বিশ্বকাপের আগে মিডল অর্ডারের সংকটটা রীতিমত গলার কাঁটা হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের। দুই ওপেনার, মানে বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান যদি নিজেদের মেলে ধরতে পারেন, তাহলে ঠিক আছে। না হলে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপ যেন তাসের ঘর।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম দু’টো ম্যাচের একটায় বড় ইনিংস খেলেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। অন্যটায় বাবর আজম। তৃতীয় ম্যাচে এসে কেউই পারলেন না। ব্যস, ম্যাচে পাকিস্তানের আশা ভরসার সমাপ্তি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন নিয়ে ডাউন আন্ডারে গিয়েছে পাকিস্তান দল। কিন্তু, বারবার একই সংকটে ভুগে স্বপ্ন থেকে পিছিয়ে যেতে হচ্ছে গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্টদের।
চলমান ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আবার বাবর-রিজওয়ান খুব শ্লথ এক সূচনা করেন। রিজওয়ান ১৭ বলে ১৬ রান আর বাবর ২৩ বলে ২১ রান করেন। তারা সেখান থেকে ইনিংসটা বড় করলে সমস্যা হত না। সমস্যা হল, দুই গ্রেট ব্যাটারই আউট হয়েছেন বড্ড অসময়ে।
এরপরের দুই ব্যাটারও ব্যর্থ হন বাজে ভাবে। শান মাসুদ ও শাদাব খান সাজঘরে ফেরেন দ্রুতই। ব্যর্থতার মিছিল লম্বা করে হায়দার আলী ১১ বলে আট রান করে ফেরেন। মাত্র ৭৭ রানে পাঁচ উইকেট নেই পাকিস্তানের।
সেখান থেকে ৫.৫ ওভারে ৫১ রানের জুটি গড়েন ইফতিখার আহমেদ ও আসিফ আলী। ইফতিখার ২৭ বলে ২৭ ও আসিফ ২০ বলে ২৫ করেন। ২০ তম ওভার শুরুর আগে পাকিস্তানের স্কোর ছিল পাঁচ উইকেটে ১২৮। সেখান থেকে ১৪০-এর ওপর যাওয়া সম্ভব ছিল।
হয়নি কারণ, ২০ তম ওভারের প্রথম দুই বলে জোড়া আঘাত হানেন টিম সাউদি। শেষ অবধি শেষ ওভারে মাত্র দুই রান করে পাকিস্তান।
১৩১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের বোলারদের সাথে রীতিমত ছেলেখেলা করে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা। ১৩.৩ ওভারের উদ্বোধনী জুটি থেকেই ১১৭ রান তোলে স্বাগতিকরা। ব্ল্যাকক্যাপ ওপেনার ফিন অ্যালেন ৪২ বলে ৬২ রান করেন। পাকিস্তান ফর্মের চূড়ায় থাকা পেসার হারিস রউফকে ছাড়াই খেলতে নামে, বাকি বোলাররা তেমন প্রতিরোধ গড়তে পারেননি।
আরেক ওপেনার ডেভন কনওয়ে ৪৬ বলে ৪৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। ২৩ বল বাকি থাকতেই নয় উইকেটের বড় জয় পায় নিউজিল্যান্ড। কিউইদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি পাকিস্তান ব্রিগেড।
ম্যাচের জয়-পরাজয় ছাপিয়ে অবশ্য আবারও পাকিস্তানের মিডল অর্ডারের সংকটটাই আবারও বড় হয়ে উঠলো। বিশ্বকাপ শুরু হতে সপ্তাহখানেক সময়ও বাকি নেই। সাবেকদের অনেকেই শোয়েব মালিককে ফেরানোর দাবি জানালেও, বিশ্বকাপের আগে সেটা পাকিস্তান দল খুব সম্ভবত করবে না।
তাহলে আরেক উপায় হল, বাবর আজমকে আরেকটু পরে পাঠানো। সেই ঝুঁকি কি পাকিস্তান নিতে পারবে? অবশ্য তা না করলে পুরো ব্যাটিংটাই বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে।
একটা তথ্য দেওয়া যাক। এই ম্যাচটায় কোনো ছক্কাই হাঁকাননি পাকিস্তানের ব্যাটাররা। টি-টোয়েন্টিতে আট বছরের মধ্যে প্রথমবার কোনো ইনিংস ছক্কা ছাড়া কাঁটাল পাকিস্তান। সংকট বোঝাতে তো এটুকু তথ্যই যথেষ্ট হওয়ার কথা।