দিন দু’য়েক পরেই অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত ম্যাচ ভারত-পাকিস্তান মাঠের লড়াই। তার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে রোহিত শর্মা, বাবর আজম, বিরাট কোহলি, শাহীন শাহ আফ্রিদিদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সব ভিডিও।
আজকে বাবর আজম ভারতীয় খেলোয়াড়দের প্রশংসায় বৃষ্টি ভেজান তো কাল ভারতের মোহাম্মদ শামি শাহীন শাহ আফ্রিদিকে বোলিংয়ের গোপন অস্ত্র নিয়ে পরামর্শ দেন। তবে মাঠের এমন দৃশ্য দেখা গেলেও মাঠের বাইরে দুই বোর্ডের আগুনের লড়াইয়ের শুরু।
প্রসঙ্গ ২০২৩ এশিয়া কাপে পাকিস্তানে খেলতে অনীহা ভারতীয় বোর্ডের। ইটের বদলে পাটকেল নিয়ে বসে আছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও। যদি এশিয়া কাপ নিয়ে ভারতীয় বোর্ডের সিদ্ধান্ত না বদলায় তবে আগামী বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপে না খেলার ঘোষণা আসতে পারে পিসিবির তরফ থেকে।
এমন কি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল(এসিসি) থেকে যদি এই সমস্যার উপযুক্ত সমাধান না করা হয় তবে এশিয়ান ক্রিকেটের অভিবাবক এই সংস্থা থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা মাথায় রাখছে পাকিস্তান। সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটাররাও নাখোশ বিসিসিআইয়ের এমন সিদ্ধান্তে। কেউ কেউ তো চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ বয়কটেরও কথা বলছে।
সংকটের শুরু গতকাল বিসিসিআইয়ের বার্ষিক সভায় সিদ্ধান্ত আসার পর থেকেই। গতকাল ভারতীয় বোর্ড তাদের এজিএমের আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেয় যে ভারত ২০২৩ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের পরিবর্তে নিরপেক্ষ কোনো ভেন্যুতে খেলতে চায়।
জবাবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও (পিসিবি) গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, ‘ভারত যদি এশিয়া কাপে খেলা নিয়ে মনোভাব পরিবর্তন না করে তবে পাকিস্তান ২০২৩ বিশ্বকাপে ভারত সফরে নাও যেতে পারে। এমনকি পরবর্তী আইসিসি ইভেন্টে ভারতের ম্যাচ গুলো বয়কটও করতে পারে।’
তবে পাকিস্তানের দুই সাবেক ক্রিকেটার ইউনুস খান ও কামরান আকমল পিসিবি থেকে এক কাঠি সরেস। পাকিস্তানের এক টিভি চ্যানেলে টক শো তে ইউনুস বলেন, ‘আমার মনে হয় পিসিবি চেয়ারম্যানের উচিৎ ভারতের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে শক্ত অবস্থান নেয়া। ঠিক যেভাবে পিসিবির শক্ত অবস্থানের কারণে নিউজিল্যান্ড সফর বাতিল করেও আবার সফরে আসছে।’
সাবেক ডানহাতি ব্যাটার আরও বলেন,‘যদি বিসিসিআই তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করে পাকিস্তানের উচিৎ হবে তাদের ছাড়াই টুর্নামেন্টের আয়োজন করা। এরপরও না আমরা বিশ্বকাপের জন্য ভারত সফর করবো, না এশিয়া কাপের নিরপেক্ষ ভেন্যুর জন্য একমত হবো।’
একই অনুষ্ঠানে আরেক সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার কামরান আকমল বলেন, ‘জয় শাহের বিবৃতি আসলেই হতাশার। তাঁর উচিৎ ছিল ক্রিকেটকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা। কিন্তু তিনি ক্রিকেট ও রাজনীতি এক করে ফেলছেন।’
কামরান আকমল আরও বলেন, ‘এশিয়া কাপ একমাত্র পাকিস্তানেই হবে। ভারতের সিদ্ধান্তের বিপরীতে পিসিবির উচিৎ ওয়ানডে বিশ্বকাপ তো বটেই ২৩শে অক্টোবরের ম্যাচও বয়কট করা।’
দুই দেশের এই লড়াই নতুন নয়। শেষমেশ ফলাফলটা ঠিক কোন পক্ষে যায় সেটার জন্য সময়ের অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।