পাকিস্তানের বিপক্ষে যেন পাত্তাই পেল না বাংলাদেশ। প্রথমে পাকিস্তানি পেসারদের গতির কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ। এরপর তাদের ব্যাটারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়তে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের বোলাররা। সব মিলিয়ে, তাই সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটের পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। তবে আগের ম্যাচের মতো ব্যাটিং প্রতাপের ছাপ একটুও দেখা মেলেনি টাইগারদের ইনিংসে। মাত্র ৩৮.৪ ওভারে ১৯৩ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
জবাবে ইমাম উল হক ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ফিফটিতে ৭ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। মেক শিফট ওপেনার হিসেবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেও তাই ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন এ ব্যাটার। তবে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ফিরে যান শূন্য রানেই।
হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরিতে ছিটকে যাওয়া নাজমুল হোসেন শান্তর জায়গায় এ দিন ব্যাটিংয়ে এসেছিলেন লিটন দাস। শুরুটাও করেছিলেন দুর্দান্ত। বাউন্ডারিতে শুরু। এর পরের ওভারে নাসিমকে আরও দুই বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। কিন্তু এমন দারুণ শুরু পেয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি লিটন দাস।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে শাহীন আফ্রিদির বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা দেন৷ ব্যাটিংস্বর্গ উইকেটে সম্ভাবনা জাগিয়েও তাই লিটনকে সাজঘরে ফিরতে হয় ১৩ বলে ১৬ রান করে। লিটনের মতো নান্দনিক সব শটে ইনিংস বড় করার পথে ছিলেন নাঈম শেখও।
কিন্তু হারিস রউফের বলে পুল করতে গিয়ে আউট হন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে নামের পাশে তিনি যোগ করেন ২০ রান। নাঈমের পর উইকেটে এসে ব্যর্থ হন তাওহীদ হৃদয়ও। আগের ম্যাচে শূন্য রানে ফেরা হৃদয় এ ম্যাচে ফেরেন ২ রানে।
৪৭ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে এরপর টেনে তুলেছিল সাকিব-মুশফিক জুটি। এই দুই ব্যাটার মিলে পঞ্চম উইকেটে গড়েন একশ রানের জুটি। তবে দু’জনই থামেন ব্যক্তিগত অর্ধশতকের পর। সাকিব আউট হন ৫৩ রানে। আর উইকেট আগলে রেখে ধৈর্য্যশীলতার পরিচয় দিলেও মুশফিক থামেন ৬৪ রানে।
আর এ দুই ব্যাটার ফিরে যাওয়ার পরই তাসের ঘরের মতে ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটিং লাইনআপ। নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হন শামীম ও আফিফ। ফলত, ২০০ রানের আগেই ১৯৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের হয়ে ১৯ রানে ৪ উইকেট নেন হারিস রউফ। আর নাসিম শাহ নেন ৩ টি উইকেট। ১৯৩ রানের পুঁজি নিয়ে এরপর পাকিস্তানকে তেমন পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি বাংলাদেশি বোলারা। দলীয় ৭৪ রানের মাঝে পাকিস্তান ফখর জামান ও বাবরের উইকেট হারিয়ে ফেললেও তা তেমন লক্ষ্য টপকানোর পথে চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি। পাকিস্তান বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ১০.৩ ওভার হাতে রেখেই।
পাকিস্তানের ৭ উইকেটের এ জয়ের পথে ওপেনার ইমাম উল হকের পর ফিফটি হাঁকিয়েছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ইমাম ব্যক্তিগত ৭৮ রানে ফিরে গেলেও মোহাম্মদ রিজওয়ান শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬২ রানে। আর বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নেন শরিফুল, তাসকিন ও মিরাজ।