯২ সালে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও ছিলেন তিনি। ইনিংস গড়া থেকে শুরু করে হাত খুলে খেলা সবই রপ্ত ছিল তাঁর। নিজের দক্ষতার পূর্ণ ব্যবহার করেই পাকিস্তানের হয়ে টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক জাভেদ মিয়াঁদাদ।

  • মোহাম্মদ ইউসুফ

নান্দনিকতার এক অন্যতম উদাহরণ মোহাম্মদ ইউসুফ। ২০০৬ সালে এক পঞ্জিকা বর্ষে টেস্টে ১৭৮৮ রান করেছিলেন পাকিস্তানের ডান-হাতি এই ব্যাটার।

সেটাই এখন অবধি সর্বোচ্চ। সব ফরম্যাটেই পাকিস্তানের মিডল অর্ডার আগলে রাখার কাজটা করতে সুনিপুণভাবে। রঙিন পোশাক গায়ে ইউসুফ পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। বাইশ গজে তিনি রীতিমত মুগ্ধতা ছড়াতেন।

  • ইউনুস খান 

১১টি ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে শতক করার রেকর্ডের মালিক মোহাম্মদ ইউনুস। পাকিস্তান ক্রিকেটের ইতিহাসে আরও একজন প্রতিভাবান ব্যাটার তিনি।

পাকিস্তানের ক্রিকেটটাকে সুসজ্জিত করেছেন নিজের রান দিয়ে। প্রায় দশ হাজারের বেশি রান রয়েছে তাঁর আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেট। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ রান করার পাশাপাশি সাদা পোশাকে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিকও মোহাম্মদ ইউনুস।

  • শোয়েব আখতার

গোটা ক্রিকেট ইতিহাসে দ্রুততম বল করা পেসার শোয়েব আখতার। পাকিস্তানের পেস বোলার তৈরি করার কারখানা থেকে উঠে আসা একজন গতিদানব।

মূলত তিনি তাঁর গতিতেই পরাস্ত করতেন প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের। বিপরীত দলে থাকা প্রতিটা খেলোয়াড় যেন চিন্তায় থাকতেন শোয়েবকে কি করে খেলবেন তা নিয়ে। নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার উপায়ই যেন খুঁজে বেড়াতেন শোয়েবের বিপরীতে থাকা ব্যাটাররা।

  • সাকলাইন মুশতাক

পেস বন্দনায় ভেসে যায় পাকিস্তান। তবে সাকলাইন মুশতাক প্রমাণ করেছিলেন শুধুমাত্র পেসার নয়, পাকিস্তানে বিশ্বমানের স্পিনারও প্রস্তুত হয়।

নিজের দুসরা দিয়েই রাজত্ব করেছিলেন তিনি। মাত্র নয় বছরের ক্যারিয়ারে দ্রুততম সময়ে ২০০ ও ২৫০ ওয়ানডে উইকেট শিকার করে অনন্য রেকর্ড নিজের দখলে রেখেছেন পাকিস্তানের এই স্পিনার।

  • ইনজামাম-উল হক

স্থুল ব্যক্তিরাও এক সময় ক্রিকেট খেলতেন। আর বেশ দাপুটের সাথেই খেলতেন। তাঁর প্রমাণ ইনজামাম-উল হক। পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা ব্যাটারদের একজন হিসেবেই বিবেচিত হন তিনি।

তাঁর ক্যারিয়ারে ইনজামাম তুলেছেন ২০৫৪১ রান। এই রানের সুবাদে পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের যে স্থান সেটা দখল করে নিয়েছেন ইনজামাম-উল হক।

  • শহীদ আফ্রিদি

মারকাটারি ব্যাটিং আর কার্য্কর লেগ স্পিনের মিশেলে একজন দুর্দান্ত খেলোয়াড় ছিলেন শহীদ আফ্রিদি। নিজের সময়টায় তিনি ছিলেন বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারদের একজন।

মারকুটে ব্যাটিংয়ের জন্যে বুমবুম তকমা জুড়ে গিয়েছিল তাঁর নামের পাশে। মাত্র ৩৭ বলে শতক রানের রেকর্ডও করেছেন আফ্রিদি। তাছাড়া বিশ্ব ক্রিকেটে দশ হাজার রান ও পাঁচশ উইকেট শিকার করা তৃতীয় অলরাউন্ডার তিনি।

  • ইমরান খান

পাকিস্তানের পেস বিপ্লবের শুরু যার হাত ধরে তিনি ইমরান খান। সুইংয়ে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করার পাশাপাশি ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ জিতেছিলেন দলকে নেতৃত্ব দিয়ে। মূলত নিজের বোলিং দিয়েই নজর কেড়েছিলেন ইমরান খান।

তবে, ব্যাট হাতেও তিনি দলে জন্যে অবদান রাখা চেষ্টাটা করে গেছেন সব সময়। পাকিস্তানের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার তিনি। ৫৪৪ উইকেটের একটা ট্যালি নিয়ে তিনি শেষ করেছেন তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ার।

  • ওয়াকার ইউনুস

পেস আক্রমণের জন্য পাকিস্তান বেশ প্রসিদ্ধ। আর সে সুনামের অন্যতম ভাগিদার ওয়াকার ইউনুস। প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের নাভিশ্বাস তুলে দেওয়ার জন্যে তিনি ছিলেন যথেষ্ট।

তাঁর পিন-পয়েন্ট ইয়োর্কার গুলো ছিল প্রাণঘাতি। সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসেবে চারশ উইকেট শিকারের রেকর্ড রয়েছে ওয়াকারের দখলে। তাছাড়া ৭৮৯ উইকেট নিয়ে তিনি পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার।

  • ওয়াসিম আকরাম

সুইংয়ের রাজা বলা হত ওয়াসিম আকরামকে। ১৯৯২ সালের পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন ওয়াসিম আকরাম। তিনি ছিলেন সে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার।

তাছাড়া পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই নিজের সুইং দিয়ে তিনি প্রতিপক্ষের সকল পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছেন বারংবার। কিংবদন্তি ব্যাটারদের খাবি খাইয়ে নিজের পকেটে পুরেছেন ৯১৬টি উইকেট। এখন অবধি পাকিস্তানের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার ওয়াসিম আকরাম।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...